Site icon The Bangladesh Chronicle

ইতিহাসের সন্ধিক্ষণে তারই কথা বলতে পারেন

logo

নয়া দিগন্ত গ্রাফিক্স

লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের সাথে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠককে বিভিন্ন দল ও ব্যক্তি নানাভাবে এর গুরুত্ব তুলে ধরেছেন। বৈঠক-পরবর্তীতে একটি ইতিবাচক আবহ তৈরি হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতা এখন কতটা দৃশ্যমান, সে প্রশ্নে অনেকে দ্বিধান্বিত। তা ছাড়া ওই বৈঠক নিয়ে কিছু আপত্তি শোনা গেছে। বৈঠকটি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে যতটা আগ্রহ উৎসাহ লক্ষ করার কথা ছিল; সেটি এখন অনুপস্থিত। সে জন্য অনেকে এ দ্বিধার কারণ বলে অনুভব করছেন।

ওই বৈঠক ছিল গণতন্ত্রের উত্তরণে প্রথম সোপান। বৈঠকটির জের কেটে গেলে আবারো রাজনীতিতে ধোঁয়াশা সৃষ্টির আশঙ্কা একেবারে অমূলক নয়। তবে এ কথাও সত্য যে, গত দেড় দশকের বেশি সময় এ দেশের কোটি কোটি ভোটবঞ্চিত মানুষ এখন ভোটদানের জন্য উন্মুখ। অবশ্যই তাদের এমন কোনো ভোট নিয়ে কোনো উৎসাহ নেই, যা শুধু নামকাওয়াস্তে ভোট। জনগণ নির্বাচনের একটি গুণগত এবং দৃশ্যমান পরিবর্তন দেখতে চান। লন্ডন বৈঠক কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। ভুলে গেলে চলবে না, বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার অভিপ্রায়ে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তিনি তার দলকে এমন বৈঠক করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি দলের নেতা-নেত্রীদের স্পষ্ট করে এ বার্তা দিয়েছিলেন- বিরোধ নয়, সরকারের সাথে আলোচনায় বসুন। সে পরিপ্রেক্ষিতে লন্ডন বৈঠক সম্পন্ন হয়। এখনো বলার সময় আসেনি, বৈঠক কতটা ফলদায়ক হবে। তবে আশার আলো এখনো নিভে যায়নি। বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে এখনো যে অপরিহার্য এক ব্যক্তিত্ব তা প্রমাণ করে দিয়েছে ওই বৈঠক। তিনি এখন নীরব তবে নিস্তব্ধ নন। দলের স্টিয়ারিং এখনো তার হাতে রয়েছে। জাতির সম্মুখে সময়ের কথাটি তিনি যথাসময়ে উচ্চারণ করেছেন এবং করতে পারেন- সেটি সবাই বিশ্বাস করেন। সেই সাথে দলের কর্মীদের অটুট আস্থা তার ওপর ষোলোআনা আছে। সংযত ও স্বল্পভাষী, তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম জিয়া।

মানুষ এখন এমন এক সরকারের ও সংসদের স্বপ্ন দেখেন; যারা ক্ষমতার চর্চা নয়, দায়িত্ব পালন করবেন। নিকট অতীতে যারা সরকারে ছিলেন, সাংসদ ছিলেন, সেই সরকার কী জনগণের দ্বারা নির্বাচিত ছিল? যে সংসদ ছিল সেটি কী নির্বাচিত ছিল! সরকারের হাজারো ব্যত্যয় নিয়ে সংসদ সদস্যরা কোনো কথা বলেছেন? সরকার ও সংসদ একে অপরের দায়িত্ব পালনে মারাত্মক অবহেলা করেছে; বরং তারা কেবল ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন। যার জন্য জনগণকে চরমমূল্য দিতে হয়েছে। বাস্তবতা হলো- জনগণ দুর্দিনে থাকলেও সরকারঘনিষ্ঠরা ছিলেন আরামে-আয়েশে। জীবন কাটিয়েছেন সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে। জনগণ এখন এসব কিছুর প্রতিকার চান। সেজন্য ট্যাগবিহীন সরকার ও সংসদ তাদের কামনা। সেই সরকার ও সংসদ হবে এ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রক, আর অন্য কেউ নয়। এমন একটি সরকার ও সংসদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে বর্তমান সরকারকে। যদি এর এতটুকু ব্যত্যয় ঘটে; তবে রাজপথে কোটি মানুষের পদভারে আবারো অকল্পনীয় এক ভূকম্পন সৃষ্টি হতে পারে।

আওয়ামী যুগে, যাকে অনেকে বলে থাকেন, আইয়ামে জাহেলিয়াত তথা ভয়াবহ এক অন্ধকার যুগ; তখন দেশবাসীসহ খালেদা জিয়াসহ তার দল এবং জামায়াতে ইসলামীর সাথে যে অবর্ণনীয় জুলুম, নির্যাতন ও অবিচার করা হয়েছে, দলের হাজারো কর্মী-সমর্থক জীবন রক্ষার্থে পালিয়ে বেড়িয়েছেন। জামায়াতের নির্দোষ নেতাদের ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছে। জামায়াতের হাজার হাজার কর্মী কষ্ট করে জীবন ধারণ করেছেন। নিকট নয়, দূর অতীতেও এমন অবর্ণনীয় নির্মমতা-পৈশাচিকতার নজির খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। এ মুহূর্তে তার বর্ণনার প্রয়োজন হয়তো খুব একটা নেই। কেননা আওয়ামী দুঃশাসনে যা সংঘটিত হয়েছে, মানুষ তো বটেই, দেশের প্রতিটি ধূলিকণাও যার সাক্ষী। যে স্মৃতি মনে হলে এখনো সবার মন আৎকে ওঠে। শুধু কি তাই! এমন দুঃসময়ের যে স্মৃতি তা প্রজন্মের পর প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেবে ইতিহাসের পাতা। তাতে সব নির্যাতন দুর্নীতিবাজদের যত কর্মযজ্ঞ-নিষ্ঠুরতা স্থান পাবে। সেদিনও মানুষ আজকের মতো সেই বৈরী-যুগের সে ইতিহাস পাঠ করে শিউরে উঠবেন চোখের পানি ফেলবেন সব মানুষ। দুঃখ হচ্ছে, সেই দুর্দিনের ইতিহাস এখন মুছে ফেলার অপপ্রয়াস নীরবে-সরবে, বুঝে বা না বুঝে বিকৃত করার শত আয়োজন প্রতিক্ষণে চলছে। স্রোতের শেওলার মতো গন্তব্যহীন যাত্রা হচ্ছে ইতিহাস থেকে সরে আসার অনিবার্য পরিণতি। পতিত যুগের ‘প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনা ব্যক্তিগত আক্রোশে বেগম খালেদা জিয়া ও তার পরিবারের প্রতি যে নির্মম অত্যাচার, জেল-জুলুম, অবিচার ও উপহাস করেছেন; পতিত স্বৈরাচারের এমন নির্মম অত্যাচার জনবিবেক কাঁপিয়ে তুললেও শেখ হাসিনার কেশাগ্র নড়েনি, হৃদয় এতটুকু কাঁপেনি। শেখ হাসিনার পতন ও পালানোর পর এক ঐতিহাসিক মন্তব্য করেছিলেন বেগম খালেদা জিয়া। সেখানে না ছিল কোনো ক্রোধ বা উষ্মা। তিনি বলেছিলেন, ‘দেশের এমন এক দৃশ্য দেখার প্রয়োজন ছিল।’ তার এ বাক্যের মধ্যে কী গভীর বোধ ও ব্যঞ্জনা আর অন্তঃদৃষ্টি, সংযম ও সহিষ্ণুতা বিরাজ করছিল। তার কণ্ঠে প্রতিশোধের কোনো বিষবাষ্প ছিল না। ইতিহাসের মোড় যারা ঘোরান, শুধু তারা-ই পারেন জাতির সন্ধিক্ষণে এমন বক্তব্য দিতে ও আচরণ করতে।

স্বৈরাচার হাসিনা জমানায় জামায়াতের আমির ডা: শফিকুর রহমানসহ তার দলের নেতাকর্মীদের কোনো কারণ ছাড়া, বিনাবিচারে জেল-জুলুমের ভয়াবহ শিকার হতে হয়েছে। তিনিও শেখ হাসিনা পালানোর পর বলেছিলেন, ‘আল্লাহর শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি’। একইসাথে দল ও জাতিকে প্রতিশোধপ্রবণ না হয়ে উঠতে কঠোরভাবে নিষেধ করেছিলেন তিনি, এমনটি ছিল সে সময়ের অপূর্ব এক উচ্চারণ। ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে এমন ব্যক্তিত্বদের নামই বারবার উচ্চারিত হয়ে থাকে। মক্কা বিজয়ের পর আল্লাহর রাসূল হজরত মুহাম্মদ সা: বলেছিলেন, ফর গিব অ্যান্ড ফরগেট। সম্ভবত তার সেই মহান শিক্ষাই ডা: শফিক ও তার দল অনুসরণ করেছে।

কথা এখানে শেষ হওয়ার নয়। কিছুকাল থেকে গোটা দেশে এক অস্বস্তি-অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিশেষ করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও দেশের অন্যতম বড় দল বিএনপির মধ্যে কিছু বিষয় নিয়ে হয়তো ভুল বোঝাবুঝির জের হতে পারে। সোসাল মিডিয়ায় এখনো এসব নিয়ে তুমুল তর্কযুদ্ধ চলছে। এ কথা আগেই উল্লেখ করা হয়েছে- জাতির আজকের এই সন্ধিক্ষণে আবারো বেগম খালেদা জিয়া নীরবতা ভেঙে দলকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ড. ইউনূসের সাথে বিরোধ নয়, আলোচনায় বসতে। ওই আহ্বানের ফল ছিল লন্ডন বৈঠক। রাজনীতির প্রধানতম শৈলী হচ্ছে- নীতি-নৈতিকতা দিয়ে রাজনীতির মোকাবেলা করা। অথচ আজ তার প্রকট অনুপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। ফলে, রাজনীতিতে রীতিমতো কাদা ছোড়াছুড়ি চলছে। গালমন্দ ও অপরিশীলিত বাক্যবাণ পরস্পরকে জর্জরিত করছে। আজ মনে পড়ছে, বহুকাল আগে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের উচ্চারিত কয়েকটি ঐতিহাসিক শব্দমালা। শাহাদতবরণের মাত্র চার দিন আগে তিনি যে কথা উচ্চারণ করেছিলেন, সে স্মৃতি আজো হৃদয়ে জ্বলজ্বল করছে।

১৯৮১ সালের ২৪ মে বিকেল ৫টা। ঢাকা সেনানিবাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান তার বাসভবনে এক সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন। উপলক্ষ ‘আল কুদস’ কমিটির সভা শেষে ঢাকায় ফিরে সাংবাদিকদের ওই সভা সম্পর্কে ব্রিফ করবেন। তিন সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটির সদস্য ছিলেন ফিলিস্তিনের নেতা ইয়াসির আরাফাত, বাংলাদেশের প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও আফ্রিকার এক দেশের প্রেসিডেন্ট আহমদ সেকেতুরে। ওই সংবাদ সম্মেলন সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট জিয়া তার স্বভাবসুলভভাবে সংক্ষিপ্ত একটি ব্রিফ দিয়ে সাংবাদিকদের কাছে এ সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন আহ্বান করলেন। দৈনিক ইত্তেফাকের তদানীন্তন সিনিয়র রিপোর্টার জাহিদুজ্জামান ফারুক, একেবারে শুরুতে আউট অব দ্য ট্র্যাকে গিয়ে প্রেসিডেন্টকে একটি প্রশ্ন ছুড়ে দিলেন, জনাব রাষ্ট্রপতি, মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল ‘গোলাম আযমকে’ দেশ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানিয়েছে, এ নিয়ে আপনার মন্তব্য জানতে চাই। প্রেসিডেন্ট জিয়া জবাব দিতে মুহূর্র্তকাল সময় নিয়ে বললেন, আমরা জামায়াতে ইসলামীকে রাজনৈতিকভাবে মোকাবেলা করব। প্রেসিডেন্ট এমন অপ্রাসঙ্গিক প্রশ্নে এতটুকু বিব্রতবোধ করেননি বটে, তবে হয়তো তিনি হতাশা হতে পারেন আমরা এ সংবাদ সম্মেলনের গুরুত্ব বুঝতে অক্ষমতা নিয়ে। প্রেসিডেন্ট জিয়া এই প্রশ্ন উত্তর দিয়ে তার পাশে উপবিষ্ট তৎকালীন তথ্যমন্ত্রী দীর্ঘদেহী হাবিবুর রহমান খানকে উদ্দেশ করে বলেছিলেন, মন্ত্রী মহোদয়, আপনি উপস্থিত সাংবাদিকদের নিয়ে চা পান করুন। প্রেসিডেন্ট এ কথা বলে দ্রুত সেখান থেকে প্রস্থান করেন। আজ অতীত দিনের একথা এই জন্য বর্ণনা করলাম- শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়ার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা, গণতান্ত্রিক মূল্যেবোধ ও সহিঞ্চুতা এবং এমন সব অবান্তর প্রশ্ন তিনি কতটা ধৈর্যের সাথে এবং পরিশীলিত ভাষায় জবাব দিতেন। আজ কী এমন দায়িত্ব নিয়ে বুদ্ধিমত্তার সাথে রাজনীতিতে কথাবার্তা সবার কাছ থেকে পাওয়া যায়। অবশ্যই রাজনৈতিক অঙ্গনে এর বিপরীতে উৎসাহজনক ব্যতিক্রম তো আছে। যা রাজনীতিকে অন্তত কিছুটা হলেও স্থিতিশীলতা দান করছে।

এখন দেশের মানুষ ভোটের একটি সুসংবাদ শুনেছেন। প্রশ্ন হলো- প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের এ নিয়ে প্রস্তুতি কতটা এবং কেমন। বিশেষ করে বিগত তিন তিনটি তথাকথিত নির্বাচনে সাধারণ প্রশাসন, পুলিশপ্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন কর্তার ইচ্ছায় অনবরত কর্ম করে এবং কীর্তন গেয়ে অমার্জনীয় অপরাধ করেছে। তাদের সহযোগিতায় নির্বাচন নিয়ে জঘন্য যথেচ্ছাচার হয়েছে। এরা জনগণের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে সহায়তা করেছে। এসব নির্বাচনে কোনো ভোটার ভোটে ছিলেন না। অথচ নির্বাচন কমিশন প্রদত্ত ভোট নিয়ে বিন্দুকে সিন্ধু বানিয়েছে। বিশ্বের কোনো সভ্য দেশে এমন স্বেচ্ছাচারের কোনো নজির নেই।

সশস্ত্রবাহিনীকে জাতি সবসময় বিতর্কের ঊর্ধ্বে রাখার চেষ্টা করে। তারপরও তৎকালীন স্বৈরসরকার এর কোনো ধার ধারেনি। বাহিনীকে বিতর্কিত করার অনবরত চেষ্টা করেছে। জাতি কখনো এমন স্বৈরাচারকে ভুলবে না। আগামীতে যদি সবাই অতীত ভুলে ‘জনমনে নির্বাচন’ নিয়ে যে প্রতিচ্ছবি, তাকে ধারণ করে- তাতে হয়তো অতীতের পাপের প্রায়শ্চিত্যের সুযোগ আসতে পারে। ভালো স্বচ্ছ সুন্দর প্রশ্নমুক্ত একটি নির্বাচনে সহযোগিতা হবে সব অন্যায়-অবিচার থেকে পরিত্রাণ এবং পরিশোষণের একমাত্র পথ। নির্বাচনের প্রত্যক্ষ অভিনেতা-অভিনেত্রী অবশ্যই রাজনৈতিক দলের সব সদস্য-সদস্যা। প্রতিটি রাজনৈতিক দল ও সংগঠন নির্বাচনকে স্বাগত জানাবে সন্দেহের অবকাশ নেই। কিন্তু বিগত সাড়ে পনের বছরে রাষ্ট্রের পরতে পরতে যত জঞ্জাল জমেছে ও দূষণ সৃষ্টি হয়েছে; এমন সব গার্বেজ দূর করা কি অনাবশ্যক! অথচ এখনো এগুলো দূর করা সম্ভব হয়নি। বস্তুত সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এমন সব কিছু পরিচ্ছন্ন করা জরুরি ও প্রধান শর্ত। একই সাথে এটিও নাগরিক সাধারণ জানতে চাইবেন- রাজনৈতিক দল ও সংগঠনগুলো নির্বাচনের জন্য কতটা প্রস্তুত, দলগুলো কী নিখাদ-নিখুঁত প্রার্থী তালিকা তৈরি করতে পেরেছে। দলে কী কোনো অনুপ্রবেশকারী ঢুকছে। অনেকের ধারণা, এবার নির্বাচনে মার্কা হয়তো খুব বেশি কাজে আসবে না; বরং মূল্যায়িত হবে প্রার্থীর যোগ্যতা, সক্ষমতা, ন্যায়পরায়ণতা, রাষ্ট্র ও জনগণের প্রতি তাদের অঙ্গীকার। মানুষ এখন এমন এক সরকারের ও সংসদের স্বপ্ন দেখেন; যারা ক্ষমতার চর্চা নয়, দায়িত্ব পালন করবেন। নিকট অতীতে যারা সরকারে ছিলেন, সাংসদ ছিলেন, সেই সরকার কী জনগণের দ্বারা নির্বাচিত ছিল? যে সংসদ ছিল সেটি কী নির্বাচিত ছিল! সরকারের হাজারো ব্যত্যয় নিয়ে সংসদ সদস্যরা কোনো কথা বলেছেন? সরকার ও সংসদ একে অপরের দায়িত্ব পালনে মারাত্মক অবহেলা করেছে; বরং তারা কেবল ক্ষমতার দাপট দেখিয়েছেন। যার জন্য জনগণকে চরমমূল্য দিতে হয়েছে। বাস্তবতা হলো- জনগণ দুর্দিনে থাকলেও সরকারঘনিষ্ঠরা ছিলেন আরামে-আয়েশে। জীবন কাটিয়েছেন সুখে স্বাচ্ছন্দ্যে। জনগণ এখন এসব কিছুর প্রতিকার চান। সে জন্য ট্যাগবিহীন সরকার ও সংসদ তাদের কামনা। সেই সরকার ও সংসদ হবে এ ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রক, আর অন্য কেউ নয়। এমন একটি সরকার ও সংসদের স্বপ্ন পূরণ করতে হবে বর্তমান সরকারকে। যদি এর এতটুকু ব্যত্যয় ঘটে; তবে রাজপথে কোটি মানুষের পদভারে আবারো অকল্পনীয় এক ভূকম্পন সৃষ্টি হতে পারে।

ndigantababar@gmail.com

Exit mobile version