Site icon The Bangladesh Chronicle

অক্টোবরেই ফয়সালা চায় বিএনপি

 

সরকারের পদত্যাগের এক দফার আন্দোলনে অক্টোবরেই একটা চূড়ান্ত দফারফায় পৌঁছাতে চায় বিএনপি। সেই লক্ষ্য থেকে দলটি ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ, ঘেরাও ও অবরোধের মতো কর্মসূচি চিন্তায় রেখেছে। আর সরকার ও আওয়ামী লীগ যেকোনো মূল্যে যথাসময়ে নির্বাচন করার অবস্থানে থেকে প্রশাসনিক ও রাজনৈতিক শক্তি নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা নিয়েছে।

কোনো পক্ষ থেকেই ছাড় দেওয়ার কোনো ইঙ্গিত নেই; বরং অক্টোবর মাসেই রাজধানীর রাজপথ নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার চিন্তা থেকে কর্মসূচি সাজাচ্ছে বিরোধী দল বিএনপি। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক চাপ থাকলেও আওয়ামী লীগ ঢাকার মাঠের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে পাল্টা কৌশল ঠিক করার কথা বলছে।

আগামী বছরের জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও নভেম্বরের শুরুতে তফসিল ঘোষণা করার কথা বলেছে নির্বাচন কমিশন। এর আগের মাস অক্টোবরে মাঠে ধারাবাহিক কর্মসূচি দিয়ে সরকারের ওপর চাপ তৈরির চেষ্টা করবে বিএনপি।

৫ অক্টোবর কুমিল্লা থেকে চট্টগ্রাম অঞ্চলে রোডমার্চ করে বিএনপি তাদের এই ধাপের কর্মসূচি শেষ করবে। সেদিনই ওই রোডমার্চ থেকে দলটি নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করবে।

তবে অক্টোবরের কোন দিন কী কর্মসূচি হবে, তা এখনো ঠিক হয়নি। কয়েক দিনের মধ্যে যুগপৎ আন্দোলনে শরিক দল ও জোটের সঙ্গে আলোচনা করে কর্মসূচি চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।

বিএনপির একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, অক্টোবরের কর্মসূচির বিষয়ে দলে নানা ধরনের প্রস্তাব এসেছে। এর মধ্যে সরকারের পদত্যাগের ‘এক দফা’ দাবিতে ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ, মহাসমাবেশ, সচিবালয় ঘেরাও, অবরোধ বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় অভিমুখে পদযাত্রা উল্লেখযোগ্য। এখন পর্যন্ত কর্মসূচি চূড়ান্ত না হলেও এবারের কর্মসূচিগুলো আগের চেয়ে কঠোর হবে।

দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা বলছেন, অক্টোবরের কর্মসূচি ঘিরে সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কী ভূমিকা নেয়, সেটি তাঁরা দেখবেন। তাঁরা মনে করছেন, যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা নীতি কার্যকরের ঘোষণার প্রেক্ষাপটে সরকারি দল ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিরোধীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন-কর্মসূচিতে বড় ধরনের বাধার সৃষ্টি করবে না। এই সুযোগ নিয়ে ঢাকায় শান্তিপূর্ণ ‘গণ-অভ্যুত্থান’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চায় বিএনপি।

কিন্তু কর্মসূচিতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও সরকারি দলের দিক থেকে যদি বাধা, হামলা ও প্রাণহানির মতো ঘটনার সূত্রপাত হয়, তখন দলটির পক্ষ থেকে দেশের গণতন্ত্রকামী সব পক্ষ ও আন্তর্জাতিক বিশ্বের কাছে সহযোগিতা চাওয়া হবে। দলটির নেতারা মনে করেন, রাজপথে এমন প্রেক্ষাপট সৃষ্টি হলে সরকার আরও চাপে পড়বে।

বাংলাদেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে জাতীয় নির্বাচন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে গত ২৪ মে যুক্তরাষ্ট্রের নতুন ভিসা নীতি ঘোষণা করা হয়। এর ঘোষণায় বলা হয়েছিল, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক নির্বাচনপ্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করার জন্য দায়ী বা জড়িত বাংলাদেশিদের ভিসা দেবে না দেশটি। এর প্রায় চার মাস পর ২২ সেপ্টেম্বর ওই ভিসা নীতি কার্যকরের পদক্ষেপ নেওয়া শুরুর কথা জানায় যুক্তরাষ্ট্র। এখন বিএনপির নীতিনির্ধারকেরা এক দফার চূড়ান্ত আন্দোলনে এই সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন, যা অক্টোবর থেকে শুরুর চিন্তা।

নির্বাচন সামনে রেখে এই অক্টোবর থেকে শুরু হবে সরকারবিরোধী টানা আন্দোলন-কর্মসূচির চূড়ান্ত পর্ব। এই মুহূর্তে রাজধানী ঢাকা ঘিরে সমাবেশ, পেশাজীবী সম্মেলন ও অঞ্চলভিত্তিক রোডমার্চ কর্মসূচি চলছে। ১৯ সেপ্টেম্বর শুরু হওয়া ১৫ দিনের এ কর্মসূচি ৫ অক্টোবর কুমিল্লা-ফেনী-মিরসরাই হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত রোডমার্চের মধ্য দিয়ে শেষ হবে। চট্টগ্রামে রোডমার্চ শেষে সমাবেশ থেকে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হতে পারে।

 

 

 

 

Exit mobile version