Site icon The Bangladesh Chronicle

আসছে আগামী বছর রাখাইনে ভারত-মিয়ানমার যৌথ বন্দর কার্যক্রম শুরু

 
লাইটহাউজ নিউজ ক্লাব
প্রকাশিত অক্টোবর ১২, ২০২০

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাখাইনে সিত্তি বন্দর প্রকল্পের কাজ এগিয়ে নিতে সম্মত হয়েছে ভারত ও মিয়ানমার। ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটির আনুমানিক মোট ব্যয় প্রায় ৪৮ কোটি মার্কিন ডলার। মিয়ানমার বিষয়ক সংবাদমাধ্যম ইরাবতীর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আগামী বছরেই যৌথ বন্দর কার্যক্রম শুরু হবে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে দুই দেশের পণ্য আনা নেওয়ায় যে পরিমাণ সময় লাগে তা কমে যাবে। একইসঙ্গে ভারতের পক্ষে বঙ্গোপসাগর ও মিয়ানমারের অভ্যন্তরে চীনা প্রভাব মোকাবিলা সম্ভব হবে।

ভারতের সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে এবং পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল গত রবি ও সোমবার মিয়ানমার সফর করেন। ওই সফরে ভারতীয় কর্মকর্তারা মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় উপদেষ্টা অং সান সু চি, প্রতিরক্ষা সার্ভিসের কমান্ডার ইন চিফ সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লাং এবং অন্যান্য উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, অং সান সু চির সঙ্গে বৈঠকে ২০২১ সালের প্রথম তিন মাসের মধ্যে রাখাইন রাজ্যের সিত্তি বন্দর পরিচালনা শুরুর কাজ এগিয়ে নিতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। দিল্লির সহায়তায় চলমান ত্রিপক্ষীয় মহাসড়কসহ বেশ কয়েকটি অবকাঠামো প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়েও মিয়ানমার ও ভারতের আলোচনা হয়েছে বলেও জানানো হয় ওই বিবৃতিতে।

২০০৮ সালে মিয়ানমারে স্বাক্ষরিত একটি কাঠামোগত চুক্তি অনুযায়ী কালাদান প্রকল্পটি সিত্তি বন্দরকে কালাদান নদীর মাধ্যমে পালেতোয়ার সঙ্গে যুক্ত করবে এবং পালেতোয়ার সঙ্গে সড়ক পথে যুক্ত হবে মিজোরাম রাজ্যের রাজধানী আইজাওয়াল। প্রকল্পটির অধীনে রয়েছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে কালাদান নদীতে ১৫৮ কিলোমিটার নদীপথ এবং মিজোরাম রাজ্যের ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত সংলগ্ন ১০৯ কিলোমিটারের পালেতোয়া থেকে জরিনপুই পর্যন্ত সড়কপথ।

প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কলকাতা থেকে সিত্তির ভ্রমণ দূরত্ব কমে যাবে প্রায় এক হাজার ৩২৮ কিলোমিটার। ফলে বর্তমানে ‘চিকেন নেক’ নামে পরিচিত সিলিগুড়ি করিডোর ব্যবহার করে বন্দর দুটিতে পণ্য আনা নেওয়া করতে যে তিন-চার দিন সময় লেগে যায় তা কমে যাবে।

দিল্লির কৌশলগত লক্ষ্য সিত্তি বন্দর ঘিরে একটি বিশেষ অর্থনৈতিক এলাকা নির্মাণ। আর এতে রাখাইনে ভারতের প্রভাব অটুট থাকবে এবং বঙ্গোপসাগরে তাদের উপস্থিতি জোরালো হবে। এছাড়া সিত্তি বন্দরের মাধ্যমে রাখাইনে চীনা অর্থায়নে বাস্তবায়িত কিয়াকফিউ বন্দরের প্রভাব মোকাবিলা করতে চায় ভারত। চীনের কৌশলগত প্রকল্প বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অধীনে রাখাইনে ওই বন্দরটিতে অর্থায়ন করেছে বেইজিং।

ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলের সঙ্গে মিয়ানমারের প্রায় এক হাজার ৬২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত রয়েছে। এছাড়া ভূতাত্ত্বিক অবস্থানের কারণে ভারতের পূর্বাঞ্চল সক্রিয় নীতিতে মিয়ানমারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

Exit mobile version