Site icon The Bangladesh Chronicle

অর্থনীতি ঠিক করার দাওয়াই মানুষের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে

অর্থনীতি ঠিক করার দাওয়াই মানুষের ওপর চাপ বাড়াচ্ছে

দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বাজারে গিয়ে হাপিত্যেশ করছে সাধারণ মানুষ। দুই বছর ধরে সরকারি হিসাবেই মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। আশানুরূপ বিনিয়োগ না বাড়ায় সেভাবে কর্মসংস্থানও বাড়েনি। মূল্যস্ফীতির বিবেচনায় অধিকাংশ মানুষের প্রকৃত আয় কমেছে। কষ্টের অন্যতম কারণ হলো অর্থনীতির খারাপ অবস্থা। অর্থনীতির অসুখ সারাতে এখন আইএমএফের দাওয়াই নিচ্ছে সরকার। অর্থনীতি ঠিক করতে খারাপ সময়ে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন কঠোর পদক্ষেপ। বাড়ানো হয়েছে ডলারের দর, বেড়েছে সুদহারও। নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে আমদানি। ভর্তুকি কমানোর জন্য বিদ্যুৎ ও জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। বিদ্যুতের দাম সামনে আরও বাড়বে বলে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এসবের ফলে জিনিসপত্রের দামের ওপর নতুন করে বাড়তি চাপ তৈরি হচ্ছে। নিম্ন আয়ের মানুষকে বেশি বেশি দুশ্চিন্তায় ফেলছে।

সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে যদিও বলা হচ্ছে, অর্থনীতিতে কিছু কঠোর পদক্ষেপের কারণে মূল্যস্ফীতি হয়তো সাময়িকভাবে বাড়বে। তবে তা পরে কমে আসবে। এ আশাবাদ কতটুকু বাস্তবে রূপ নেবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।

সরকার ও কেন্দ্রীয় ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য চাহিদা সংকোচনের পথে হাঁটছে। অথচ কার্যকর বাজার ব্যবস্থাপনা, অর্থ পাচার এবং বেনামি ও ভুয়া ঋণ ঠেকানোর দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির কথা বলা হলেও কিছু ব্যাংকের ক্ষেত্রে উদার নীতি নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে হঠাৎ ব্যাংক একীভূতকরণ নিয়ে আমানতকারীদের মধ্যে তৈরি হয়েছে আতঙ্ক। এতে করে ব্যাংক খাতের ওপর মানুষের আস্থায় চিড় ধরছে।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, বাংলাদেশে বেসরকারি খাতের ঋণের সামান্যই ভোক্তাঋণ। বেশির ভাগ ঋণ নেন উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীরা। সুদহার ও ডলারের দর বাড়লে ব্যবসা-বাণিজ্যের খরচ বেড়ে সরাসরি পণ্যমূল্যে প্রভাব পড়ে। বাজার তদারকিতে দুর্বলতা থাকায় অনেক ক্ষেত্রে এসবের দোহাই দিয়ে যা বৃদ্ধির কথা, তার চেয়ে বেশি দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়ীরা। এখন বেশির ভাগ মানুষ দৈনন্দিন খরচ মিটিয়ে টিকে থাকার সংগ্রাম করছেন। এ সময়ে সুদহার বাড়িয়ে চাহিদা নিয়ন্ত্রণের সূত্র খুব বেশি কাজে দিচ্ছে না। বরং ডলার দরে অস্থিরতা ও সুদহার বৃদ্ধির কারণে নতুন বিনিয়োগ কমে কর্মসংস্থানে প্রভাব পড়ছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মূল্যস্ফীতিকে উস্কে দিচ্ছে।

আইএমএফের পরামর্শে গত ৮ মে সুদহার বাজারভিত্তিক করে বাংলাদেশ ব্যাংক। নীতি সুদহার আরও ৫০ বেসিস পয়েন্ট বাড়িয়ে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ নির্ধারণ করেছে।

এ ছাড়া ডলারের নতুন ব্যবস্থা ‘ক্রলিং পেগ’ চালু করে ১১৭ টাকা মধ্যবর্তী দর নির্ধারণ করেছে। দর বৃদ্ধির কারণে এখন প্রতি ডলারে পাঁচ টাকার মতো বেড়েছে। আমদানিকারকদের ডলার কিনতে হচ্ছে ১১৯ থেকে ১২০ টাকায়।

মতামত জানতে চাইলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সমকালকে বলেন, সুদহার অনেক আগেই বাজারভিত্তিক করা উচিত ছিল। এ ছাড়া ডলারের দর আটকে রেখে কোনো লাভ হয়নি; বরং রিজার্ভের ক্ষয় হয়েছে। ডলারের সরবরাহ বাড়াতে রপ্তানি বহুমুখীকরণ করতে হবে। একই সঙ্গে হুন্ডি কমিয়ে রেমিট্যান্স বাড়াতে হবে। তিনি বলেন, অর্থ পাচারে বিভিন্ন ব্যক্তির নাম আসছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে হবে। তাহলে যারা রেমিট্যান্স পাঠায়, তারা উৎসাহিত হবে। অর্থ পাচার বন্ধ হলে ডলার বাজার স্থিতিশীল হয়ে যাবে। ব্যাংক একীভূতকরণ বিষয়ে সাবেক এ গভর্নর বলেন, ব্যাংক একীভূত করার আগে বিশদ নীতিমালা করা দরকার ছিল। নীতিমালার ভিত্তিতে কে কার সঙ্গে একীভূত হবে, নিজেরাই ঠিক করত। তা না করে ডেকে নিয়ে একীভূত হতে বলায় আমানতকারীদের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

আর্থিক খাতের সঙ্গে সম্পৃক্ত বিভিন্ন পর্যায়ে কথা বলে জানা গেছে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন কঠোর নীতির কথা বললেও কোনো কোনো ব্যাংকের ক্ষেত্রে উদারতা দেখাচ্ছে। একই সময়ে আবার নজিরবিহীনভাবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাব ঋণাত্মক রেখে কয়েকটি ব্যাংক লেনদেনের সুযোগ পাচ্ছে। বর্তমানে সাতটি ব্যাংকের চলতি হিসাবে ঘাটতি ২৯ হাজার কোটি টাকা।

ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রাহমান বলেন, দেশ থেকে এলসিসহ বিভিন্ন উপায়ে ডলার বাইরে চলে যাচ্ছে। এটি ঠেকাতে না পারলে ডলার পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। আর ডলারের দর বাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়বে। বিলাসী পণ্য আমদানি যদি ছয় মাস বন্ধ থাকে, তাতে দেশের কিছু যাবে আসবে না। আমদানি নিয়ন্ত্রণের কারণে তো রোলস রয়েস গাড়ির মতো বিলাসী পণ্য আমদানি কমেনি। পরিস্থিতির উন্নতি করতে হলে অর্থ পাচার, বেনামি ও ভুয়া ঋণ বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে হুন্ডির সঙ্গে ব্যাংকের ডলারের দরে পার্থক্য কমাতে হবে। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা মূল্যস্ফীতি কোথায় নামিয়ে এনেছে। আর আমাদের মূল্যস্ফীতি আরও বাড়ছে। উৎপাদন খরচ কমানোর মাধ্যমে এখনই খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর জোর দিতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক মো. মেজবাউল হক বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের জন্য সুদহার বৃদ্ধিই একমাত্র পন্থা নয়। আরও অনেক বিষয় রয়েছে। সেদিকেও নজর দিতে হবে। আর ডলারের দর বৃদ্ধির ফলে পণ্যমূল্যে একটা প্রভাব পড়বে– এটা ঠিক। তবে অনেক যাতে না পড়ে, সে জন্য একই সময়ে নীতি সুদহার বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সংকোচনমূলক মুদ্রানীতির প্রভাবে বাজারে তারল্যের ওপর চাপ রয়েছে। এ ছাড়া ট্রেজারি বিল ও বন্ডের বিপরীতে প্রচুর টাকা উঠে যাচ্ছে। এ সময়ে ব্যাংকগুলোর আদায় জোরদার এবং দক্ষ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে।

যেভাবে বর্তমান পরিস্থিতি 

বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরুর পরই সুদহার বাড়িয়েছিল। একই সঙ্গে আবার নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য বিভিন্ন ভর্তুকি দিয়েছে। তখন বাংলাদেশে ঘটেছে ঠিক উল্টো। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে গত বছরের জুন পর্যন্ত সুদহারের সর্বোচ্চ সীমা ৯ শতাংশে সীমিত রেখেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। করোনার সময় রিজার্ভ বেড়েছিল মূলত রপ্তানি আয়ে উচ্চ প্রবৃদ্ধি, হুন্ডি প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রেকর্ড রেমিট্যান্স এবং বিদেশি ঋণের ওপর ভর করে। ২০২১ সালের আগস্টে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের ঘর অতিক্রম বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ১৮ বিলিয়ন ডলারে নেমেছে। রিজার্ভের পতন ঠেকাতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক অ্যাডহক ভিত্তিতে একেক সময় একেক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কোনো পদক্ষেপই রিজার্ভের পতন ঠেকাতে পারেনি।

২০২০ সালে কেন্দ্রীয় ব্যাংক ঢালাওভাবে ঋণ পরিশোধ না করেও খেলাপিমুক্ত থাকার সুযোগ দেয়। ২০২১ সালে মাত্র ১৫ শতাংশ এবং পরের দুই বছর অর্ধেক দিলে খেলাপিমুক্ত রাখা হয়েছে। সর্বশেষ ২০২২ সালে ঋণ পুনঃতপশিলের নীতিমালায় ব্যাপক শিথিলতা আনা হয়েছে। ২০১৩ সাল থেকে কখনও বিশেষ ব্যবস্থায় ঋণ পুনঃতপশিল, কখনও ২ শতাংশ ডাউনপেমন্ট দিয়ে ১২ বছরের জন্য নিয়মিত করা এবং কখনও ৫০০ কোটি টাকার বেশি ঋণ পুনর্গঠন করা হয়েছে। এসব ছাপিয়ে ২০১৯ সালে এক নির্দেশনার মাধ্যমে মেয়াদি ঋণ খেলাপি করার অভিনব নিয়ম করা হয়। মেয়াদি ঋণ মেয়াদোত্তীর্ণ করার সময় এক বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়। এভাবে ঋণ পরিশোধ না করার নতুন একটি গোষ্ঠী তৈরি হয়েছে। যে কারণে এত সুবিধার পরও গত ডিসেম্বর শেষে খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকা। আর অনাদায়ী, তবে নানা উপায়ে নিয়মিত দেখানো হচ্ছে– এ রকম ‘চাপযুক্ত’ ঋণের পরিমাণ সাড়ে ৪ লাখ কোটি টাকার মতো।

বেসরকারি এনসিসি ও মেঘনা ব্যাংকের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ নূরুল আমিন বলেন, বাংলাদেশের মূল্যস্ফীতি বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ‘কস্ট-পুশ’ তথা পণ্যের দর বৃদ্ধিজনিত কারণে ঘটে। এখানকার কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি, এমনকি খাদ্যপণ্যের বড় অংশ আমদানি করে চাহিদা মেটানো হয়। ফলে ডলারের দর ও সুদহার বাড়লে মূল্যস্ফীতি বাড়বে– এটাই বাস্তবতা। তিনি বলেন, সুদহার বা ডলারের দর ধরে রাখা কখনোই ভালো কোনো সিদ্ধান্ত ছিল না। সুদহারে একবার নয়ছয় করল। সেখান থেকে স্মার্ট করে এখন আবার বাজারের ওপর ছাড়া হলো। অর্থনীতির ভালো সময়ে ডলারের দর দীর্ঘদিন ধরে ৮৪ টাকায় আটকে রাখা হয়েছিল। খারাপ সময় শুরুর পর এক লাফে ১১০ টাকায় উঠে গেল। এখন আরও বেড়ে আনুষ্ঠানিক দর ১১৭ থেকে ১১৮ টাকা। এভাবে ডলারের দর আটকানো বা সুদহার ধরে না রাখলে অর্থনীতিতে আজকের এ অবস্থা হতো না। নূরুল আমিন আরও বলেন, আমরা ভালো সময়ে সামনের প্রস্তুতি না নিয়ে বরং উদার হয়েছি। অর্থনীতির খারাপ সময়ে এখন কঠোর সিদ্ধান্তের কারণে মূল্যস্ফীতি আরও বাড়বে।

বেসরকারি একটি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বলেন, ২০১৯ সালে করোনা বা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের মতো কোনো সমস্যা ছিল না। অথচ ব্যবসায়ীদের খুশি করতে একেবারে মেয়াদি ঋণ খেলাপি করার সময় এক বছর বাড়িয়ে দেওয়া হয়। ব্যাংকারদের বিরোধিতার পরও করোনা, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে একের পর এক সুবিধা দেওয়া হয়। এখন হঠাৎ করে কঠোরতার কথা বলা হচ্ছে। কঠোর নীতি যদিও সবার জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য হচ্ছে না। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে বেনামি ঋণ নিয়ে যারা পুরোনো দায় সমন্বয় করছে, তাদের জন্য কঠোর না হলে প্রকৃত ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।

হাতে টাকা রাখার প্রবণতা বাড়ছে

ব্যাংকগুলো খারাপ অবস্থায় আনার পেছনে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে সম্প্রতি হঠাৎ করে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নেয় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার এবং নীতি-উপদেষ্টা আবু ফরাহ মো. নাছের গত মার্চ ও এপ্রিলে একে একে ১০ ব্যাংকের চেয়ারম্যান-এমডিকে গোপনে ডেকে কে কার সঙ্গে একীভূত হতে হবে, তা ঠিক করে দেন। এ নিয়ে ব্যাংকগুলোতে চরম অসন্তোষ দেখা দেয়। আমানতকারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় অনেকে ব্যাংক থেকে টাকা তুলে নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ ব্যাংক সর্বশেষ গত ১১ এপ্রিল ব্যাংকের বাইরে কী পরিমাণ টাকা আছে, তার হিসাব প্রকাশ করেছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, প্রচলনে থাকা টাকার পরিমাণ দ্রুত বেড়ে গত ১১ এপ্রিল ৩ লাখ ৫ হাজার ২০০ কোটি টাকায় ঠেকেছে। গত মার্চ শেষে যা ২ লাখ ৮৮ হাজার ৫৩৮ কোটি টাকা ছিল। গত ডিসেম্বর শেষে যা ছিল ২ লাখ ৭৭ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা। গত রমজানের ঈদের পর টাকা তোলার প্রবণতা আরও বেড়েছে। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে টাকা তোলার চাপের কারণে চরম তারল্য সংকট তৈরি হয়েছে। আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক এখন আর আমানতকারীর টাকা ফেরত দিতে পারছে না। পদ্মা ব্যাংক আংশিক টাকা দিচ্ছে। বেসিক ব্যাংক থেকে কয়েক দিনে আমানতকারীরা আড়াই হাজার কোটি টাকা তুলে নিয়েছেন।

samakal

Exit mobile version