রাষ্ট্রনায়কদের সামরিক উন্নয়ন: পর্ব-২♦প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান♦

রাষ্ট্রনায়কদের সামরিক উন্নয়ন: পর্ব-২প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

লেখক- Shofiul Haque   4 January 2019
.
প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান

মুক্তিযুদ্ধে এক মহান বীর জিয়াউর রহমান। বাংলাদেশের সামরিক উন্নয়নের অন্যতম পথিকৃৎ তাকে ধরা হয়।তিনি ১৯৫৫ সালে পাকিস্তান আর্মিতে কমিশন লাভ করেন,১৯৬৫ সালে পাক-ভারত যুদ্ধে TQA পদক লাভ করেন।১৯৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে জেড-ফোর্স ও ১ সেক্টর এর নেতৃত্ব দেন।১৯৭৫ সালে তিনি ক্ষমতা দখল করেন ও ১৯৭৭ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট হন।তার আমলে সামরিক বাহিনীর ব্যাপক স্ফিতি লাভ করে।নিম্নে তার বর্ণনা দেওয়া হলো।

সেনাবাহিনীঃ

১.তিনি অধুনালুপ্ত রক্ষীবাহিনীর ১৬ ব্যাটালিয়নকে আর্মিতে যুক্ত করে সেনাবাহিনীর পাচটি ডিভিশন তৈরি করেন।

২.চীনের অনুদানে আর্মিতে প্রচুর আধুনিক অস্ত্র আর্টিলারি,যানবাহন, সিগন্যাল সেট ইত্যাদি ক্রয় করেন।

৩.সেনাবাহিনীকে অখন্ডতা রক্ষায় পার্বত্য চট্টগ্রামে মোতায়েন করেন।যদিও পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ এর অভাব ও সাহসের দরুন কাউন্টার ইন্সার্জেন্সিতে আর্মি পার্বত্য চট্টগ্রানে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়।তার আমলেই বাংগালীদেরকে বসতি স্থাপন করায় পার্বত্য চট্টগ্রামে দীর্ঘস্থায়ী ইন্সারজেন্সি শুরু হয়।

৪.তিনি আর্মির জন্য কক্সবাজার ক্যান্টনমেন্ট, SI&T, মেডিকেল ইন্সটিটিউট তৈরি করেন।এছাড়া তিনি চীনের সহায়তায় সমরাস্ত্র কারখানার উৎপাদন কাজ শুরু করেন তিনি ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড&স্টাফ কলেজ ব্রিটিশদের সহায়তায় তৈরি ও প্রশিক্ষণ এর কাজ শুরু করেন।

৫.তিনি আইএসআই এর সহযোগিতায় ডিজিএফআইকে উন্নত প্রশিক্ষণ শুরু ও আধুনিক ডিজিএফআই গঠন করেন।

৬.তিনি বেশ পূর্ণাঙ্গ এডি বিগ্রেড,স্বতন্ত্র সিগনাল বিগ্রেড গঠন করেন।এছাড়া সৈনিকদের আবাসন,বেতন-ভাতা সহ অন্যান্যা সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করেন।

নৌবাহিনীঃ

১.নেভির জন্য তিনি তিনি ব্রিটেন থেকে দুটি ফ্রিগেট, মিসাইল বোট ক্রয় করেন

২.কাপ্তাইয়ে নেভাল ইউনিট নির্মাণ করেন।

৩.নেভির জন্য চীন থেকে বেশ কিছু পেট্রোল বোট, গানবোট ক্রয় করেন।

বিমানবাহিনীঃ

বলা হয় তার আমলেই বিমান বাহিনীর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হয়। তবুও তিনি এফ-৬ ও কয়েকটি ট্রেইনার বিমান ক্রয় করেন।তার আমলে পাকিস্তান ও চীন থেকে F-6,FT-6 ডেলিভারী দেয়া হয়।

তার আমলে কয়েকটি নতুন বিডিআর ব্যাটালিয়ন ব্যাটালিয়ন তৈরি করা হয়।এছাড়া নতুন বিওপি তৈরি, অস্ত্রশস্ত্র ও যোগাযোগ সেট ক্রয় করা হয়।তিনি পুলিশে আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন তৈরি, DMP তৈরি সহ ব্যাপক উন্নত করেন।তার আমলেই আনসার গঠিত হয়।গঠিত আনসার ব্যাটালিয়ন,অঙ্গীভূত আনসার,ভিডিপি গঠন করেন।

তার আমলে সামরিক বাহিনীর ব্যাপক উন্নয়ন হলেও তার আমলেই সংগঠিত হয় ২১ টি বিদ্রোহের।অনেকের মতে বিদ্রোহগুলো ছিলো পরিকল্পিত যাতে কোনো বিদ্রোহী জার্ম না থাকে।তার আমলে ধ্বংস হয়ে যায় বিমানবাহিনী।বিমান বিদ্রোহের সময় তখন মাত্র বিমানবাহিনীতে ৭ জন পাইলট ছিলো।জিয়া বিদ্রোহের পর বিমানবাহিনীকে আর্মিতে dissolve করার উদ্যোগ নেন।
.
জিয়াউর রহমান ব্যক্তিগত জীবনে অনেক সৎ জীবন যাপন করতেন।তার আমলেই দেশের সামরিক খাতের ব্যাপক উন্নয়ন হয়।হুমায়ুন আহমদের মতে ‘কারাগারে বাড়তে থাকে লাশের মিছিল,পুঞ্জীভূত হতে থাকে ক্ষোভ,আর তা আসড়ে পরে সার্কিট হাউসে’।আল্লাহ উনাকে জান্নাত নসিব করুন। বাংলাদেশের সামরিক ইতিহাসে তার নাম জ্বল জ্বল করে লেখা থাকবে।

(ভুলত্রুটি সংশোধনযোগ্য)

Copyright- @DTB     Defence Research Forum- DefRes