European Union disappointed with ICT’s asymetry

eurepian-parliament

আসামিপক্ষের সাক্ষী অপরহণ এবং বিচারক-রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী-সরকারের যোগসাজশসহ আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের (আইসিটি) বিভিন্ন অনিয়মের নিন্দা জানিয়েছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট।

যে কোনো মামলায় এবং পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে কঠোর বিরোধিতার বিষয়টিও পুনর্ব্যক্ত করেছে তারা।

বাংলাদেশের পরিস্থিতির ওপর ইউরোপিয়ান পার্লমেন্টের এক রেজ্যুলেশনে এই অবস্থানের কথা জানানো হয়।

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়কে ঘিরে বাংলাদেশে সম্প্রতি ছড়িয়ে পড়া সহিংসতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট। সাম্প্রতিক হতাহতের ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে তারা।

সহিংসতায় নিহত ও আহতদের আত্মীয়-স্বজন এবং পরিচিতজনদের প্রতিও সমবেদনা জানিয়েছে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট।

১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় সংঘটিত অপরাধের ঘটনায় বিভক্তি দূর, ন্যায়বিচার ও জবাবদিহিতার বিষয়টি ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট স্বীকার করে; এ ঘটনায় আইসিটির ভূমিকার প্রতি গুরুত্বারোপ করে।

যে কোনো মামলায় এবং যে কোনো পরিস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড প্রদানের তীব্র বিরোধিতার বিষয়টি পুনর্ব্যক্ত করে ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট।

রেজ্যুলেশেনে ২০১২ সালে কোনো মৃত্যুদণ্ড কার্যকর না করার ধারায় ইতিবাচক অগ্রগতি প্রতিষ্ঠায় সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের রায় লঘু করা এবং মৃত্যুদণ্ড বিলোপের প্রথম ধাপ হিসেবে ঘোষিত সব মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ওপর দাপ্তরিক স্থগিতাদেশের উদ্যোগ নেয়ার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহ্বান জানায়।

ভয়ভীতি প্রদর্শন, হয়রানি ও সাক্ষী অপহরণ, দালিলিকভাকে প্রমাণিত বিচারক, রাষ্ট্রপক্ষ এবং সরকারের মধ্যে অবৈধ সহযোগিতার সম্পর্কের অভিযোগসহ আইসিটির কার্যক্রমের অনিয়মের নিন্দা জানায় ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট। একইসাথে বিশেষ করে সাক্ষীদের সুরক্ষা নিশ্চিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরো পদক্ষেপের ওপর জোর দেয়া হয়।

রেজ্যুলেশনে আইসিটির কার্যক্রমে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিচারিক মানদণ্ডের কঠোর অনুসরণের বিষয়টি নিশ্চিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। ভিকটিমের সুরক্ষা, সত্য, ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণের অধিকারের পাশাপাশি অবাধ, নিরপেক্ষ ও স্বচ্ছ বিচার নিশ্চিতের ওপরও এতে জোর দেয়া হয়।

আইনের শাসন ও শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা দ্বিগুণ করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানোর পাশপাশি মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি পূরণের বিষয়টিও সরকারকে স্মরণ করিয়ে দেয় ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট।

আইসিটির রায়কে ঘিরে আইনশৃঙ্খা বাহিনীর সদস্য ও রায়ের সমর্থক, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং সাধারণ মানুষের বিরুদ্ধে জামায়াত সমর্থক এবং এর সাহায্যপুষ্ট সংগঠগুলোর নির্বিচার সহিংসতারও তীব্র নিন্দা জানায় ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট।

রেজ্যুলেশনে বড় ধরনের হতাহতের ঘটনায় উদ্বিগ প্রকাশ করা হয়। নিরাপত্তা বাহিনীকে সর্বোচ্চ নিবৃত্ত থাকার বাধ্যবাধকতা পালন ও প্রাণঘাতী শক্তিপ্রয়োগ পরিহার এবং প্রতিবাদ বিক্ষোভে প্রত্যেকটি নিহতের ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তে সুস্পষ্ট নির্দেশনা দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

এতে সব নির্যাতন ও দুর্ব্যবহারের অভিযোগের নিরপেক্ষ তদন্ত ও দোষীদের আইনের আওতায় আনার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।

নতুন করে সহিংসতা এড়ানোর জন্য রাজনৈতিক উত্তেজনা প্রশমনে সব রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানায় ইউরোপিয়ান পার্লামেন্ট। পাশাপাশি সমর্থকদের কোনো ধরনের সহিংসতায় না জড়ানোর নির্দেশনা প্রদান এবং সব রাজনৈতিক দলকে সংলাপে বসারও আহ্বান জানানো হয়।

রেজ্যুলেশনে সহিংসতায় বিরোধীদের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দেয়ার উস্কানি প্রদান থেকে বিরত থাকতে গণমাধ্যমের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। হয়রানি, ভীতিপ্রদর্শন, আটক ও নির্যাতন করা থেকে বিরত থেকে সাংবাদিক ও সম্পাদকদের শান্তিপূর্ণভাবে মতপ্রকাশের সুযোগ দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানায় ইইউ।

Source: NewsEvent24