চট্টগ্রাম
চট্টগ্রামের বোয়ালখালীতে ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে হামলার প্রতিবাদে সমাবেশ করতে গেলে চট্টগ্রাম নগরেও সংগঠনটির নেতা-কর্মীরা হামলার শিকার হন বলে অভিযোগ উঠেছে। শনিবার সন্ধ্যায় নগরের নিউমার্কেট মোড়ে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জয়বাংলা স্লোগান দিয়ে এই হামলায় ৩০-৪০ জন যুবক অংশ নেন। এ হামলার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করেছে যুব ও ছাত্র ইউনিয়ন। এই ঘটনায় সাংবাদিকসহ পাঁচজন আহত হন।
আহতরা হলেন, ছাত্র ইউনিয়ন চট্টগ্রামের সভাপতি অ্যানি সেন, সাংগঠনিক সম্পাদক টিকলু দে, যুব ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক জাবেদ চৌধুরী, অভিজিৎ বড়ুয়া ও ভোরের কাগজের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক প্রীতম দাশ। আহতদের চট্টগ্রাম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। প্রীতম নগরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
এর আগে শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় বোয়ালখালীতে স্যার আশুতোষ কলেজর নানা সংকট নিরসনের দাবিতে আয়োজিত ছাত্র ইউনিয়নের মানববন্ধনে ছাত্রলীগ হামলা করে। হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন ছাত্র ইউনিয়ন কলেজ শাখার আহ্বায়ক হিমেল চৌধুরী, সদস্য সাজ্জাদ হোসেন, ইয়াছিন, অমিত ও রাশেদ। এ সময় হামলাকারী ব্যক্তিদের আর মারধর না করার অনুরোধ জানাতে গেলে দক্ষিণ জেলা যুব ইউনিয়ন নেতা সেহাব উদ্দিন ও উপজেলা কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক অনুপম বড়ুয়াকে লাঞ্ছিত করা হয়। এর মধ্যে সাজ্জাদ হোসেনকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বোয়ালখালীর ঘটনার প্রতিবাদে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে যুব ও ছাত্র ইউনিয়নের যৌথ উদ্যোগে নগরের শাহ আমানত মার্কেটের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি নিউমার্কেট মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে তাঁরা তাৎক্ষণিক এক প্রতিবাদ সমাবেশে মিলিত হন। প্রতিবাদ সমাবেশে একজন বক্তব্য রাখার পর কয়েকজন যুবক এসে মাইকের তার খুলে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।
জানতে চাইলে সভায় উপস্থিত যুব ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক রাফিদুল সামির জানান, প্রথমে মাইকের তার খুলে দেওয়া হয়। এরপর ব্যানার কেড়ে নিয়ে যুব ইউনিয়নের টিকলু দেকে মারধর শুরু করেন হামলাকারীরা। তাঁকে বাঁচাতে গেলে অ্যানি সেন, জাবেদ চৌধুরীসহ কয়েকজন আহত হন। হামলায় ৩০ থেকে ৪০ জন অংশ নেন। এ সময় সাংবাদিক প্রীতম দাশকেও মারধর করা হয়। তিনি আরও বলেন, সিটি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা এই ঘটনা ঘটিয়েছে। তিনি হামলাকারীদের শাস্তি দাবি করেন।
এই ঘটনার ১৫ মিনিট পর পুলিশ গিয়ে আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। কোতোয়ালি থানার পরিদর্শক আতিকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্র ইউনিয়ন সমাবেশ করছিল। এ সময় ছাত্রলীগ ও সরকারের বিরুদ্ধে তাঁরা বক্তব্য দিচ্ছিলেন।
তখন ছাত্রলীগের কয়েকজনের সঙ্গে তাঁদের হাতাহাতি হয়। এ ব্যাপারে আমরা ব্যবস্থা নেব।’
এদিকে, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মোহাম্মদ শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন চট্টগ্রামে ছাত্র ইউনিয়নের সংহতি সমাবেশে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের হামলার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।