Site icon The Bangladesh Chronicle

অনাদায়ী ব্যাংক লোন

বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের শতাধিক সরকারি ও বেসরকারি ব্যাংকের হাজারো শাখা থেকে বড় আকারের গ্রুপ অব ইণ্ড্রাস্ট্রিজ থেকে শুরু করে একেবারে ছোট পরিসরে ব্যবসায়ী কিংবা উদ্যোক্তাদের ব্যাংক থেকে নির্বিচারে ঋন গ্রহণের প্রবণতা এবং হার ভয়ঙ্কর আকারে পৌছে গিয়েছে। ২০১৮-১৯ অর্থ বছরের শেষ হিসেব মতে, আমাদের দেশে সব ব্যাংকের সামগ্রিক মন্দ ঋনের স্থিতি্র পরিমাণ আনুমানিক ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা বা তার কাছাকাছি। যার ৭০% পর্যন্ত আদৌ ভবিষ্যতে কোন দিন পরিশোধ হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ঠ সন্দেহের অবকাশ থেকেই যাচ্ছে।

বিশেষ করে রাজনৈতিক প্রভাব এবং অনৈতিক আর্থিক লেনদেনের মাধম্যে কিম্বা দেশের প্রচলিত ব্যাংকিং আইনের দূর্বলতাকে কাজে লাগিয়ে এভাবে ব্যাংকে থাকা দেশ ও জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট করে সফল শিল্পপতি কিম্বা দক্ষ উদ্যোক্তার নাটক করা তো চরম অমানবিক এবং দেশদ্রোহীতার সামিল নয় কী?

উদাহরণ হিসেবে এখানে প্রকাশ যোগ্য যে, আমাদের দেশের এমন একটি গ্রুপ অব ইন্ড্রস্ট্রিজ রয়েছে, তারা বিগত চল্লিশ বছর ধরে দেশে ব্যবসা করে গেলেও কাগজে কলমে তাদের মোট সম্পদের পরিমাণ ৬,৮০০ কোটি টাকা দেখানো হয়েছে। অথচ এই সম্পদের বিপরিতে এদের ঋনের পরিমাণ ১৪,০০০ কোটি টাকার সীমাকে অনেক আগেই ছাড়িয়ে গেছে। তার মানে বিভিন্ন অপকৌশলে এবং ব্যাংকিং আইনের দূর্বলতাকে অনৈতিকভাবে কাজে লাগিয়ে ব্যবসার নামে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে বিদেশে ইতোমধ্যেই পাচার করে ফেলেছে এসব বহুরুপী ব্যবসায়ীরা। অর্থ্যাৎ এখন এই ঋনগ্রস্থ গ্রুপ অব ইণ্ড্রাস্ট্রিজ তার ব্যবসা যতই গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় করে দেখাক না কেন ব্যাংকের ঋন আর কোন দিন পরিশোধ করার মতো আর্থিক সক্ষমতা অর্জন করবে কিনা সন্দেহ। আর আমাদের দেশে এ রকম বড় আকারের গ্রুপ অব ইণ্ড্রাস্ট্রিজ থেকে শুরু করে একেবারে ছোট আকারের ঋনগ্রস্থ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা এখন ভয়াবহভাবে বৃদ্ধি পেয়ে বিশ হাজারের সীমাকে অনেক অতিক্রম করে ফেলেছে।

তবে হ্যাঁ শত নেতিবাচকতার মধ্যেও আমাদের দেশে এখনো কিন্তু শতাধিক গ্রুপ অব ইণ্ড্রাস্ট্রিজ হাজারো দক্ষ উদ্যোক্তা কিংবা ব্যাবসায়ী রয়েছেন, যারা অত্যন্ত দক্ষতা ও সততার সাথে নিজ ব্যাবসা পরিচালনা করে যাচ্ছেন এবং প্রয়োজনের তাগিদে ব্যাংক থেকে ঋন নিচ্ছেন এবং তা সময় মতো পরিশোধ করে দেশ জাতির কল্যানে কিংবা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছেন। আর তাদের এই অক্লান্ত পরিশ্রম এবং মেধার কল্যানে দেশ আজ বিশ্বের বুকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অগ্রসরমান উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ৮% জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

©সিরাজুর রহমান (সহকারী শিক্ষক ও লেখক, নাটোর)
#DEFRES+

No photo description available.
Source: https://www.facebook.com/1766281370346886/posts/2178479115793774/
Exit mobile version