Bangladesh is a colossal test for India

Minar Rashid

বাংলাদেশ ইন্ডিয়ার জন্যে একটি অগ্নি পরীক্ষা

(দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত আমার আজকের কলাম)

ইন্ডিয়ার সামনে এখন সব চেয়ে বড় স্বপ্ন হলো জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসনটি লাভ করা। বর্তমান অবয়বে জন্মের পর থেকে অর্থাৎ ব্রিটিশের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর থেকেই এই স্বপ্নটি দেখে এসেছে ইন্ডিয়া। ইন্ডিয়ার সামনে এর চেয়ে বড় স্বপ্ন আর কিছু হতে পারে না।

নিরাপত্তা পরিষদে বর্তমানে যে পাঁচ জন স্থায়ী সদস্য রয়েছে তারা দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের বিজয়ী শক্তি হিসাবে এই মর্যাদা ও আরামের আসনটি সংরক্ষণ করে ফেলেছে । তাদেরকে এজন্যে বিশেষ কোন পরীক্ষায় বসতে হয় নি। অন্য কারো কাছ থেকে চরিত্রগত সনদ কিংবা অন্য কোন যোগ্যতার সনদ সংগ্রহ করতে হয় নি। কিন্তু ভবিষ্যতে যারা একই অবস্থানে আসতে খায়েশ প্রকাশ করবে তাদেরকে এই সব কঠিন ও জটিল পরীক্ষায় পাশ করেই আসতে হবে। এটাই নিয়ম। কারন ডায়নাকে বিয়ের আগে সতীত্বের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হয়েছিল। তবে একই বিয়ের জন্যে প্রিন্স চার্লসকে তেমন কোন পরীক্ষা দিতে হয় নি। ব্যাপারটা অনেকটা তেমনি।

জাতি সংঘের স্থায়ী সদস্য পেতে আগ্রহী প্রার্থীদের জন্যে প্রথম ধাপটি হলো সাধারন পরিষদে দুই তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতি ও সমর্থন অর্জন । এটি অর্জিত হলে পরের ধাপ টি হলো খোদ নিরাপত্তা পরিষদের সম্মতি।

এই শর্তগুলি যারপরনাই কঠিন। কারন নিরাপত্তা পরিষদে যারা আছেন তারা সর্বদা পরস্পর দুটি ব্লক বা মেরুতে অবস্থান করেন। পরস্পর মুখোমুখি এই দুটি পক্ষকে এক সঙ্গে সন্তুষ্ট করার কাজটি আসলেই কঠিন। কারন দুটি শর্তই বানানো হয়েছে যাতে নতুন করে কেউ এখানে ঢুকতে না পারে। তারপরেও যে কয়জন নাছোড়বান্দা চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তন্মধ্যে ইন্ডিয়া অন্যতম।

এই কঠিন কাজটির একটি বিশেষ অধ্যায় অতিক্রম করে ফেলেছে ইন্ডিয়া । নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য রাশিয়া ও চীনের সম্মতিটি আগে ভাগেই নিয়ে রেখেছে। গত ইন্ডিয়া সফরের সময় প্রেসিডেন্ট ওবামা নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী আসন পেতে ইন্ডিয়াকে সমর্থন জানাবে বলে অঙ্গীকার করে এসেছে। এখন ‘ওস্তাদের মাইর শেষ রাতে’ এমন ধরনের কিছু না ঘটলে ইন্ডিয়ার স্বপ্ন পূরণে নিরাপত্তা পরিষদের বাঁধা বা ঠেকটি আর রইল না।

বলা যায় ইন্ডিয়ার আজন্ম লালিত স্বপ্নটি পূরণে অনেকটাই এগিয়ে গেছে। অর্থাৎ বিশ্ব পরিসরে ইন্ডিয়ার জন্যে মাহেন্দ্রক্ষণ উপস্থিত হয়েছে। এখন বাকি চ্যালেঞ্জটি হলো সাধারন পরিষদের দুই তৃতীয়াংশ সদস্যদের সমর্থনের নিশ্চয়তাটুকু। ১৯২ জন সদস্যের মধ্যে সবার সাথে ইন্ডিয়ার স্বার্থের দ্বন্দ্ব নেই। বর বা কনের চরিত্র এবং চালচলন সম্পর্কে জানতে যেমন প্রতিবেশীর দ্বারস্থ হতে হয়ে তেমনি প্রায় পৌণে দুই শ সদস্য ইন্ডিয়ার চাল চলন ও চরিত্র সম্পর্কে জানতে তার নিকটতম প্রতিবেশীর সাথে সম্পর্কটিকে বিবেচনায় নিবে এটাই স্বাভাবিক।
জাতি সংঘের সাধারন সদস্যদের মধ্যে অধিকাংশ সদস্য দেশগুলি নিরীহ । তারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে কম বেশী উদ্বিগ্ন। এদের প্রায় সবাই সমব্যথায় ব্যথী। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক দাসত্বের শৃঙখলে ইতিহাসের দীর্ঘ সময় এদের অনেককেই কাটাতে হয়েছে। চুন খেয়ে মুখ পুড়েছে। কাজেই দই খাওয়ার আগে ভালো করে চেক করে নেয়। যে কোন আগ্রাসী ও আধিপত্যবাদী শক্তিকে এরা ভয়, ঘৃণা ও সন্দেহের চোখে দেখে থাকে। যখন তারা সুযোগ পায়, নিপীড়িত নির্যাতিত জাতির দিকে সর্বদা নিজেদের সমর্থনটি তুলে ধরে। সম্ভবত বিশ্ব মানবতা ও নৈতিকতার বাঁশিটি এই সাধারন পরিষদের কন্ঠেই বেজে ওঠে। যদিও কোন কিছু কার্যকর করার শক্তি এই পরিষদের হাতে নেই। সে জন্যে নিরাপত্তা পরিষদের উপর নির্ভর করতে হয়। তাই ফিলিস্তিনী জনগণের উপর আগ্রাসন নিয়ে আগ্রাসী ইসরাইলের বিরুদ্ধে এই সাধারন পরিষদে সহজেই নিন্দা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।

ইন্ডিয়া এই ব্যাপারটি ভালো করেই জানে। নিজের সম্পর্কে আত্ম সমালোচনা বা সেলফ এসেসমেন্ট করেছে। তাই
২০১৩ সালের সাধারন অধিবেশনে নিরাপত্তা কাউন্সিলে অন্তর্ভুক্তির প্রস্তাবটি সাধারণ পরিষদে উথ্থাপনের সাহস করে নি ইন্ডিয়া। কারন দুই তৃতীয়াংশ সদস্য দেশের সমর্থন জুটবে এমন আস্থা ইন্ডিয়া সঙ্গত কারনেই রাখতে পারে নি। কারন নিকট প্রতিবেশীর সাথে ইন্ডিয়ার আচরন নিয়ে সারা বিশ্বের মানুষের মনে এখনও অনেক প্রশ্ন রয়েছে।

জাতি সংঘের মূল মন্ত্র শান্তি ও নিরাপত্তা ( Peace and Security) রক্ষায় ইন্ডিয়ার এই ইমেইজটি ততটুকু উজ্জল নয়।
যদিও এই স্বপ্নটি পূরণের জন্যে মোটামুটি টেনেটুনে একটা ভালোমানুষি অবয়ব বিশ্ব সভায় এযাবত প্রদর্শন করে এসেছে। ছোটখাটো কিছু দাগ থাকলেও চরিত্রে বড় ধরনের কোন দাগ পড়ে নি। কাশ্মীরের সমস্যাটিকে নিজেদের অাভ্যন্তরিন সমস্যা হিসাবেই প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছে। ১৯৭১ সালে সবচেয়ে বড় শত্রু পাকিস্তানকে খন্ডিত করার লক্ষ্যে সরাসরি হস্তক্ষেপ করলেও তা একটি স্বাধীন রাষ্ট্র জন্মদানের মত মহৎ কাজ হিসাবে গণ্য হয়েছে। যুদ্ধের পর বিজিত ভূখন্ডে সৈন্য রেখে দিতে চাইলেও নিজের এই ইমেইজের কথা চিন্তা করে (মুজিব চাহিবা মাত্রই) তা উঠিয়ে নিয়েছে। মাঝখানে স্বাধীন সিকিমকে নিজেদের অন্তর্ভুক্ত করে নিলেও লেন্দুপ দর্জির ভূমিকার কারনে দখলদারের দুর্নামটি ইন্ডিয়ার ঘাড়ে পড়ে নি। নেপাল ও ভুটানকে পুরো নিজেদের কব্জায় নিলেও কখনই দখলদার বা আগ্রাসীর ভূমিকায় নামতে হয় নি। শ্রীলঙ্কার অশান্তিতে কলকাঠি নাড়লেও বা নানা ভাবে ইন্ধন যোগালেও সরাসরি হস্তক্ষেপ করে নি।

বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রনীতিতে প্রতিবেশীদের সাথে সম্পর্কোন্নয়নের একটা প্রচেষ্টা লক্ষ্য করা যাচ্ছে । এটা শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের উল্টো কাজ হিসাবে করছে এমন নয় । এখানে অন্য গণনা কাজ করছে।

সেই গণনাটি হলো, বিশ্বসভায় নিজের ভালোমানুষি প্রদর্শনের তাগিদ আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী অনুভব করছে ইন্ডিয়া। নির্বাচনের আগে আগে আমাদের অনেক নেত্রী যেমন মাথায় পট্টি বাঁধেন, কেউ কেউ দুই বার আছরের নামায পড়েন, গ্রামের আতইরাকেও জ্বনাব আতর আলী সাহেব বলে ডাক দেন তেমনি একটা সময় এই গ্লোবাল ভিলেইজে ইন্ডিয়ার জন্যেও উপস্থিত হয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে অদ্ভুত, অবৈধ, নিষ্ঠুর ও ব্রেইন ডেড একটি সরকারকে ( প্রশাসন যার ভেন্টিলেটর হিসাবে কাজ করছে) সমর্থন করা ইন্ডিয়ার নিজের পায়ে নিজে কুড়াল মারার শামিল। বিশ্বসভায় যে মুহুর্তে ( বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায়) তার ভূমিকা আরো উজ্জ্বল করার কথা বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বৃহত্তম গণতন্ত্রের দেশ ইন্ডিয়ার মুখে সবচেয়ে বড় দাগ সৃষ্টি করেছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র ধ্বংস করে এক দলীয় শাসন প্রতিষ্ঠায় ইন্ডিয়ার নির্লজ্জ সহযোগিতা তাকে ক্রমাগত বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাচ্ছে ।
গত ৫ই জানুয়ারীর নির্বাচন বিশ্বের সবচেয়ে বাজে নির্বাচন গুলির একটি হিসাবে সকল ধরনের সার্ভেতে উঠে এসেছে। ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে কোন নির্বাচনেরই প্রয়োজন পড়ে নি। বাদ বাকি আসনগুলিতেও শতকরা পাঁচ ভাগের কম ভোটার উপস্থিতি হয়েছে। অনেকগুলি ভোট কেন্দ্রে একটি ভোটও পড়ে নি। কোন কোন ভোটকেন্দ্রে কুকুর ছাড়া কোন দ্বিপদী জন্তু দেখা যায় নি। গৃহপালিত বিরোধী দলটিকেও মহা সার্কাস করে পোষ মানানো হয়েছে।

জাতি সংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, যুক্তরাষ্ট্র প্রমুখ বিশ্বসংস্থা ও বিশ্ব শক্তি বার বার এই নির্বাচনটি নিয়ে তাদের অস্বস্তি প্রকাশ করেছে। এই নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে গণতান্ত্রিক বিশ্বের এমন কোন জায়গা নেই যেখান থেকে প্রশ্ন উঠেনি । সকল আন্তর্জাতিক সংস্থা মুক্ত, অবাধ ও সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য একটি নির্বাচনের জন্য ক্রমাগত চাপ দিয়ে আসছে। নিউইয়র্ক টাইমস কয়েকদিন আগে এক প্রতিবেদনে বিশ্বব্যাপী গণতন্ত্রের রিসেশনে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করেছে। এব্যাপারে স্পষ্টতই বিশ্ব জনমতের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে গেছে ইন্ডিয়া।
ইন্ডিয়ার স্বপ্নপূরণে বাংলাদেশ সত্যিই একটি অগ্নিপরীক্ষা। মনে হচ্ছে ইন্ডিয়া নিজের নাকটি কেটে বাংলাদেশের (গণতন্ত্রের) যাত্রাটি ভঙ্গ করছে। অথচ বিশ্বের মধ্যে অধিকাংশ দরিদ্র জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এই অঞ্চলে শান্তি ও সমৃদ্ধি বৃদ্ধিতে ইন্ডিয়ার বিরাট ভূমিকা রাখার সুযোগ রয়েছে। আঞ্চলিক রাজনীতির সংকীর্ণ গন্ডি পেরিয়ে ইন্ডিয়া যদি বৈশ্বিক চাহিদা ও প্রত্যাশার ( Global need and expectation) দিকে মনোযোগ দেয় তবে পুরো এলাকার চেহারা বদলে যেতে পারে। ইন্ডিয়াকে মনে রাখতে হবে বাংলাদেশের ষোল সতের কোটি মানুষকে অশান্তিতে রেখে ইন্ডিয়া নিজের শান্তি নিশ্চিত করতে পারবে না। কোন বিশেষ দলের সাথে অবৈধ প্রেম নয়, এদেশের জনগণের সাথে বৈধ সম্পর্ক স্থাপন করা উচিত । পিপল টি পিপল কন্টাক্ট বা জনগণের সাথে জনগণের সংযোগটি খুবই জরুরি।

এক্ষেত্রে ইন্ডিয়া এক পা এগিয়ে এলে এদেশের জনগণ দুই পা এগিয়ে যাবে। এদেশের গণতন্ত্র ও জনগণের পক্ষে দাঁড়ানোর ঐতিহাসিক সুযোগ ইন্ডিয়ার জন্যে সৃষ্টি হয়েছে। ইন্ডিয়ার জাতীয় স্বার্থও একই লাইনে এসে দাঁড়িয়েছে। কাজেই এই সরকারকে যে কোন মূল্যে টিকিয়ে রাখলে ইন্ডিয়ার লাভের চেয়ে লোকসানই বেশি হবে।

তারপরেও সরকারের কর্তাব্যক্তিরা অতি মাত্রায় আত্মবিশ্বাসে ভুগছে বলে মনে হচ্ছে। ব্যক্তিগত আবেগের চেয়ে রাষ্ট্রীয় স্বার্থের নিরিখেই ইন্ডিয়ার ফরেন পলিসি নির্ধারিত হয়। শেখ মুজিব ও খোন্দকার মোশতাকের মধ্যে কে ইন্ডিয়ার বড় সুহৃদ ছিলেন ১৯৭৫ সালের আগষ্ট মাসে সেটা বোঝা যায় নি। ১৬ আগষ্টে রাষ্ট্রদূত সমর সেন খোন্দকার মোশতাকের সঙ্গে যেভাবে দন্তবিকশিত করে পোজ দিয়েছিলেন তা সেই নির্মম সত্যটি তুলে ধরে। তখনকার অনেক গোপন চুক্তি ও আশ্বাস গোপনেই রয়ে গেছে। ইন্দিরা গান্ধির নাকি নির্দেশ ছিল, ডোন্ট ডিস্টার্ব মোশতাক গভর্ণমেন্ট !

উত্তর পাড়াকে ( দেশের সামরিক বাহিনীকে) ও প্রতিপক্ষকে স্বভাবসুলভ খোচা মেরে শেখ হাসিনা বলেছেন, তাদের ক্ষমতাগ্রহনের সুযোগ চিরতরে বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু অসাংবিধানিকভাবে ক্ষমতায় যারা এসেছেন তারা সংবিধানকে স্থগিত করেই এসেছেন । যারা সংবিধান নামক মূর্তিটি তৈরি করে সেই মূর্তিমানরাও চিরদিন ভূপৃষ্ঠে থাকেন না । তাই কোন সরকারই শেষ সরকার নয়। কোন সংবিধানই শেষ সংবিধান নয়। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মানুষের জন্যে সংবিধান। সংবিধানের জন্যে মানুষ নয়।

ইন্ডিয়ার সাথে বিভিন্ন গোপন চুক্তির কথাও বিভিন্ন কৌশলে জানিয়ে দেয়া হচ্ছে। এই সব মেমোরেন্ডাম অব অান্ডারস্ট্যান্ডিংএর অনেকগুলিই প্রেমিকাকে লেখা প্রেমপত্রের মতই মধুর।

কিন্তু প্রয়োজনের সময় ইন্ডিয়া একটি পাঁচ ভাগের কম জনসমর্থিত সরকারকে বিশ্ব জনমতের বিপক্ষে গিয়ে রক্ষা করবেন সেটা ভাবাও কঠিন। বিশেষ করে যখন বিশ্ব সভায় নিজের ইমেইজটি বাড়ানোর চাপ রয়েছে তখন আগ্রাসী শক্তি হিসাবে নিজেকে প্রতিপন্ন করার এই ঝুকিটুকু তারা গ্রহণ করবেন এমন বোকা ইন্ডিয়ার নেতাদের ভাবা যায় না। কাজেই অতি অাত্মবিশ্বাসী শেখ হাসিনা সম্ভবত নিজের ও তার দলের জন্যেই বিপদটি টেনে আনছেন না। সারা জাতিকে চরম বিপদের দিকে টেনে নিচ্ছেন।

এক এগারোর পর যখন সারা দেশে মাইনাস টু এর পক্ষে বিশাল স্রোত বয়ে চলছিল তখনও এই কলামটি সেই স্রোতের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছি। কোন ধরনের অসাংবিধানিক শাসনের পক্ষে অবস্থান করি নি । এই লেখাটি কোন পক্ষের জন্যে উস্কানী নয়। গণতান্ত্রিক সকল শক্তির জন্যে একটা সাবধান বাণী। জানি না আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা থেকে সদুপদেশটি শোষন করার মত প্রজ্ঞা এই সরকারের কোন পর্যায়ে অবশিষ্ট আছে কি না। রাজনৈতিক সমাধানের পথ আমি মনে করি এখনও বন্ধ হয়ে যায় নি।

বাংলাদেশের মানুষ উত্তর কোরিয়া কিংবা বার্মার জনগণের মত নয়। যে কৌশলেই আটকানো হোক না কেন, যেভাবেই মুখটি বন্ধ করা হোক না কেন, মুক্তির একটা উপায় তারা বের করে নেবেই।

পৃথিবীর ইতিহাস ঘাটলে দেখা যায় বড় বড় স্বৈরাচাররা সব সময় এই ধরনের আত্মতৃপ্তি ও আত্মবিশ্বাসে ভুগেছেন । এদের শেষ দৃশ্যটি সব সময় কৌতুক অভিনেতা ভানুর সেই কৌতুকের মত হয়েছে।

ভানু : ওকিল মহাশয়। ফাঁসীর হুকুম তো হয়ে গেল! এখন কী করব?
উকিল: ঝুইলা পড়ো। আমি তো আছিই।

সমস্যা হলো, এরা শুধু নিজেরাই ঝোলে না। সারা জাতিকে ঝুলিয়ে দিয়ে যায়।