মেজর শাফায়াত আহমদ (অবঃ)
প্রায় অনেকদিন ধরেই একটা কথা বিভিন্ন মিডিয়ায় শুনে বা দেখে আসছি। বাংলাদেশ নাকি এখন বহির্বিশ্বে একটা রোলমডেল। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ নাকি আমাদের অনুসরণ করছে। আন্তর্জাতিক মহলে আমাদের ভাবমূর্তি নাকি খুবই উজ্জ্বল। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে বৃটেনের রাজা তৃতীয় চার্লসের অভিষেক অনুষ্ঠানের সময় হোটেলের লবির সোফায় বসে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের ছবি এবং সেই ছবিকে নিয়ে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্তাব্যক্তিদের গলাবাজি দেখে সেই উজ্জ্বল ভাবমূর্তির আরও একটি চমৎকার নমুনা দেখলাম। তবে এই সব কিছুর পেছনে এই প্রসঙ্গে আমার কিছু কথা হঠাৎই মাথায় আসল; পুরোটাই আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতালব্ধ।
২০১৫ সালের ঘটনা। তখন সেনাবাহিনীতে ছিলাম; জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে কঙ্গোতে কর্মরত। এক বছরের মিশনে আমরা ৪৫ দিন বাৎসরিক ছুটি পেতাম। কেউ কেউ সেই ছুটি একবারেই নিতেন, কেউ কেউ হয়তো দুইবারে ভেঙ্গে নিতেন। আমিও দুইবারে ভেঙ্গে নিয়েছিলাম; বছরে দুইবার পরিবারের দর্শন হবে এই চিন্তা করে। তবে এই ছুটির বাইরেও আমরা আরেকটা ছুটি পেতাম, যেটাকে আরএ্যান্ডআর (R&R – Rest and Recuperation) বলা হত। প্রতি ছয়মাসে এক সপ্তাহ বরাদ্দ ছিল এই আরএ্যান্ডআর এর জন্য, তবে শর্ত ছিল আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে যাওয়া যাবে না। অনেকেই এই সুযোগে আফ্রিকার কয়েকটা দেশ দেখে নিতেন। আমি প্রথম ছয়মাসের আরএ্যান্ডআর জমিয়ে একবারে দ্বিতীয় ছয়মাসে দুই সপ্তাহ আরএ্যান্ডআর এর পরিকল্পনা করলাম। আমি স্ত্রী তখন ছেলেকে নিয়ে নিউ ইয়র্কে থাকেন; মাস্টার্স করছেন। যেহেতু আমি আফ্রিকার বাইরে যেতে পারছি না, তাই ঠিক করলাম স্ত্রী-সন্তানকেই সেখানে উড়িয়ে নিয়ে যাব। আমাদের পরিকল্পনায় কঙ্গোতে অবস্থানরত আমার এক কোর্সমেটও শামিল হয়ে গেল। অনেক ভাবনা-চিন্তা করে পাঁচটা দেশ ঘোরার প্ল্যান ঠিক হল – উগান্ডা, তানজানিয়া, জাম্বিয়া, সাউথ আফ্রিকা আর কেনিয়া। সাউথ আফ্রিকা শুরুতে আমাদের প্ল্যানে ছিল না। কিন্তু জাম্বিয়া থেকে কেনিয়া যাওয়ার বিমানের টিকেট সাউথ আফ্রিকান এয়ারলাইন্সে হওয়ায় জোহানেসবার্গে আমাদের প্রায় চব্বিশ ঘন্টা ট্রানজিট ছিল। ভাবলাম না চাইতেই যেহেতু পেয়ে যাচ্ছি, জোহানেসবার্গ একটু ঘুরে দেখব। প্ল্যান করা শেষ, এবার ভিসা নেওয়ার পালা। আমার যেহেতু অফিসিয়াল পাসপোর্ট; আবার জাতিসংঘের আইডি কার্ড আছে, জাম্বিয়া ছাড়া আর কোন দেশেই আমার আগাম ভিসার প্রয়োজন ছিল না; অন এ্যারাইভাল ভিসা হয়ে যাবে। জাম্বিয়ার ভিসাও আমার জন্য বেশি ঝামেলার ছিল না। আমার এক সহকারীকে পাসপোর্টসহ ইউএন এর নিজস্ব অভ্যন্তরীণ ফ্লাইটে রাজধানী কিনশাসায় পাঠিয়ে দিলাম, সে আমার ভিসা করে তিন দিনের মধ্যেই আবার ফিরতি ফ্লাইট ধরে চলে আসল। কিন্তু আমার স্ত্রী ভ্রমণ করবেন সাধারন বাংলাদেশি সবুজ পাসপোর্ট নিয়ে। সুতরাং, আমার পরের কাজ তার সব ভিসা ম্যানেজ করা। আমার ছেলের অবশ্য কোন ঝামেলাই নেই। জন্মসূত্রে তার যেহেতু আমেরিকান পাসপোর্ট, পৃথিবীর অধিকাংশ দেশেই তার অন এ্যারাইভাল ভিসা। আমার স্ত্রীর সবচেয়ে বড় সুবিধা তিনি থাকতেন নিউ ইয়র্ক সিটিতে যেখানে পৃথিবীর প্রায় সকল দেশেরই একটা করে কনস্যুলেট আছে যেহেতু জাতিসংঘ সদরদপ্তর এই শহরেই। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল, উগান্ডা, কেনিয়া আর রুয়ান্ডা এই তিন দেশ সম্মিলিতভাবে একটা ভিসা দেয় যার নাম ইস্ট আফ্রিকান ট্যুরিস্ট ভিসা। যেকোন এক দেশের কনস্যুলেট থেকেই এই ভিসা পাওয়া যায়। এক ভিসা দিয়েই তিন দেশ ভ্রমণ করা যায়; অনেকটা ইউরোপের শেংজেন ভিসার মত। আমার স্ত্রী নিউ ইয়র্কের উগান্ডান কনস্যুলেট থেকে তিন দিনের মধ্যে সেই ভিসা পেয়ে গেলেন। দক্ষিণ আফ্রিকার ভিসা তার দরকার নেই। দক্ষিণ আফ্রিকান ইমিগ্রেশনের নীতিমালা অনুযায়ী একজন জাতিসংঘ কর্মকর্তার পরিবারের সদস্য হিসেবে আমার সাথে তিনিও অন এ্যারাইভাল ভিসা পেয়ে যাবেন। কিন্তু বিপত্তি বাঁধল জাম্বিয়া আর তানজানিয়ার ভিসা নিয়ে। এই দুই দেশের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষই ২৮টি দেশের একটি তালিকা তৈরী করে রেখেছে যাদের নাগরিকদের এমনকি দূতাবাসও ভিসা দিতে পারবে না, সরাসরি তাদের ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ছাড়া। এই ক্যাটাগরির ভিসাকে তারা বলে রেফারেল ভিসা। আর প্রত্যাশিতভাবেই এই উভয় দেশের রেফারেল ভিসার তালিকায় বাংলাদেশ সগৌরবে অবস্থান করছে। আমার স্ত্রী তখন নিউ ইয়র্কে দুই দেশের কনস্যুলেটেই যোগাযোগ করলেন। তারা বলে দিল এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে ২ সপ্তাহ থেকে ২ মাস অবধি সময় লেগে যেতে পারে। নিউ ইয়র্ক থেকে তাদের ফ্লাইটের বাকি আছে মাত্র ২১ দিন; আমার তখন মাথায় হাত! সংক্ষেপে বললে, অনেক ঝুট-ঝামেলা, হুজ্জত-হাংগামা করে কোন মতে ফ্লাইটের আগে আমার স্ত্রীর ভিসা আমি করাতে পেরেছিলাম। দুই সপ্তাহের আমাদের সেই আফ্রিকান ট্রিপটা এখনও আমার পরিবারে অন্যতম স্মরণীয় ঘটনাগুলোর একটা। তবে, এই দুই দেশের ভিসা পাওয়ার এই বিড়ম্বনা নিয়ে আমার সবচেয়ে বড় রিয়েলিটি চেক ছিল, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশ হিসেবে আমরা কতটা খারাপ অবস্থায় আছি যে একটা দূতাবাসেরও এখতিয়ার নেই আমাদেরকে সরাসরি ভিসা দেওয়ার!
যাই হোক, ফিরে আসি বর্তমানে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তির গ্রাফটা বহুদিন ধরেই নিম্নগামী। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া কিছু কিছু ঘটনায় প্রতীয়মান হয় যে সেটা অনেকটা তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ সফরে একজন সরকারপ্রধানকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য মার্কিন সরকারের পক্ষ থেকে কেউ না যাওয়াটা অনেকটুকুই ইঙ্গিত বহন করে। একই ব্যাপার লক্ষ্য করা যায় সম্প্রতি কাতার সফরেও। সরকারের মধ্য থেকে কেউ কেউ কাতার সরকারের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধির উপস্থিতির কথা উল্লেখ করলেও, দোহা বিমানবন্দরের ছবি ঘেঁটেও এমন কারো উপস্থিতি নজরে আসে নি। এর ঠিক পরেই এল মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর কর্তৃক ঘোষিত নতুন ভিসা নীতি। ভিসা নীতির রেশ কাটতে না কাটতেই সর্বশেষ খবর, ৬ জন মার্কিন কংগ্রেসম্যান মার্কিন প্রেসিডেন্টের কাছে চিঠি দিয়েছেন যেখানে গুম-খুন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, বিরোধীমত দমন, সবকিছুই স্থান পেয়েছে। এই ৬ কংগ্রেসম্যান তাঁদের চিঠি শেষ করেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ও আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসমূহের অংশগ্রহণ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রেসিডেন্টকে আহ্বান জানিয়ে। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে গর্ব করার মত খুব কম অর্জনই আছে বাংলাদেশের। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক অংশগ্রহণ নিঃসন্দেহে তার মধ্যে একটি ছিল। কিন্তু দেশের ভাবমূর্তি নামতে নামতে এখন এমন পর্যায়ে গিয়ে পৌঁছেছে যে, সেটিও এখন প্রশ্নের সম্মুখীন। এই লেখাটি শুরু করার পর একফাঁকে আবারও তানজানিয়ান ইমিগ্রেশনের ওয়েবসাইট ঘুরে এলাম – এখনও সেই লিস্টে বাংলাদেশ সগৌরবে অবস্থান করছে!
বাংলাদেশের এহেন কূটনৈতিক দৈন্যদশা দেখে একটা প্রশ্ন মনে আসাটা খুবই স্বাভাবিক। বাংলাদেশ কি সব সময়ই আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে এত দুর্বল, এত অবহেলিত ছিল? প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে একটু ইতিহাসের পাতায় উঁকি দিয়ে আসি। যেই দেশে অনেকটা গুরুত্বহীনভাবে গিয়ে এক সোফায় বসে মিনিট খানেকের কুশল বিনিময়ও এখন ‘দ্বিপাক্ষিক আলোচনা’ হয়ে যায়, সেই দেশেই এক সময় বাংলাদেশের একজন প্রেসিডেন্ট রাষ্ট্রীয় সফর করেছিলেন ১৯৮০ সালের জুন মাসে। সেই সফরের জন্য তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার ও বৃটিশ সরকার কোন পর্যায়ের প্রস্তুতি নিয়েছিল, সফরে কি কি হয়েছিল, সফর শেষে উভয়পক্ষের ধন্যবাদ জ্ঞাপন – সব মিলিয়ে ৭৮ পৃষ্ঠার দলিল পাওয়া যায় বৃটেনের ন্যাশনাল আর্কাইভসে। সেখানে উইন্ডসর ক্যাসলে গার্ড অফ অনার থেকে শুরু করে বৃটেনের তৎকালীন রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথের সাথে মধ্যাহ্নভোজ সবই ছিল। সেই একই প্রেসিডেন্টের জন্য সে বছর অগাস্টে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে বিশেষ অধিবেশন বসেছিল যেখানে তিনি বাংলা ও ইংরেজি দুই ভাষায় দুর্দান্ত একটি ভাষণ দিয়েছিলেন। সেই অধিবেশনের পরেই বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তিনি হোয়াইট হাউজ ও এলিসি প্যালেসে আমন্ত্রিত হন এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ফ্রান্স উভয় দেশের প্রেসিডেন্টের সাথেই সত্যিকারের ‘দ্বিপাক্ষিক বৈঠক’ করেন। সেই দ্বিপাক্ষিক বৈঠক শেষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও তিনি প্রথা মাফিক হোয়াইট হাউজের লনে সাংবাদিকদের সামনে যৌথভাবে বক্তব্য রাখেন। জাতিসংঘের অধিবেশন শেষ করে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতের জন্য তিনি যখন ওয়াশিংটন ডিসিতে যান, তাঁকে এন্ড্রু’স এয়ারফোর্স বেস থেকে ওয়াশিংটন মন্যুমেন্ট গ্রাউন্ডে নেওয়ার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনের কাজে নিয়োজিত মেরিন হেলিকপ্টার স্কোয়াড্রন ওয়ানের একটি হেলিকপ্টার এসেছিল। এই স্কোয়াড্রনের যেই হেলিকপ্টারেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট ভ্রমণ করেন, সেটারই কোডনেম হয়ে যায় ‘মেরিন ওয়ান’। মাত্র নয় বছর আগে স্বাধীন হওয়া হতদরিদ্র একটি দেশের এই প্রেসিডেন্টের সাথে সাক্ষাতের জন্যই স্বয়ং তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জিমি কার্টার তাঁর নির্বাচনী প্রচারণা ফেলে হোয়াইট হাউজে চলে এসেছিলেন। সেই একই প্রেসিডেন্ট ফিলিস্তিনিদের অধিকার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে তৈরী আল-কুদস কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান ছিলেন। তলাবিহীন ঝুড়ি থেকে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ স্বমর্যাদায় প্রথম আসীন হয়েছিল তাঁর সময়ই। সেই একই প্রেসিডেন্ট ১৯৮১ সালে ইরাক-ইরান যুদ্ধ থামানো ও দুই দেশের মধ্যে মধ্যস্থতা করার জন্য ওআইসি কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত নয় সদস্যবিশিষ্ট বিশেষ কমিটির সদস্যও ছিলেন, যে কমিটিতে তিনি ছাড়াও আরও তিন দেশের প্রেসিডেন্ট, দুই দেশের সরকারপ্রধান, দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ওআইসি মহাসচিব ছিলেন। সেই প্রেসিডেন্টের নাম ছিল জিয়াউর রহমান। তিনদিন আগে ৩০ মে ছিল তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী। যেদিন তিনি চট্টগ্রামে নিহত হন, সেই সময় তাঁর চট্টগ্রামে থাকারই কথা ছিল না। ইরাক-ইরান শান্তি আলোচনার মধ্যস্থতা করার জন্য আবারও তাঁর যাওয়ার কথা ছিল মধ্যপ্রাচ্যে। কিন্তু, তাঁর ভাগ্যই হয়তো তাঁকে চট্টগ্রামে টেনে নিয়ে গিয়েছিল। ঠিক নয় বছর আগে যেই শহরে স্বাধীনতার ঘোষণা প্রদানের মাধ্যমে তিনি বাংলাদেশের জন্য তাঁর সংগ্রাম শুরু করেছিলেন, ঠিক সেই শহরেই তাঁর সেই সংগ্রাম ও জীবনের বিয়োগান্তক সমাপ্তি ঘটে।
ছোটবেলা থেকেই আমরা ইতিহাস, গল্প-উপন্যাস সবখানেই বাংলাদেশের সুবর্ণ অতীতের কথা পড়ে এসেছি। গোলাভরা ধান, পুকুরভরা মাছ – এগুলোকেই আমরা ধরে এসেছি সমৃদ্ধির নিশান, যদিও তার অব্যর্থ প্রমান প্রশ্নসাপেক্ষ। তবে, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি যে আসলেই কোন একসময় উজ্জ্বল ছিল, আসলেই যে বাংলাদেশ একসময় মর্যাদার আসনে আসীন ছিল, সেই ইতিহাসটা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় আমরা অনেকেই ভুলে যাই। আর ভুলে যাই সেই মর্যাদার পেছনের রূপকার মানুষটিকে। কারন, সেই মানুষটির নাম ছিল জিয়াউর রহমান।
লেখক: বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা ও গবেষক