Site icon The Bangladesh Chronicle

আমানত কমেছে ১০ ব্যাংকের

Prothom Alo

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত ৩০ সেপ্টেম্বর আমানতের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে এমন ব্যাংকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০। ব্যাংকগুলো হচ্ছে ব্র্যাক, ডাচ্-বাংলা, যমুনা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট, এনসিসি, প্রাইম, স্ট্যান্ডার্ড, সীমান্ত, শাহ্‌জালাল ইসলামী এবং আলফালাহ্ (বিদেশি)।

তবে শুধু সুদহার বৃদ্ধি পাওয়ার কারণেই আমানত কমেছে, এমনটা মেনে নিচ্ছেন না যমুনা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মির্জা ইলিয়াস উদ্দিন আহমেদ। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘যমুনা ব্যাংক আমানতের পরিবর্তে টাকার জন্য কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে রেপো নিয়েছে, অন্য ব্যাংক থেকেও টাকা ধার করেছে। কারণ, আমানতের চেয়ে এসব তহবিলে খরচ কিছুটা কম। তাই আমানতের প্রবৃদ্ধি নেতিবাচক হয়েছে। এখন আমানতের সুদ বাড়ানো হয়েছে, আমানতও বাড়ছে।’

মির্জা ইলিয়াস আরও বলেন, এখন আমদানিতে ৫০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হচ্ছে, ফলে ব্যবসা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সামনের দিনে টাকার চাহিদা আরও বাড়বে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বন্ড, কল মানিতে সুদও বাড়ছে। এতে সুদহারও বাড়বে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত সেপ্টেম্বর শেষে ৫৯ ব্যাংকে নিট আমানত ছিল ১৫ লাখ ১০ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা। আর এক ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকে আমানত হিসাবে ছিল ২৪ হাজার ৬৬৫ কোটি টাকা। আর নিট ঋণ স্থিতি ছিল ১১ লাখ ৭৯ হাজার ৫২৮ কোটি টাকা। পাশাপাশি ব্যাংকগুলোর রপ্তানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) ও পুনঃ অর্থায়ন হিসেবে ঋণ ছিল ৭২ হাজার ৮৭৯ কোটি টাকা।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বেসিক ব্যাংকের আমানতের প্রবৃদ্ধি ১৪ দশমিক ৪২ শতাংশ হলেও ঋণে ২ দশমিক ৫৭ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। একই সময়ে ঋণে মধুমতি ব্যাংকের ৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, এনআরবি ব্যাংকের ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকের ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি হয়। ওই সময়ে বিদেশি খাতের হাবিব, এইচএসবিসি, ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান এবং স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়ারও ঋণে প্রবৃদ্ধি ছিল নেতিবাচক।

এ নিয়ে শাহ্জালাল ইসলামী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ব্যাংকের উচ্চ সুদের আমানত কমিয়ে এনেছি। একসময় ৭৮ শতাংশ আমানত ছিল উচ্চ সুদের। এখন গড় তহবিল খরচ মাত্র ৩ দশমিক ৩৭ শতাংশ। অল্প কয়েকটি ব্যাংকের এত কম খরচের তহবিল রয়েছে। তবে আমানতকে নিরুৎসাহিত করছি, তা বলা যাবে না।’

প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলো ১০০ টাকার আমানতের বিপরীতে ৮৭ টাকা ও ইসলামি ধারার ব্যাংকগুলো ৯২ টাকা ঋণ দিতে পারে। এটি ঋণ–আমানতের অনুপাত (এডিআর) নামে পরিচিত। তবে গত সেপ্টেম্বর শেষে ইসলামি ধারার এক্সিম ব্যাংকের এডিআর ছিল ৯৩ দশমিক ২৮ শতাংশ, যা ফার্স্ট সিকিউরিটির ছিল ৯২ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর প্রচলিত ধারার ব্যাংকগুলোর মধ্যে পদ্মা ব্যাংকের এডিআর ছিল ৯৯ দশমিক ৪৮ শতাংশ ও ন্যাশনাল ব্যাংকের ৯৪ দশমিক ৭১ শতাংশ। অর্থাৎ এসব ব্যাংক ঋণ বিতরণে আগ্রাসী আচরণ করেছে।

এদিকে করোনার প্রকোপ কমায় আমদানি ব্যয় ৫০ শতাংশ বেড়েছে। রপ্তানিও অবশ্য বেড়েছে ৬০ শতাংশের মতো। আবার প্রবাসী আয় কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। সার্বিকভাবে মার্কিন ডলারের চাহিদা বেড়েছে। ফলে ডলারের দাম প্রতিনিয়ত বাড়ছে। এ জন্য বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনেক টাকা চলে যাচ্ছে। অর্থাৎ টাকার চাহিদা দিন দিন বাড়ছে।

Exit mobile version