Site icon The Bangladesh Chronicle

এক পরিবারে ১৫ ভাগ শেয়ার ও দুইজনের বেশি পরিচালক নয়

আর্থিক প্রতিষ্ঠানে এক পরিবারের শেয়ার ধারণ এবং পরিচালকের সংখ্যা বেঁধে দিয়ে নতুন আইনের খসড়া প্রস্তাব উঠেছে সংসদে। ‌আজ রোববার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের পক্ষে ‘ফাইন্যান্স কোম্পানি বিল-২০২৩’ সংসদে তোলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। পরে বিলটি পরীক্ষা করে তিন দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানো হয়। ১৯৯৩ সালের এ সংক্রান্ত আইন রহিত করে নতুন করে আইন করা হচ্ছে।

উত্থাপিত বিলে বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি বা তাঁর স্বার্থসংশ্লিষ্ট পক্ষ অথবা একই পরিবারের সদস্যরা প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে একক বা যৌথভাবে আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ১৫ ভাগের বেশি শেয়ার কিনতে পারবেন না। একই পরিবার থেকে দুইজনের বেশি পরিচালকও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে রাখা যাবে না।

আরও বলা হয়েছে, এই আইন কার্যকর হওয়ার দুই বছরের মধ্যে ১৫ শতাংশের অতিরিক্ত শেয়ার থাকলে তা হস্তান্তর করতে হবে। এটি না করলে অতিরিক্ত শেয়ার সরকারের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত হবে। তবে এসব বিধান সরকারি মালিকানাধীন ফাইন্যান্স কোম্পানির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না।

বিলে বলা হয়, কোনো পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে দুইজনের বেশি পরিচালক থাকতে পারবে না। শতকরা ৫ ভাগের বেশি শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে সর্বোচ্চ দুইজন পরিচালক থাকতে পারবেন। আর দুই থেকে শতকরা ৫ ভাগ শেয়ারের অধিকারী হলে ওই পরিবারের সদস্যদের মধ্য থেকে একজন ফাইন্যান্স কোম্পানির পরিচালক হতে পারবেন।

বিদ্যমান আইনে একজন ব্যক্তি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কত শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে পারবেন এটি বেঁধে দেওয়া ছিল না। নতুন আইনে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপির সংজ্ঞা সন্নিবেশিত করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, একজন ব্যক্তিকে তিনটি কারণে ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপি হিসেবে গণ্য করা যাবে। সামর্থ্য থাকার পরও যদি ঋণ সময়মতো পরিশোধ না করেন; যে কারণ দেখিয়ে ঋণ দিয়েছেন সেই কারণে ব্যবহার না করে যদি ঋণ অন্য কারণে ব্যবহার করেন এবং যেসব কাগজপত্র জমা দিয়ে ঋণ নিয়েছিলেন পরে সেগুলো যদি ভুয়া বলে চিহ্নিত হয় তাহলে ঋণখেলাপির বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা যাবে। এরূপ মামলা সংশ্লিষ্ট ঋণ বা অগ্রিম বা পাওনা আদায়ের ক্ষেত্রে অর্থ ঋণ আদালতের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্ত করবে না। এরূপ খেলাপিদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ ব্যাংক বিদেশ ভ্রমণ এবং ট্রেড লাইসেন্সে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া ছাড়াও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন এবং যৌথ মূলধন কোম্পানি ও ফার্মসমূহের নিবন্ধকের কাছে কোম্পানি নিবন্ধনের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারবে।

নতুন আইনে কিছু কিছু ক্ষেত্রে জরিমানা ও শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। লাইসেন্সের শর্ত না মানার শাস্তি ১০ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা করা হচ্ছে। বিদেশিরা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার নিতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন নিতে হবে। কী পরিমাণ শেয়ার বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি পাবে তা বাংলাদেশ ব্যাংক নির্ধারণ করবে। পাশাপাশি একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় থাকতে পারবে না।

Exit mobile version