Site icon The Bangladesh Chronicle

পুলিশি হেফাজতে তরুণের মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

পুলিশি হেফাজতে তরুণের মৃত্যু, নির্যাতনের অভিযোগ পরিবারের

প্রতিনিধি, নরসিংদী   ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৯

নরসিংদীপুলিশের হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গত রোববার সন্ধ্যায় গ্রেপ্তারের পর ওই তরুণ আজ বুধবার মারা যান।

নিহত তরুণের নাম শের খান মিয়া (২৩)। তিনি নরসিংদীর পলাশ উপজেলার পাঁচভাগ গ্রামের খোরশেদ আলমের ছেলে। শের খান মাছের ব্যবসা করতেন।

শের খানের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন, পুলিশের নির্যাতনের কারণে শের খান মারা গেছেন। তবে পুলিশ বলছে, গ্রেপ্তারের পর থানায় নেওয়ার পথে শের খান চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। এতে পড়ে গিয়ে তিনি আহত হন। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়েছে। তাঁকে কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। শের খান চি‎হ্নিত মাদক ব্যবসায়ী। তাঁর বিরুদ্ধে ৩টি ডাকাতিসহ ৪টি মামলা রয়েছে।

শের খানের বড় ভাই ফারুক মিয়া অভিযোগ করে বলেন, রোববার সন্ধ্যায় পলাশ থানার উপপরিদর্শক ইফতেখার আহমেদের নেতৃত্বে ছয় পুলিশ সদস্যের একটি দল বরাব বাজার আসে। তারা শের খানকে গ্রেপ্তার করে। এরপর মোটরসাইকেলে থানায় নেওয়ার সময় শের খান লাফ দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশ সদস্যরা তাঁকে বেদম মারধর করেন। এরপর তাঁকে থানায় নেওয়া হয়। পরে রাতে পুলিশ পরিবারকে জানায়, শের খানের কাছে ইয়াবা বড়ি পাওয়া গেছে।

পরিবারের সদস্যার জানান, ওই রাতে তাঁরা থানায় শের খানকে দেখতে গিয়েছিলেন। সেখানে পুলিশ হেফাজতে অসুস্থ অবস্থায় শের খানকে পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছিল। পুলিশ সে সময় জানিয়েছিল, শের খান অসুস্থ, তাই ঘুমের ওষুধ দেওয়া হয়েছে। সেই রাতে শের খানের চেতনা ফিরে না আসায় পরিবারের লোকজন কান্নাকাটি শুরু করেন। এরপর সকালে তাঁকে অচেতন অবস্থায় পলাশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। কর্তব্যরত চিকিৎসক শের খানকে নরসিংদী সদর হাসপাতালে পাঠান। সেখান থেকে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।

ফারুক মিয়া বলেন, পাঁচ বছর আগে পুলিশ সন্দেহভাজন হিসেবে শের খানকে ডাকাতির মামলায় জড়িয়েছিল। তবে সেই মামলা নিষ্পত্তি হয়ে গেছে। শের খানের বিরুদ্ধে আর কোনো মামলা নেই। তিনি বলেন, ‘পুলিশের বেদম মারপিটের কারণে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হয়েছে।’

ফারুক মিয়া দাবি করেন, ‘পুলিশের দেওয়া সাদা কাগজে স্বাক্ষর না করায় আমাদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়নি।’

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মো. নাসির উদ্দিন বলেন, আসামি শের খানকে গ্রেপ্তার করে থানায় নেওয়ার সময় মোটরসাইকেল থেকে লাফিয়ে পড়ে পালানোর চেষ্টা করেন। এতে দুই পুলিশসহ শের খান আহত হন। পুলিশ হেফাজতে তাঁকে কোনো প্রকার মারধর করা হয়নি। শের খানের লাশ ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে রয়েছে। আইনিপ্রক্রিয়া শেষে তা স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হবে।

Exit mobile version