Dear sisters; castration is not the solution for rape

Minar Rashid

কর্তনে ধর্ষণের সমাধান নেই বোন

এক সাংবাদিক বোন ধর্ষণ প্রতিরোধে পুরুষাঙ্গ কর্তনে বের হওয়ার পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন। এই কর্তন কর্মটি pre অথবা post ধর্ষণ হবে – তা অবশ্য স্পষ্ট করেন নি। কারন ধর্ষকদের আলাদাভাবে চিহ্নিত না করে তিনি মোটামুটি সকল ‘লিঙ্গওয়ালাদের’ কেই টার্গেট করে ফেলেছেন। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বুশের মত যদি প্রি-এম্পটিভ যুদ্ধ শুরু করেন( শত্রু আক্রমণ করার আগেই তার শক্তি সামর্থ নিঃশেষ করে দেয়া) তবে তো আসলেই খবর আছে। সেই আতংকে আর চুপ করে থাকা সম্ভব হলো না।

আজকের এই ছুটির দিনটিতে নান্দনিক কিছু নিয়ে লিখব বলে মনস্থ করেছিলাম । একটা চমৎকার বিষয়ও অভিজ্ঞতা বা ভাবনায় চলে এসেছিল । গতকাল সন্ধায় আমাদের মেরিন কমিউনিটির বার্ষিক ডিনার পার্টিতে এটেন্ড করেছি। ঘুম থেকে উঠে সকাল থেকে মুডটিও যারপরনাই ভালো ছিল। ভাবলাম, আজকে আর খোঁচা মেরে কাউকে কিছু লিখব না।

সিঙ্গাপুরের হোটেল রি তে বাংলাদেশ মেরিনার কমিউনিটির বার্ষিক ডিনারটি বরাবরের মতই এবারও বেশ জাকজমকের সাথেই পালিত হয়েছে। মেরিন পেশাটি পৃথিবীর অন্যতম ব্যস্ততম পেশা । সিঙ্গাপুরের কাজের সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে তা আরও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অনেক ফেবু ফ্রেন্ড ও শুভাকাঙ্খী সালাম দেন,কুশল জিজ্ঞেস করেন । মাঝে মাঝে দেখি সেই সালাম ও কুশল জিজ্ঞাসা অনেক অনেক বাসি হয়ে পড়েছে । তাছাড়া ফেইসবুকে নিজের লেখাটি পোষ্ট করা ছাড়া অন্য কিছু করার সময় ও সুযোগ খুব একটা হয় না। এক্ষেত্রে ডিজিটাল জ্ঞান বা স্বাচ্ছন্দেরও কিছু সমস্যা রয়েছে । ফেইস বুকের টিচার নিজের ছেলেও আর বেশি কিছু শেখাতে চায় না। ওর মাকে বলে,” তুমি ভুল করেছো আব্বুকে কম্পিউটারে বাংলা টাইপ শিখিয়ে। আর আমি ভুল করেছি ফেইস বুক শিখিয়ে। ” কারন চরম ব্যস্ত এই পেশা থেকে ওদের প্রাপ্য ছুটির দিন বা ছুটির সময়ের অধিকাংশ বা পুরোটাই ব্যয় করি এই লেখালেখিতে। কাজেই ফ্যান বা বন্ধুরা তাদের ম্যাসেজে যথাযথ সাড়া দিতে না পারার আমার এই অপারগতাকে ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন বলে আশা করি।

প্রবাসে আসলে সবাই দারুন ব্যস্ত, বিশেষ করে কাজের দেশ সিঙ্গাপুরে। এত ব্যস্ততার মাঝেও উদ্যোক্তা মেরিনারদের কয়েকজন ডিনারের সাথে সাথে খুবই উপভোগ্য ও চমৎকার একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছেন। পুরো অনুষ্ঠানটি ছিল বেশ ছিমছাম, গোছানো। সকল ধরনের অপসংস্কৃতি,বাড়াবাড়ি বা অশ্লীলতামুক্ত। পাঁচ তারা বিদেশি হোটেলে ও বিদেশের মাটিতে শতভাগ দেশজ বিনোদন। পুরো অনুষ্ঠানটি দেখে উদ্যোক্তাদের মনন ও রুচির প্রশংসা না করে পারা যায় না।

‘ওরে ও নীল দরিয়া আমায় দেরে দে ছাড়িয়া……. এই গানটিকে মেরিনার সংগীত হিসাবে গণ্য করা হয়। এই গানটি নিয়ে সুব্রত,মান্নান ও আদনান ( সবাই চীফ ইঞ্জিনিয়ার এবং বর্তমানে অফিসে গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন) যখন মার্চেন্ট নেভির তরুণ ক্যাডেটের ইউনিফরম পরে মঞ্চে আসেন তখন পুরো হলটিতে ভিন্ন রকম পরিবেশের সৃষ্টি হয়। এই গানটি হলের প্রায় সবাইকে বিশ একুশ বছরে নিয়ে যায়। সেই গানের টানে হাফিজুল স্যার ,মোস্তাফিজ স্যার,সারওয়ার স্যার ( মার্চেন্ট নেভির ট্রাডিশন অনুযায়ী সিনিয়রদের আমরা ‘স্যার’ বলে সম্বোধন করি) সহ আরো অনেক সিনিয়র মঞ্চে উঠে সেই কোরাসে যোগ দেন।

একটি গান যেমন সকলকে একটি মঞ্চে টেনে নিতে পারে, একটি দেশ ও একটি মাটির টানও তেমনি প্রবলভাবে মানুষের উপর কাজ করে । ধর্মের টান ও সংস্কৃতির টান মানুষকে পশু থেকে সত্যিকার মানুষে রুপান্তর করে। মন ও মননের কোন জায়গায় যেমন শুধু সংস্কৃতি কাজ করে তেমনি কোন কোন জায়গায় শুধু ধর্ম কাজ করে।

কাজেই আধুনিকতার নামে, প্রগতির নামে কিংবা মুক্তচিন্তার নামে এই টানগুলি ছিড়ে ফেলে শুধু কর্তন দিয়ে এই ধর্ষণ সমস্যার সমাধান হবে না।