Site icon The Bangladesh Chronicle

রাজনীতি আমার পেশা নয়: মাশরাফি

লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। ছবি: প্রথম আলো‘রাজনীতি আমার পেশা নয়। রাজনীতি কখনো পেশা হতে পারে না। রাজনীতি মানুষের সেবার জন্য, উপকারের জন্য। আমার পেশা খেলা, রাজনীতি নেশা। পেশা দিয়ে আয় করতে হয়। খেলার অর্থ দিয়ে আমার সংসার চলে। তাই পায়ে ব্যথা থাকলেও আমি খেলি। সে জন্য খেলা ছাড়ি না। খেলা শেষে ব্যবসা করব। রাজনীতি দিয়ে উপার্জনের কোনো চিন্তা আমার নেই।’

বুধবার নড়াইলের লোহাগড়ায় আওয়ামী লীগের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় এসব কথা বলেন নড়াইল-২ (লোহাগড়া-নড়াইলের একাংশ) আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মুর্তজা। লোহাগড়া কমিউনিটি সেন্টারে বিকেল সাড়ে পাঁচটা থেকে এ মতবিনিময় শুরু হয়।

চার ঘণ্টা ধরে তৃণমূল নেতাদের বক্তব্য শেষে রাত সাড়ে নয়টায় মাশরাফি বক্তব্য দেন। বেশির ভাগ তৃণমূল নেতা তাঁদের বক্তব্যে এলাকার রাস্তা, সেতু, কালভার্ট, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠ উন্নয়নের দাবি তুলে ধরেন। কেউ কেউ মাদক ও দুর্নীতি প্রতিরোধেরও দাবি তোলেন।

মাশরাফি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘অনেকেই বলছেন এক বছর হয়ে গেল সংসদ সদস্য হয়েছি, তারপরও খেলা ছাড়ছি না। এলাকায় থাকছি না। আপনাদের কাছে প্রশ্ন, আপনারা কি আমাকে এলাকায় দেখতে চান? নাকি উন্নয়ন চান? আমি এলাকার উন্নয়ন নিয়ে দৌড়াচ্ছি। নড়াইলের উন্নয়ন আমাকে শূন্য থেকে শুরু করতে হচ্ছে। এখন বিভিন্ন প্রকল্প তৈরি করা হচ্ছে। এগুলো প্রক্রিয়া হয়ে কাজ শুরু হতে দেরি হয়। এখন আমি এলাকার জন্য সচিবালয়ে দৌড়াচ্ছি, এর ফল পাবেন দুই-তিন বছরের মধ্যে।’

মাশরাফি সবার উদ্দেশে প্রশ্ন করে বলেন, ‘গত এক বছরে আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ আছে? সত্যি করে বলেন। এটা আপনাদের কাছ থেকে সরাসরি জানা দরকার।’ এ সময়ে উপস্থিত সবাই হাত তুলে বলেন, ‘না’ ‘না’।

মাশরাফি বলেন, ‘রাজনীতিতে আমার নিজস্ব লোক নেই। আমি তৈরিও করতে চাই না। আমি সবার, আমি উন্মুক্ত, সবাই আমার আপন। যেকেউ কোনোভাবে বঞ্চিত হলে আমার কাছে সরাসরি বলবেন, দেখবেন ব্যবস্থা হচ্ছে। আমার কোনো ভুল থাকলে সরাসরি বলবেন, শুধরে দেবেন। আমি খুশি হব। আওয়ামী লীগের কোনো কমিটি নিয়ে আমি কথা বলি না। আমি আছি উন্নয়ন নিয়ে, মানুষের সেবা নিয়ে। এটি নিয়েই থাকতে চাই।’

এ সময় মাশরাফি তাঁর মুঠোফোন নম্বর সবাইকে বলে দেন এবং যেকোনো ব্যাপারে ফোন দেওয়ার আহ্বান জানান।

মাদকের বিষয়ে মাশরাফি বলেন, ‘মাদকের সঙ্গে জড়িতরা কি রাজনীতিকদের চেয়েও শক্তিশালী। মাদক বন্ধ হচ্ছে না কেন? তাহলে আমরা প্রশ্রয় দিচ্ছি, ইন্ধন দিচ্ছি। এই সমাজের মানুষই তো মাদকের সঙ্গে জড়িত। তাঁদের ধরে কেন পুলিশে দিচ্ছেন না? নিজের মনের উন্নয়ন সবচেয়ে জরুরি। নিজে সংশোধন হই, সব ঠিক হয়ে যাবে।’

মতবিনিময় সভায় সব ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা ও পৌর আওয়ামী লীগের নেতা, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুন্সী আলাউদ্দিন। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেনের সঞ্চালনায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকেরা বক্তব্য দেন।

এ ছাড়া বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য ফজলুর রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন খান, উপজেলা চেয়ারম্যান এস এম এ হান্নান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মশিয়ূর রহমান প্রমুখ।

Source: Prothom Alo

Exit mobile version