Site icon The Bangladesh Chronicle

ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল খুনের ঘটনায় ৫২ জনকে আসামি করে পুলিশের অভিযোগপত্র

ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেল খুনের ঘটনায় ৫২ জনকে আসামি করে পুলিশের অভিযোগপত্র

নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম
১৯ নভেম্বর ২০১৯

মহিউদ্দিন সোহেলআধিপত্য বিস্তার ও পূর্ববিরোধের জেরে ১০ মাস আগে চট্টগ্রামে ছাত্রলীগ নেতা মহিউদ্দিন সোহেলকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়। হত্যার আগে মাইকে ছিনতাইকারী এসেছে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করেন হত্যাকাণ্ডে অংশগ্রহণকারীরা। আজ মঙ্গলবার বিকেলে চট্টগ্রাম আদালতে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রে এসব তথ্য উঠে এসেছে।

অভিযোগপত্রে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১২ নম্বর সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাবের আহম্মদ সওদাগর ও নগর জাতীয় পার্টির সহসভাপতি ওসমান খানসহ ৫২ জনকে আসামি করেছে পুলিশ। নিহত মহিউদ্দিন ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপশিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক ছিলেন।

অভিযোগপত্র জমা দেওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে ডবলমুরিং থানার পরিদর্শক (তদন্ত) জহির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পূর্ববিরোধের জেরে এলাকায় আধিপত্য বজায় রাখতে মহিউদ্দিনকে খুন করা হয়। অভিযোগপত্রে ৫২ জনকে আসামি করা হয়েছে।

গত ৭ জানুয়ারি চট্টগ্রামের পাহাড়তলী রেলওয়ে বাজারে মহিউদ্দিন সোহেলকে খুন করা হয়। তাঁর ছোট ভাই শাকিরুল ইসলাম বাদী হয়ে পরদিন রাতে নগরের ডবলমুরিং থানায় মামলা করেন। মামলায় কাউন্সিলর সাবেরসহ ২৭ জনকে আসামি করা হয়। এরপর মামলার তদন্ত শুরু করে ডবলমুরিং থানার পুলিশ।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ঘটনার দিন সকালে ওসমান খানের নেতৃত্বে পাহাড়তলী বাজারে মহিউদ্দিন সোহেলের অফিসের বিদ্যুৎ-সংযোগ বন্ধ করে দেন আসামি সেলিম মাঝি ও জামাল মাঝি। মহিউদ্দিন তাঁর সহযোগী মো. লিটন ও শাহাজাহানকে নিয়ে পাওয়ার হাউসে যান। সেখানে ওসমান, বাবু, জুয়েল, রুহুল আমিন, রাসেল, টেডি দিদারের সঙ্গে কথা-কাটাকাটি হয়। তাঁদের মধে৵ টেডি দিদার আওয়ামী লীগের কর্মী হিসেবে পরিচিত। বাকিরা বিএনপির কর্মী। কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে ধস্তাধস্তিতে মাথায় আঘাত পান ওসমান ও মহিউদ্দিন। মহিউদ্দিন তাঁর অফিসে চলে গেলেও ওসমান রক্তাক্ত অবস্থায় বাজারে ঘুরতে থাকেন। এ সময় তিনি মাইকে বলতে থাকেন, বাজারে ছিনতাইকারী এসেছে। যার যা আছে তা নিয়ে রাস্তায় নেমে আস। ব্যবসায়ীদের দোকানপাট বন্ধ করে রাস্তায় নেমে আসার আহ্বানও জানান তিনি। কয়েক শ লোক জড়ো হলে মহিউদ্দিনের অফিসটি ভাঙচুর করা হয়। পরে ছুরি, কাচের বোতল, ইট, কাঠের স্ট্যাম্প, খুন্তি ও লোহার রড দিয়ে মহিউদ্দিনকে বেধড়ক পেটানো হয়। রক্তাক্ত অবস্থায় মহিউদ্দিন রাস্তায় পড়ে থাকলে রাসেল মির্জা, সেলিম মাঝি, জামাল মাঝি, রশিদ মাঝি মিলে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বাজারের দিকে নিয়ে যান। পরে পেট্রল ঢেলে মহিউদ্দিনের অফিসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।

জামিনে থাকা এই মামলার আসামি সরাইপাড়া ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক সাবের আহম্মদ আজ সন্ধ্যায় মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তিনি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে।

মামলার বাদী ও নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই শাকিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ যে অভিযোগপত্র দিয়েছে, তাতে তারা সন্তুষ্ট। আসামিদের দ্রুত বিচার শুরু করার দাবি জানান তিনি।

Exit mobile version