Site icon The Bangladesh Chronicle

এক পিস ডিম এখন ১৫ টাকা

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক

১১ আগস্ট ২০২৩, ০৯:৪২ এএম

বাজারে এখন সবচেয়ে আলোচিত পণ্য ডিম। ফার্মের মুরগির ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা হালি। অর্থাৎ এক পিস ডিমের দাম ১৫ টাকা। গত সপ্তাহেও এক পিস ডিম বিক্রি হয়েছে ১১ থেকে ১২ টাকায়, অর্থাৎ হালি ছিল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা।

এ ছাড়া দেশি মুরগির ডিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকা ডজন দরে। হাঁসের ডিম বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। সোনালী মুরগির ডিমের হালি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা। আর ডজন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকা। দেশি মুরগির ডিমের শত বিক্রি হচ্ছে ১৫০০ টাকায়।

বাজারে ডিম কিনতে আসা তৈরি পোশাক কর্মী সাদিয়া আক্তারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, সবজি, মাছ-মাংসের দাম বাড়ায় বাধ্য হয়ে ডিম খেতে হচ্ছে। কিন্তু আজকে এক হালি ডিম কিনলাম ৬০ টাকা দিয়ে। এখনতো ডিমও খাওয়া যাবে না। কেমনে চলব সে কথাই চিন্তা করছি।

ডিমের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আগুন লেগেছে চাল-পেঁয়াজ-রসুনের দামেও। সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে বেড়েছে দুই টাকা। পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা কেজি। রসুনের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৪০ টাকা।

ব্যবসায়ীরা আমদানি ও সরবরাহ কমার অজুহাত দিয়ে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন। ফলে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে এসেছে চরম বিপাকে পড়ছেন নিম্ন আয়ের মানুষ।

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পাইজম চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৭ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৫৫ টাকা কেজি। নিম্নআয়ের মানুষের খাবারের আরেকটি চাল হলো বিআর-২৮। এই চাল গত সপ্তাহে বিক্রি হয়েছে ৫৮ টাকা কেজিতে। এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি। শুধু এই দুই ধরনের চালই নয়, কম বেশি সব চালের দাম বেড়েছে।

জানতে চাইলে মধ্যবাড্ডার ব্যবসায়ী মনির স্টোরের মালিক মনির হোসেন ঢাকা পোস্টকে বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বস্তা প্রতি চালের দাম বেড়েছে ১০০ টাকা। এ কারণে চালের দাম বেড়েছে।

তিনি বলেন, শুনেছি ভারত থেকে চাল আমদানি করবে সরকার, কিন্তু আমদানি না করার কারণে চালের দাম বাড়ছে।

রামপুরা বাজারে আসা ক্রেতা রাইসুল ইসলাম বলেন, জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে কারো মাথা ব্যথা নেই। কথা নেই, বার্তা নেই নিজের ইচ্ছামতো পেঁয়াজ, রসুনের দাম বাড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। গত সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ কিনেছি ৬৫ টাকা কেজি। আজকে কিনেছি ৮০ টাকা কেজি। দোকানদার যেভাবে দিচ্ছে আমাকে সেভাবেই নিতে হচ্ছে। রসুনের দামও ৪০ টাকা বাড়তি। তাই ২৫০ গ্রাম রসুন কিনেছি।

কারওয়ান বাজারে ব্যবসায়ী ছায়েদুর ইসলাম ঢাকা পোস্টকে বলেন, ভারতের রসুনের দাম বাড়ায়। তিন চারদিন ধরে রসুন আমদানি বন্ধ রয়েছে। এ কারণে রসুনের দাম বাড়ছে।

বাজারগুলোতে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। আর মাঝারি মানের দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। দেশি-বিদেশি মিক্সড পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। আর বিদেশি নিম্নমানের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬৫ টাকা কেজি। এই পেঁয়াজ এক সপ্তাহ আগেও বিক্রি হয়েছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি।

রসুনের মধ্যে দেশি ভালো মানের রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা কেজি। আর মাঝারি মানের রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ২৭০ টাকা কেজি। যা এক সপ্তাহ আগেও ছিল ২২০ থেকে ২৩০ টাকা কেজি। আর ভালো মানের বিদেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৬০ থেকে ২৮০ টাকা কেজি। আর ছোট কোয়া রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৩০ থেকে ২৫০ টাকা কেজিতে। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি।

কারওয়ান বাজারের পেঁয়াজ-রসুন ব্যবসায়ী রাশেদুল আলম ঢাকা পোস্টকে বলেন, পেঁয়াজ ও রসুন আমদানি আপাতত বন্ধ রয়েছে এ কারণে দাম বাড়ছে।

সরকারি প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) তথ্য মতে, রাজধানীতে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫ থেকে ৫০ টাকা কেজি; যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা কেজি। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা। যা এক সপ্তাহে আগেও ছিল ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি। আমদানি রসুন বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২২০ টাকা কেজি।

সবজির মধ্যে গত সপ্তাহে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া বরবটি বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। কাঁচামরিচ বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকা কেজিতে। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। গাজর ১৪০ টাকা কেজি। করলা বিক্রি হচ্ছে ৭০ টাকায়, কাঁকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখি ৭০ টাকা, ৫০ টাকার লাউ ৬০ টাকা।

পটল বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজিতে, আলু ৪০ টাকা, ৮০ টাকার ঝিঙে ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টি কুমড়া বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকায় (কাটা পিস), ফুলকপি ৫০ টাকা, মূলা ৫০ টাকা কেজি, চাল কুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকা, শিম ২০০ টাকা কেজি, লম্বা বেগুন ৮০ টাকা থেকে কমে ৬০ টাকা, ধনিয়া পাতা ১৬০ টাকা কেজি, বাঁধাকপি ৬০ টাকা পিস দরে বিক্রি হচ্ছে।

পাঙাশ মাছের কেজি এখন ১৮০ টাকা। আকারে বড় পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকায়। চিংড়ির মধ্যে বড় চিংড়ির কেজি ৮০০ টাকা। ছোট চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকা কেজিতে। ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে মাঝারি মানের পাবদা। রুইয়ের কেজি ৩৫০ টাকা, টেংরা ৫০০ টাকা। ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা কেজিতে।

মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা কেজিতে। গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি। আর খাসির মাংস ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

Exit mobile version