Site icon The Bangladesh Chronicle

আওয়ামী সিণ্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে নিয়ন্ত্রণহীন দ্রব্যমূল্য

 আমার দেশ
৬ অক্টোবর ২০২৩

আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে হার মানছে সরকারের বেধে দেওয়া দাম

নিজস্ব প্রতিনিধি

আওয়ামী সিন্ডিকেটের কাছে হার মানছে সরকারের বেধে দেওয়া দাম। আলু, পেয়াজ ও ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে সরকার মূল্য নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু আওয়ামী সিণ্ডিকেটের কাছে হার মানতে হচ্ছে। সিন্ডিকেটই বাজার নিয়ন্ত্রণ করছে। এই পণ্য গুলোর দাম নির্ধারিত মূল্যের চেয়েও বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। অনুরূপভাবে প্রতিটি ভোগ্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণ করছে আওয়ামী সিন্ডিকেট।

সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে বেড়েছে কাঁচা মরিচ, বিভিন্ন সবজি ও মাছের দাম।

শুক্রবার (৬ই অক্টোবর) সকালে রাজধানীর কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে।

বিক্রেতারা বলছেন, গত কয়েকদিন বৃষ্টির কারণে ঢাকার বাজারগুলোতে পণ্যের সরবরাহ কম। তাতে সবজি ও মাছের দাম বেড়েছে। এছাড়া কাঁচা মরিচের বাজারেও অস্থিরতা কাটেনি। অন্যসব সবজির মত আলুর দামও বাড়তি। পেঁয়াজের সংকট দিন দিন তীব্র হচ্ছে। এ পণ্যটির দামও বেড়েছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এদিকে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৪৮ থেকে ৫০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৪২ থেকে ৪৫ টাকা। খোলা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে আবারও ৯০ টাকায় উঠেছে। যা গত সপ্তাহে ৮০ টাকায় নেমেছিল। পাশাপাশি আমদানিকৃত পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৭০-৭৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

খুচরায় প্রতি কেজি আলু ৩৫ থেকে ৩৬ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার। সে হিসাবে বাজারে এক কেজি আলুতে অন্তত ১২ টাকা আর প্রতি কেজি পেঁয়াজে ২০ থেকে ২৫ টাকা বেশি নেওয়া হচ্ছে। ফার্মের ডিমের হালি ৪৮ টাকা বেঁধে দিলেও বাজারে বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

সপ্তাহের ব্যবধানে কাঁচা বাজারগুলোতে সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। বড় আকারের গোল বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায়, যা আগে ছিল ৬০ থেকে ৮০ টাকা। করলা, বরবটির দাম ছুঁয়েছে ১০০ টাকা। দরদাম করে নিলেও ৮০ টাকার কমে পাওয়া যাচ্ছে না। নতুন শিম বিক্রি হচ্ছে ১৮০ থেকে ২০০ টাকা কেজি দরে। ছোট ফুলকপি ৬০ টাকার কমে মিলছে না। এছাড়া ঝিঙে, চিচিঙ্গা ও ধুন্দুলের কেজিও ৬০ থেকে ৮০ টাকা। পটল, ঢেঁড়সের কেজিও ৬০ টাকা। তবে সস্তার সবজি হিসেবে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে।

অন্যদিকে গত কয়েকদিন ধরেই কাঁচা মরিচের দাম বড় ব্যবধানে ওঠানামা করছে। শুক্রবার বিভিন্ন বাজারে কোথাও ২৪০ টাকা আবার কোথাও ২৮০ টাকা কেজি দরে এ পণ্যটি বিক্রি হতে দেখা গেছে।

মালিবাগ বাজারের সবজি বিক্রেতা হোসেন মিয়া বলেন, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রায় প্রতিটি সবজি কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়েছে। কারণ, বৃষ্টিতে সরবরাহ কম। এতে পরিবহন খরচও বেড়েছে। এ অবস্থা ব্যবসা করাই কঠিন এখন।

মাছের বাজারগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতারা রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন। নদী ও হাওরের মাছ সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে আগে থেকেই। চাষের মাছের দামও এখন বেশ চড়া। এক্ষেত্রেও সরবরাহ সংকট এবং বাজারে ইলিশ কম থাকার কথা বলছেন বিক্রেতারা।

আগে এক কেজি ছোট ও মাঝারি আকারের পাঙাশের দাম ছিল ১৮০ থেকে ২২০ টাকা, একই মাছ এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। দাম বেড়ে তেলাপিয়ার কেজি ২৫০ টাকা ছাড়িয়েছে। কোথাও কোথাও ৩০০ টাকায়ও বিক্রি হতে দেখা গেছে। চাষের কই, পাবদা বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৪৫০ টাকার বেশি দরে। ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রাম ওজনের চাষের রুই-কাতলার দাম হাঁকানো হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। এক কেজির বেশি ওজনের হলে ৪০০ টাকা চাওয়া হচ্ছে। আর বড় মাছের কেজি ছুঁয়েছে ৫০০ টাকা পর্যন্ত।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, কেজিতে তিনটি হবে- এমন আকারের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা কেজি দরে। যা গত বছর একই সময়ে ৪০০ টাকা ছিল। আকারে একটু বড় ইলিশ দামেও বেশি। একেকটি ৮০০ গ্রাম ওজনের এক কেজি ইলিশের দাম চাওয়া হচ্ছে ১২০০ টাকার বেশি। এক কেজি সাইজের ইলিশের কেজি দেড় হাজার টাকা ছাড়িয়েছে। আর কেজির বেশি ওজনের হলে দুই হাজার টাকা বেশি দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। দর কষাকষি করে হয়তো কিছুটা কমে কেনা যাচ্ছে। তবে তা সাধারণ ভোক্তাদের একেবারেই নাগালের বাইরে।

Exit mobile version