- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২১
ব্রিটিশ-সুইডিশ ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট কোম্পানি অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি টিকা করোনাভাইরাসের উপসর্গজনিত রোগ প্রতিরোধে ৭৪ শতাংশ কার্যকর। তবে ৬৫ বছর এবং তার চেয়ে বেশি বয়সীদের শরীরে এই কার্যকারিতার হার প্রায় ৮৩ দশমিক ৫ শতাংশ। বুধবার যুক্তরাষ্ট্রে বৃহৎ পরিসরের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ফলাফল প্রকাশ করে এসব তথ্য জানিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
গত মার্চে ব্রিটিশ-সুইডিশ এই কোম্পানির করোনা টিকার অন্তর্বর্তীকালীন ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে কার্যকারিতার হার ৭৯ শতাংশের তুলনায় সামগ্রিক কার্যকারিতার হার ৭৪ শতাংশ বলে জানায়। এর কয়েকদিন পর কার্যকারিতার এই হার ৭৬ শতাংশ বলে জানানো হয়। এ নিয়ে স্বাস্থ্য কর্মকর্তাদের বিরল তিরস্কারের মুখে পরিসংখ্যান পুরোনো তথ্যের ওপর ভিত্তি করে সংশোধন করা হয়েছিল বলে স্বীকার করে অ্যাস্ট্রাজেনেকা।
যুক্তরাষ্ট্র, চিলি এবং পেরুতে ২৬ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবীর শরীরে টিকার পরীক্ষা চালিয়েছে অ্যাস্ট্রাজেনেকা। এই স্বেচ্ছাসেবীদের প্রায় এক মাসের ব্যবধানে ভ্যাকসিনের দু’টি ডোজ দেয়া হয়েছিল। বহুল প্রতীক্ষিত এই ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের ফল নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত হয়েছে।
ট্রায়ালে ভ্যাকসিন পাওয়া ১৭ হাজারেরও বেশি স্বেচ্ছাসেবীর কারো শরীরেই কোভিড-১৯ গুরুতর অথবা আশঙ্কাজনক অসুস্থতা তৈরি করতে পারেনি। বিপরীতে যে সাড়ে ৮ হাজার স্বেচ্ছাসেবী প্ল্যাসেবো নিয়েছিলেন তাদের ৮ জনের শরীরে করোনা গুরুতর বা আশঙ্কাজনক অসুস্থতা তৈরি করেছিল। প্ল্যাসেবো নেয়ার পর গুরুতর কোভিডে আক্রান্তদের মধ্যে দু’জনের প্রাণহানিও ঘটেছে। কিন্তু যারা করোনার টিকা নিয়েছিলেন তাদের কেউই মারা যাননি।
টিকার সামগ্রিক ফলাফলের ব্যাপারে যুক্তরাষ্ট্রে এই ভ্যাকসিন ট্রায়াল দলের সদস্য এবং জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ভ্যাকসিন গবেষক ডা. আনা ডারবিন বলেছেন, আমি অত্যন্ত আনন্দিত এবং একই সাথে অবাক। এটি গুরুতর রোগ এবং হাসপাতালে ভর্তির বিরুদ্ধেও উচ্চ সুরক্ষা দিয়েছে।
অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের তৈরি অ্যাস্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের সাথে রক্ত জমাট বাঁধার ঘটনা অতীতে ঘটলেও থ্রোম্বোসাইটোপেনিয়াসহ থ্রোম্বোসিস নামের বিরল কিন্তু মারাত্মক রক্ত জমাট বাঁধার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কোনো ঘটনা ট্রায়ালে ঘটেনি।
গত জুলাইয়ের শেষের দিকে অ্যাস্ট্রাজেনেকা তাদের তৈরি টিকা যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসনের (এফডিএ) অনুমোদনের জন্য আবেদনের পরিকল্পনা করছে বলে জানিয়েছিল। সেই সময় অ্যাস্ট্রাজেনেকার প্রধান প্যাসকল সোরিয়ট বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন যে, এই টিকা এখনো যুক্তরাষ্ট্রে করোনা মহামারী মোকাবিলায় ভূমিকা রাখতে পারে। যদিও এই প্রক্রিয়ায় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি সময় লাগছে।