Site icon The Bangladesh Chronicle

ইসলামী ব্যাংকের প্রতিবাদ ও প্রতিবেদকের বক্তব্য

১৯ সেপ্টেম্বর প্রথম আলোর অনলাইন সংস্করণে প্রকাশিত ‘অ্যাননটেক্সের বন্ধ কারখানায় ইসলামী ব্যাংকের ৭০০ কোটি টাকা ঋণ’ শীর্ষক সংবাদের বিষয়ে বক্তব্য পাঠিয়েছে ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। ই-মেইলে পাঠানো বক্তব্যে বলা হয়েছে, রপ্তানিমুখী শিল্পকারখানা শব মেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেডকে চলতি মূলধন সরবরাহ করে তুলা থেকে সুতা তৈরি এবং তা রপ্তানিমুখী শিল্পে ব্যবহারের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আহরণের জন্য ৫০০ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড (ঋণপত্র/ব্যাংক গ্যারান্টি) ও স্থানীয়ভাবে কাঁচামাল ক্রয়ের জন্য ২০০ কোটি টাকার ফান্ডেড বিনিয়োগ (ঋণ) সুবিধা প্রদান করা হয়।

ইসলামী ব্যাংকের বক্তব্যে বলা হয়েছে, এ বিনিয়োগ অন্য ব্যাংকের ঋণ পরিশোধের জন্য প্রদান করা হয়নি। ইসলামী ব্যাংক গ্রাহকের ব্যবসায়িক স্থাপনা, চলতি মূলধনের প্রয়োজনীয়তা, ব্যবসায়িক দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা এবং সরবরাহ ব্যবস্থাপনাসহ ব্যাংকের অন্যান্য বিনিয়োগ নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক সংস্থার নির্দেশনা অনুসরণ করেই বিনিয়োগ প্রদান করেছে। মুরাবাহা টিআর পদ্ধতিতে বিনিয়োগ প্রদানের ক্ষেত্রে মালামাল ক্রয়-বিক্রয়ের প্রয়োজনীয় দলিল নিয়ে বিনিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।

ইসলামী ব্যাংক বলেছে, গুজব সৃষ্টির মাধ্যমে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ব্যাংকের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার যে চেষ্টা করা হচ্ছে, ব্যাংক কর্তৃপক্ষ নিয়ন্ত্রক সংস্থার সহযোগিতায় দেশের অর্থনীতির গতিশীলতা ধরে রাখার জন্য তা সফল হতে দেয়নি। আজ পর্যন্ত কোনো গ্রাহক ইসলামী ব্যাংক থেকে টাকা উত্তোলন করতে গিয়ে ফিরে যায়নি। অধিকন্তু এ ব্যাংকের প্রতি দেশের সর্বস্তরের জনগণ ও গ্রাহকদের আস্থা ও বিশ্বাস উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ইসলামী ব্যাংক আরও বলেছে, ‘আমরা গভীর উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে, ইসলামী ব্যাংকের ধারাবাহিক অগ্রগতি নষ্ট করার লক্ষ্যে দৈনিক প্রথম আলো উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে খবর প্রকাশ করে আসছে, যা কাঙ্ক্ষিত নয়। এ ছাড়া ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে সংবাদ প্রকাশের ক্ষেত্রে ইসলামী ব্যাংকের প্রতি নেতিবাচক এবং দেশের অর্থনৈতিক অগ্রগতিতে বিরূপ মনোভাব পোষণকারী ব্যক্তিবিশেষের মন্তব্য উদ্ধৃত করে থাকে, যা কাম্য নয়। আমরা আশা করি দেশের শীর্ষস্থানীয় এ ব্যাংকের বিষয়ে কোনো সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে দৈনিক প্রথম আলো আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করবে।’

অ্যাননটেক্স গ্রুপের প্রতিষ্ঠান শব মেহের স্পিনিং মিলস লিমিটেডকে ৭০০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়ার তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে ব্যাংকের নির্বাহী কমিটি সভার সিদ্ধান্ত থেকে। আর এই ঋণ থেকে ১৪০ কোটি টাকা উত্তোলন করার তথ্যটি প্রকাশিত হয়েছে গ্রাহকের ব্যাংক হিসাবের বিবরণী থেকে। ইসলামী ব্যাংক কর্তৃপক্ষও ঋণ দেওয়া ও টাকা উত্তোলনের বিষয়টি অস্বীকার করেনি। সংশ্লিষ্ট প্রতিবেদনে ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালকও ঋণ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

এ ছাড়া প্রথম আলো সরেজমিনে কারখানাটি এক বছর ধরে বন্ধ থাকার তথ্য পেয়েছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বক্তব্যেও এ নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়নি। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ঋণ বেড়ে যাওয়ার তথ্য নেওয়া হয়েছে ব্যাংকটির বার্ষিক প্রতিবেদন থেকে। আর কোনো সংবাদের বিষয়ে প্রথম আলো সব সময় খাতসংশ্লিষ্ট বিজ্ঞদের মন্তব্য নিয়ে থাকে। কাউকে ইসলামী ব্যাংক ও অর্থনৈতিক অগ্রগতি নিয়ে বিরূপ ধারণা পোষণকারী হিসেবে চিহ্নিত করা সমীচীন নয়। পাশাপাশি কোন সংবাদে খাতসংশ্লিষ্ট অভিজ্ঞ কার বক্তব্য নেওয়া হবে, তা নির্ধারণ করে দেওয়ার দায়িত্ব ইসলামী ব্যাংকের নয়।

কোনো উদ্দেশ্য নিয়ে প্রথম আলো কোনো বিশেষ প্রতিষ্ঠানের বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে না। সম্পাদকীয় নীতি মেনে সম্পূর্ণ পেশাদারির দৃষ্টিকোণ থেকে প্রথম আলো সংবাদ প্রকাশ করে থাকে।

Exit mobile version