Site icon The Bangladesh Chronicle

আধুনিকতার মোড়কে দাসত্ব

আধুনিকতার মোড়কে দাসত্ব – ছবি : নয়া দিগন্ত

প্রাচীনকাল থেকেই মানব সমাজে দাসত্ব ও বৈষম্য বিরাজমান। এ ধরনের অবস্থা বা আচরণকে বর্বর ও অসভ্য বলে মনে করি। আমরা এখন কথিত আধুনিক যুগে বাস করছি। নিজেদের সভ্য বলে দাবি করছি। তাহলে কি দাসত্ব ও বৈষম্য বিলুপ্ত হয়ে গেছে? এখন কি আর আমাদের সমাজ দাসত্ব ও বৈষম্য থেকে মুক্ত? না তা নয় বরং আরো প্রবল বিক্রমে এগুলো আমাদের সমাজ, রাষ্ট্র ও সভ্যতায় টিকে আছে। রূপ ও ধরন পাল্টেছে মাত্র। পৃথিবীর অনেক দেশ ও সমাজ দেখার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। কর্মসূত্র ও ভ্রমণ দুই সূত্রেই। আমেরিকার কসমোপলিটন পরিবেশ থেকে পাপুয়া নিউগিনির আদিম সমাজ, মধ্যপ্রাচ্যে যাযাবর বেদুইন জীবন থেকে আফ্রিকার আধা-সভ্য (কথিত সভ্য মানুষের দৃষ্টিতে) দেশগুলোতে আমি ঘুরেছি। শুধু ল্যাটিন আমেরিকায় আমি চাকরি করতে যাইনি। যদিও আমার এক প্রফেসর আমাকে ব্রাজিলে চাকরির অফার করেছিলেন।

Ad by Valueimpression

একসময় আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলে এই দাসপ্রথা ছিল অত্যন্ত প্রবল। এই প্রথা বিলোপ নিয়ে ১৮৬১ সাল থেকে ১৮৬৫ সাল পর্যন্ত চার বছরব্যাপী যুদ্ধ হয়েছিল আমেরিকার উত্তর (কনস্টিটিউশনাল গভর্নমেন্ট) ও দক্ষিণ অংশ (কনফেডারেট স্টেটস)-এর মধ্যে। আব্রাহাম লিঙ্কনের নেতৃত্বে শেষ পর্যন্ত কনস্টিটিউশনাল গভর্নমেন্ট বিজয়ী হলে প্রায় চার মিলিয়ন কালো দাসকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্ত দাসদের নাগরিক অধিকার দেয়া হয়। তখন মনে হয়েছিল দাসত্ব বুঝি শেষ হয়ে গেছে। আসলে তা হয়নি তা আরো বিকশিত হয়েছে, বিবর্ধিত হয়েছে। এর বিকাশ ঘটেছে বিভিন্ন আকৃতি ও প্রকৃতিতে। সে কারণেই পরবর্তীকালে সমতা ও নাগরিক অধিকারের দাবিতে মার্টিন লুথার কিংয়ের মতো লোকদের লড়াই করতে হয়েছে। তিনি আততায়ীর হাতে মর্মান্তিক হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর ১৯৬৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেস নাগরিক অধিকার আইন পাস করে। তারপরও কি বৈষম্য ও দাসত্ব বিলুপ্ত হয়েছে? না হয়নি।

গত ২৫ মে (২০২০) আমেরিকার মিনেসোটা রাজ্যের মিনেয়াপলিসে, এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যু তার প্রমাণ। এমন ঘটনা যে আর ঘটেনি তাও কিন্তু নয়। সেখানে অহরহ এ ধরনের ঘটনা ঘটছে। কিন্তু ফ্লয়েডের ঘটনা উন্মাতাল সৃষ্টি করার পেছনে তথ্যপ্রযুক্তি ভালো ভূমিকা রেখেছে। তাকে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করার ভিডিও ইন্টারনেট ও দেশের মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। এর জেরে প্রবল বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ শুরু হয়। বর্ণ, সম্প্রদায় নির্বিশেষে মানুষ এ ঘটনার নিন্দা করেছে। তারা বৈষম্য ও দাসত্বের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছে। এর রেশ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়ে। ফলে সেখানেও যারা মানবতাকে দাসে পরিণত করা ও বৈষম্য সৃষ্টির জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে মানুষ সোচ্চার হয়েছে। এই বিক্ষোভ এখন শুধু এক শ্বেতাঙ্গ পুলিশের বিরুদ্ধে সীমাবদ্ধ নেই। আমেরিকা আবিষ্কারের পর সেখানকার আদিবাসী রেড ইন্ডিয়ানদের নির্মূল করার জন্য এখন মানুষ কলম্বাসের মূর্তি ভাঙছে। কলম্বিয়ায় সমবেত বিক্ষোভকারীরা সাউথ ক্যারোলিনার রাজ্য আইনসভা ভবন থেকে কনফেডারেট পতাকা অপসারণের দাবি জানিয়েছে। অন্য চার রাজ্যÑ টেক্সাস, মিসিসিপি, ভার্জিনিয়া ও টেনেসিতে ওই প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। পতাকাটি গৃহযৃদ্ধে দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলোর লড়াইয়ের জোরালো প্রতীক ও ক্রীতদাসত্ব ও বর্ণবাদের আইকন। কানাডায় হ্যালিফ্যাক্স ও ভিক্টোরিয়া থেকে অ্যাডওয়ার্ড কর্নওয়ালিস ও জন এ ম্যাকডোনাল্ডের মূর্তি সরিয়ে ফেলা হয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় জেমস কুকের মূর্তি ভাঙা হচ্ছে। লর্ড ক্লাইভকে এখন আর তার দেশে মানুষ গৌরবের দৃষ্টিতে দেখে না। তার মূর্তিও ভাঙা হচ্ছে। কিছু দিন আগে ব্রিটেনের ব্রিস্টলে বিক্ষোভকারীরা দাস ব্যবসায়ী অ্যাডোয়ার্ড কলেস্টনের মূর্তি ভেঙে সাগরে ফেলে দিয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় রোডস মাস্ট ফল আন্দোলন কেপটাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী সিসিল রোডসকে সম্মান জানিয়ে গড়া মূর্তি অপসারণ করেছে।

এখন সামাজিক শোষণ হচ্ছে সূক্ষ্ম উপায়ে, দাসত্ব চলছে ভালো মানুষির মুখোশ পরিয়ে। আসলে মানবসভ্যতার জন্য একটি অত্যন্ত বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। আমি একবার আফ্রিকার সুলতান অব সোকোতোর অতিথি হয়ে তার রাজপ্রাসাদে গিয়েছিলাম। একদিন বিকেলে তার ড্রইংরুমে বসে চা খাচ্ছি। হঠাৎ দেখি দেয়ালে জানালার মতো ছোট ছোট সুরঙ্গ পথে কিছু কালো মানুষ এসে হাজির। হঠাৎ দেখার কারণে আমি কিছুটা ভয় পাই। আমি সুলতানকে জিজ্ঞেস করলাম এরা এভাবে আসছে কেন। সুলতান বললেন ওরা তো ক্রীতদাস, ওদের তো মাথা নিচু করে আসতে হবে। মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশে ভূমিপুত্র আইন কি বৈষম্যমূলক নয়। আমাদের প্রতিবেশী ভারতে যে নতুন নাগরিকত্ব আইন করা হয়েছে সেটাও তো বৈষম্যমূলক। সেখানে ধর্মের ভিত্তিতে বৈষম্য করা হয়েছে। মুসলমান ছাড়া অন্যরা সহজে ভারতের নাগরিকত্ব পাবে। তাও আবার মাত্র তিনটি দেশের জন্য এই আইন। যার একটি বাংলাদেশ। এই আইন সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর বিরুদ্ধে এক ধরনের স্থায়ী অভিযোগও বটে। কারণ এতে বলা হয়েছে ওইসব দেশেকে সংখ্যালঘুদের নির্যাতনের দায়ে অভিযুক্ত করা হয়েছে। বিশ্বের আর কোনো দেশে এমন আইন আছে বলে আমার জানা নেই।

আমাদের দেশে শুধু ব্রিটিশরা শোষণ করেনি এখানকার জমিদাররাও প্রজাদের শোষণ করেছে। প্রজাদের সাথে ক্রীতদাসের মতো আচরণ করেছে। আইনে যাই থাক না কেন আচরণ ও মানসিকতায় কোনো ভিন্নতা ছিল না। আমার পিতা, পিতামহ, মাতামহরা ছিল ঊনবিংশ শতকের দ্বিতীয়ার্ধের মানুষ। তারা এসব বৈষম্য ও অনাচার প্রত্যক্ষ করেছেন। তাদের মুখে সে সময়ের জমিদার ও সামন্তপ্রভুদের অত্যাচারের কাহিনী শুনেছি। ২০২০ সালে আমরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১০০ বছর পূর্তি পালন করছি। কিন্তু এই বিশ্ববিদ্যায় প্রতিষ্ঠার বিরোধিতা করেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। আমরা কতজন এই ইতিহাসের ব্যাপারে সচেতন? বৈষম্য তো এটাই। শুধু রবীন্দ্রনাথ একা নয় সে সময়ে মানুষ যাদেরকে জ্ঞানীগুণী বলে শ্রদ্ধা করত তাদের অনেকের মানসিকতা এমনই ছিল। মহাজ্ঞানী হলেই যে কেউ মহামানব হতে পারে না তার অনেক উদাহরণ এখানে রয়েছে। এই বৈষম্যের জের ধরেই তো অখণ্ড ভারতে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের বিপরীতে মুসলিম লীগের জন্ম হয়েছিল। ব্রিটিশ আমলে আমরা এক ধরনের বৈষম্যের শিকার হয়েছি। সেই বৈষম্য থেকে মুক্তি পেতে পাকিস্তান রাষ্ট্র করা হলো। কিন্তু বৈষম্য বিলোপ না হয়ে আরো নতুন নতুনরূপে আবির্ভূত হলো। সেটাও দূর করার জন্য অগণিত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত হলো স্বাধীন বাংলাদেশ। কিন্তু বৈষম্য দূর হয়নি। এই করোনা মহামারীর সময়ে বৈষম্যের ভয়ঙ্কর রূপটি আরো প্রকট হয়ে আমাদের সামনে হাজির হয়েছে। আমাদের দেশে এখন যে অর্থনৈতিক বৈষম্য চলছে তা আমার মতে দাসত্বের চেয়েও ভয়ঙ্কর। দুর্নীতি বৈষম্যেরই একটি রূপভেদ মাত্র।

আজ বিশ্বে আমরা যতগুলো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা দেখছি সবগুলোও শোষণমূলক। পুঁজিবাদ পুরোপুরি শোষণের ওপর ভিত্তি করে টিকে আছে। বিশ্বশক্তিগুলোর মানুষকে শোষণ করার জন্য অহরহ নানা কলাকৌশল করছে। নানা সংগঠন ও সংস্থা করছে। লিগ অব নেশন্স, ইউনাইটেড নেশন্স করা হয়েছে শোষণকে টিকিয়ে রাখার জন্যই। আর সে কারণেই চার-পাঁচটি দেশ তাদের ইচ্ছা-অনিচ্ছা গোটা বিশ্বের ওপর চাপিয়ে দিতে পারছে। শোষণমূলক অর্থনীতি টিকিয়ে রাখার জন্যই বিশ্বব্যাংক, আইএমএফÑ এগুলো। আমরা ক্লাসিক্যাল অর্থনীতির বইয়ে পড়ি : উৎপাদনের চার চলক (ফ্যাক্টর) ল্যান্ড, লেবার, ক্যাপিটাল ও অর্গানাইজেশন (জমি, শ্রম, পুঁজি ও সংগঠন)। জমি আল্লাহর দান। জমির মান উন্নত করা যেতে পারে, এর মূল্য বাড়ানো যেতে পারে। তবে এটা স্থির। পুঁজিবাদী সমাজের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো শ্রম ও পুঁজি। পুঁজির চলন (ক্যাপিটাল মুভমেন্ট) না হলে বিনিয়োগ হবে না। অর্থ পাচারও এক ধরনের পুঁজি চলন। আবার পুঁজির চেয়েও মৌলিক বিষয় হলো শ্রম। ‘লেবার ইজ স্টোরড-আপ ক্যাপিটাল’। অর্থাৎ শ্রম হলো মজুদ পুঁজি। আজ সারা বিশ্বে শ্রমিকদের গমনাগমন হচ্ছে। যেখানে সস্তা শ্রম সেখানে পুঁজি যাচ্ছে। আমাদের এখানে আসছে, ভারতে, ভিয়েতনামে যাচ্ছে। আর শ্রম আদায়ের জন্যই সৃষ্টি হচ্ছে দাসত্বের। সব ঔপনিবেশিক শক্তি এটা করেছে।

এ কারণেই পুঁজিবাদি সমাজের বিকাশের সাথে দাসত্ব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। এখন হয়তো আগের মতো ধরে, জাহাজে করে পশুর মতো বেঁধে মানুষকে দাস হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয় না কিন্তু এখন যেটা হচ্ছে সেটা হলো আধুনিকতার মোড়কে দাসত্ব। আমি প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের অনেক দেশে গিয়ে দেখেছি সেসব জায়গায় ঔপনিবেশিক শক্তিগুলো কয়েক শ’ বছর আগে চাষাবাদের জন্য বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চল ক্রীতদাস নিয়ে আসে। তাদের বংশধররা এখনো আছে। তাদের ওইসব দেশ ভূমির অধিকার দেয়নি। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে একটি দেশে বাস করছে, সেখানকার সংস্কৃতির সঙ্গে মিশে গেছে কিন্তু তাদের ভূমির অধিকার নেই। এর চেয়ে বড় বৈষম্য ও দাসত্ব কী হতে পারে?

আমাদের লাখ লাখ মানুষ দেশের বাইরে কাজ করতে যাচ্ছে তারাতো আধুনিকতার মোড়কে দাসত্বই করছে। যারা অশিক্ষিত, কোনো শিক্ষা নেই তারা বিদেশে শ্রম দিচ্ছে তো। ৩০০ বছর আগে মানুষকে ক্রীতদাস আকারে ধরে নিয়ে যাওয়া হতো চাষাবাদের জন্য। এখন এক দেশের এমন দরিদ্র অশিক্ষিত মানুষ অন্য দেশে পাড়ি জমাচ্ছে ওই একই কাজ করার জন্য। আমাদের দেশের মানুষ কি মালয়েশিয়ার পাম বাগানে কাজ করতে যাচ্ছে না? কিংবা মধ্যপ্রাচ্যের কৃষিভূমিতে কাজ করছে না? ইউরোপ আমেরিকার পশু খামারেও তো কাজ করছে। নির্মাণ শ্রমিকের কাজ করছে। যদিও শ্রম বৈচিত্র্য অনেক বেড়েছে। আরো অনেক ক্ষেত্রে শ্রম দিচ্ছে, কিন্তু মূল বিষয় একই। অনুন্নত বিশ্ব উন্নত বিশ্বকে এই শ্রমিক সরবরাহ করছে।

মধ্যপ্রাচ্যে একটি বড় অংশ আমাদের শ্রমিক। এটা হলো দাসত্বের আধুনিক সংস্করণ। দাসত্ব হলো উৎপাদনের মৌলিক চলক (ফান্ডামেন্টাল ফ্যাক্টর)। এর সাথে প্রাচীন যুগের দাসত্বের পার্থক্য শুধু পরিভাষা ও মোড়কের। আমরা কাজটি সচেতনভাবেই করছি। আমরা নারীদেরও একই কাজে বিদেশে ঠেলে পাঠাচ্ছি। আমরা তাদের কর্মসংস্থান করতে পারছি না। সেটা আমাদের ব্যর্থতা। ফলে আমরা তাদের উৎসাহিত করছি যেন মানুষগুলো আধুনিক দাসত্বকে বেছে নেয়। এটাও বৈষম্যের একটি দিক। আরো অনেক ধরনের বৈষম্য রয়েছে।
আমরা কি বিদেশে আমাদের শ্রমিকদের করুণ অবস্থার অনেক কাহিনী জানি না, তাদের ওপর নির্যাতন চলে, জেলখানায় আটকে রাখে। এগুলো তো আধুনিক দাসত্ব। আমি যখন আইডিবির মুখ্য অর্থনীতিবিদের মতো একটি আন্তর্জাতিক সংস্থার শীর্ষপদে কাজ করেছি তখন মধ্যপ্রাচ্যে আমার স্বদেশী অনেককে যখন নানাভাবে শোষিত ও নির্যাতনের কাহিনী শুনতাম বা দেখতাম যে আমারই স্বদেশী কেউ অত্যন্ত অমানবিক একটি কাজে নিয়োজিত তখন নিজেকে খুব ছোট মনে হতো।

বৈষম্য বিলোপ ও দাসত্ব বিমোচন করতে চাইলে শ্রমিকের অবস্থার উন্নতির দিকে নজর দিতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে হবে। তাই তৃণমূল পর্যায়ে কর্মসংস্থান ও উদ্যোক্তা সৃষ্টি করে দেশকে একটি মজবুত অর্থনৈতিক ভিত্তির ওপর দাঁড় করানোর লক্ষ্যে আমি ‘সবুজ হাট প্রকল্পের’ ধারণা দিয়েছিলাম। এ ব্যাপারে বিস্তারিত নয়া দিগন্তের কলামে আমি উল্লেখ করেছি। দুর্ভাগ্য নানা প্রতিকূলতার মুখে অথবা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এর অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বুঝাতে ব্যর্থ হওয়ায় সেই ধারণা আলোর মুখ দেখেনি। তা না হলে আজ করোনা মহামারীর সময় হয়তো আমাদের একবার রাজধানী মুখে আবার গ্রামের মুখে শ্রমজীবী মানুষের ছোটাছুটি দেখতে হতো না। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও তৃণমূল পর্যায় থেকে দারিদ্র্য বিদায় করার জন্য ‘সবুজ হাট প্রকল্পের’ আজো প্রাসঙ্গিক।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড; সাবেক মুখ্য অর্থনীতিবিদ, ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংক, জেদ্দা

hmct2004@yahoo.com

Exit mobile version