Site icon The Bangladesh Chronicle

উনিশের মাথায় এশিয়ার তাজ

উনিশের মাথায় এশিয়ার তাজদুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যুব এশিয়া কাপের প্রথম শিরোপা জয়ের পর বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের উল্লাস বিসিবি

এক বছর আগে লুসাইল স্টেডিয়ামে লিওনেল মেসি যেভাবে বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে একটু কুঁজো হয়ে হেঁটে ডি মারিয়া-আলভারেজদের মাঝে গিয়েছিলেন, গতকাল দুবাই স্টেডিয়ামে মাহফুজুর রহমান রাব্বি এসিসি প্রেসিডেন্ট জয় শাহর হাত থেকে ট্রফি নিয়ে তেমনিভাবে সতীর্থদের কাছে গিয়ে আনন্দে মাতেন। যুব এশিয়া কাপের প্রথম ট্রফি উদযাপনে একটু বৈচিত্র্য না থাকলে কি হয়! এ বাঁধভাঙা আনন্দের শুরু হয়েছিল আমিরাতের শেষ উইকেট পতনের মধ্য দিয়ে। স্বাগতিকদের শেষ ব্যাটার ওমিদ রেহমানের ক্যাচটি শিহাব ধরতেই ডাগআউট থেকে পতাকা নিয়ে দৌড়ে মাঠে ঢুকে পড়েন বাংলাদেশের দুই ক্রিকেটার। শুরু হয় বুনো উদযাপন। স্মারক হিসেবে স্টাম্প তুলে নেন শিবলি-রাব্বিরা। পেসার মারুফ মৃধাকে কাঁধে তুলে নেন এক সতীর্থ। এর পর গ্যালারির সামনে গিয়ে প্রবাসীদের সঙ্গে হাত মেলানো, সেলফি তো ছিলই।

দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ওপেনার আশিকুর রহমান শিবলির সেঞ্চুরিতে গতকালের ফাইনালে ৮ উইকেটে ২৮২ রান তুলে নেয় বাংলাদেশ যুব দল। এর পর বোলাররাও জ্বলে ওঠেন। ২৪.৫ ওভারে মাত্র ৮৭ রানে আরব আমিরাতকে গুঁড়িয়ে যুব এশিয়া কাপের দশম আসরের শিরোপা জিতে নেন তারা। ১৯৫ রানের জয়ে আগামী মাসে দক্ষিণ আফ্রিকায় অনুষ্ঠেয় যুব বিশ্বকাপের জন্য আত্মবিশ্বাসও বাড়িয়ে নিল জুনিয়র টাইগাররা। ২০২০ সালে এ দক্ষিণ আফ্রিকাতেই যুব বিশ্বকাপ জিতেছিলেন আকবর-শরিফুলরা। গতকাল শিরোপা জয়ের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের দু’দিনের ক্রিকেট উৎসবেরও যেন মধুর সমাপ্তি টানলেন যুবারা। ১৬ ডিসেম্বর দক্ষিণ আফ্রিকাতে রেকর্ড জয়ে যার শুরু করেছিল বাংলাদেশ নারী দল। এর পর গতকাল যুবাদের শিরোপা জয়। মাঝে অবশ্য নিউজিল্যান্ডে ওয়ানডে হেরেছে জাতীয় দল।

যে কোনো উইকেটে যুব ক্রিকেটে ২৮২ রান বিশাল সংগ্রহ। এ রান তাড়া করতে হলে দুর্দান্ত ব্যাটিং করতে হতো আমিরাতকে। কিন্তু বাংলাদেশের তিন পেসারের সামনে স্বাগতিকদের কোনো ব্যাটারই দাঁড়াতে পারেননি। তাই বাংলাদেশকে ন্যূনতম চ্যালেঞ্জ জানাতেই পারেনি তারা। তিন পেসার মারুফ মৃধা, ইকবাল হোসেন ও রোহানাত দৌলা বর্ষণ মিলে ধসিয়ে দেন আমিরাতকে। পঞ্চম ওভারে আরিয়ানশ শর্মাকে আউট করে যার শুরুটা করেন মারুফ মৃধা। অন্য ওপেনার অক্ষত রায়ের স্টাম্পও ছত্রখান করে দেন তিনি। এর পর টানা তিন উইকেট তুলে নেন বর্ষণ। ইকবাল ২ উইকেট নিলে ৬১ রানে ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে আমিরাত। শেষ দিকে অফস্পিনার জীবনও ২ উইকেট নেন।

সকালে টসে হেরে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ঘণ্টায় বেশ চ্যালেঞ্জের মুখেই পড়েছিলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা। দুবাইয়ে সকালের কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে স্বাগতিক দুই পেসার দারুণ বোলিং করেন। ওপেনার জিশান আলমকে আউট করে স্বাগতিকদের উৎসবের উপলক্ষও এনে দিয়েছিলেন পেসার রেহমান। কিন্তু শিবলি ও রিজওয়ান শুরুর প্রথম ঘণ্টা সামাল দেওয়ার পরই ম্যাচের চিত্র পাল্টে যায়। দ্বিতীয় উইকেটে তারা দু’জন ১২৫ রান যোগ করে ম্যাচ নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসেন। ৬০ রান করে রিজওয়ান আউট হলেও দুর্দান্ত দাপটে ব্যাট চালান শিবলি। এর পর আরিফুল ইসলামের সঙ্গে ৮৬ রানের জুটি গড়েন তিনি। টুর্নামেন্টে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে দলকে বড় সংগ্রহ এনে দেন শিবলি। আগের চার ম্যাচে একটি সেঞ্চুরি ও দুটি হাফ সেঞ্চুরি করা শিবলি যেন ফাইনালের জন্য সেরাটা জমিয়ে রেখেছিলেন। ১৪৯ বলে ১২৯ রান করে শেষ ওভারে আউট হন তিনি। ৩৭৮ রান করে টুর্নামেন্ট সেরাও হয়েছেন তিনি।

সমকাল

Exit mobile version