ভেতরের গণতন্ত্র এবং বাইরের আক্ষেপ

ভেতরের গণতন্ত্র এবং বাইরের আক্ষেপ

দলের ভেতরে গণতন্ত্র নেই- এই বিলাপ করতে করতে দেশ থেকেই গণতন্ত্র প্রায় বিতাড়িত করে দিয়েছে নিজেদের ‘সুশীল সমাজ’ নামে জাহির করা একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী। দলের ভেতরে গণতন্ত্র নেই বলে যারা মায়াকান্না করতেন, কথায় কথায় ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ হিসেবে চিৎকার মেরে জনগণের বুকে কাঁপন ধরিয়ে দিতেন, মুহুর্মুহু গুরুগম্ভীর সম্পাদকীয় লিখতেন, আজ তারা সবাই চুপ। রাষ্ট্রীয় সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হওয়ার পরেও এরা এখন ব্যর্থ রাষ্ট্রের কোনো সিম্পটম দেখতে পাচ্ছেন না। জুডিশিয়ারির অবস্থার কথা জনৈক প্রধান বিচারপতি নিজ মুখে বলে গেছেন এবং একটি পুস্তক লিখে জানিয়েছেন। খোদ সিইসির মুখ থেকে বেরিয়ে পড়েছে নিশিকালীন ভোটের কথা।

সাবেক মন্ত্রী, বর্তমান সংসদ সদস্য ও শাসকদলীয় জোট নেতা প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, তিনি কিংবা সরকারের কেউ জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারেননি। নিজের সেই আমলনামার ভিডিও মজুদ থাকলেও এখন তা মুখ মুছে অস্বীকার করছেন। তারা এখন হিউম্যান কন্টাক্ট ও হিউম্যান সেন্সরের রিডিংগুলোও ওলটপালট করে ফেলতে চাচ্ছেন। কেউ নিজের বউকে অন্য নাগরের বাহুতলে আবিষ্কার করল। পায়জামার ফিতা লাগাতে লাগাতে এবং নাগরকে পাশে রেখেই সেই স্ত্রী বলবে, ‘কই কিছুই তো করি নাই! তুমি ভুল দেখেছ।’ এই সাবেক ও বর্তমান কমরেডরা শুধু এই রাষ্ট্রকেই নন-ফাংশনাল বানাচ্ছেন না, সব হিউম্যান কন্টাক্ট ও হিউম্যান সেন্সরকেও নন-ফাংশনাল বানিয়ে ফেলছেন। আত্মপক্ষ সমর্থনে প্রবীণ বাম নেতার সেই ব্যাখ্যা আমাদের মিডিয়া মেনে নিয়েছে কিভাবে?

ইংরেজি Civil Society শব্দটির একটি বিকৃত ও সুবিধাজনক অনুবাদ হলো ‘সুশীল সমাজ।’ তবে ‘সুশীল সমাজ’ বলতে মূলত এলিট সমাজকে বোঝায়, যার সাথে সিভিল সোসাইটির কোনো সম্পর্ক নেই। আমরা অনেকেই অবাক হবো যে, মসজিদের ইমাম কিংবা মন্দিরের পুরোহিতও সিভিল সোসাইটির অংশ। এই সিভিল সোসাইটির সঠিক অনুবাদ হতে পারে নাগরিক সমাজ। এই সোসাইটির পরিধি ছিল অনেক ব্যাপক ও বিস্তৃত। দেশের বাইরে থেকে কেউ ‘সিভিল সোসাইটি’ খুঁজতে এলে কুমিরের ছানার মতো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এলিট সমাজের কয়েকজনকে হাজির করা হতো এবং এখনো তাই করা হয়। ফলে সিভিল সোসাইটির শক্তি ও সুযোগগুলোর অপব্যবহারের মাধ্যমে জাতির এই সর্বনাশ করা হয়েছে।

কারসাজির কারণেই (পরিপূর্ণ না হলেও) মোটামুটি গণতন্ত্রের দেশটি আজ একটি একদলীয় স্বেচ্ছাচারের দেশে পরিণত হয়েছে। প্রথম ও দ্বিতীয় টার্মে মুখে গণতন্ত্রের কথা বলা হলেও তৃতীয় টার্মে সরাসরি বাকশালের কথা পর্যন্ত বলা হচ্ছে। তার পরেও কথিত এই সুশীল সমাজের টনক নড়েনি। এতে সন্দেহ হয়, তারাও এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার!

তৃতীয় বিশ্বের একটি মুসলিম রাষ্ট্র এই বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ উপায়ে সরকার পরিবর্তনের একটা ধারা সৃষ্টি হয়ে গিয়েছিল। পরপর তিন বার আগের ক্ষমতাসীনেরা পরের বার ক্ষমতায় আসতে পারেননি। বিভিন্ন সামাজিক ও অর্থনৈতিক সূচক দেখে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরাও বিস্মিত হয়ে পড়েন। ২০০৪ সালের দিকেই দক্ষিণ এশিয়ার ‘ইমার্জিং টাইগার’ হিসেবে বিবেচিত হয় বাংলাদেশ। গণতন্ত্রায়নের এই ধারা অব্যাহত থাকলে সিঙ্গেল ইউনিটের চমৎকার জাতি রাষ্ট্রটির উন্নতি আর ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে না জেনে প্রমাদ গোনে আধিপত্যবাদী শক্তি। সময় মতো কাজে লাগায় আগে থেকে খুদ কুঁড়া দিয়ে পোষা সুশীল গ্রুপটিকে। বিশ্বখ্যাত ব্রিটিশ সাময়িকী ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ সরাসরি জানায়, Bags of Indian cash and advice এর বিশেষ ভূমিকা।

বিদেশী শক্তির ক্রীড়নক এবং শেকড়বিচ্ছিন্ন মতলববাজদের জব্দ করতে না পারলে এ জাতির পূর্ণাঙ্গ মুক্তি সম্ভব নয়। আশার কথা হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সেই সুযোগটি এনে দিয়েছে। মতলববাজদের অনেকেই তাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর ভীষণ বিক্ষুব্ধ। খোদ গণতন্ত্রের জন্য তাদের কোনো আফসোস নেই। গত ১২ বছর ধরে তারা প্রশান্তিতে আছেন বলেই মনে হচ্ছে। এখন হঠাৎ মায়াকান্না আবার শুরু হয়েছে- বিএনপিতে গণতন্ত্র নেই, নেতৃত্বের প্রতি আস্থা নেই।

দেখা গেছে, ত্রুটিপূর্ণ গণতন্ত্রের দেশগুলোতে গণমাধ্যম সাধারণত বিরোধী দলগুলোর প্রতি সহানুভূতিশীল থাকে। এ দেশে হয়েছে তার উল্টো। বেশির ভাগ গণমাধ্যম নব্য ফ্যাসিবাদের সমালোচনা না করে বিরোধী দলের মধ্যে নানা নোক্তা খুঁজে বেড়ায়। গত কয়েক দিন ধরে দেশের কয়েকটি দৈনিক পত্রিকা, টিভি সেন্টার এবং তাদের কর্মী, টকশোর অ্যাংকর এবং কলামিস্টদের মধ্যে বিএনপির নোক্তা ধরার বিষয়টি লক্ষ করা যাচ্ছে। দলটির কয়েকজন নিষ্ক্রিয় এবং ‘সুখের পায়রা’ টাইপ নেতার পদত্যাগ কিংবা এ গুঞ্জনের পর এই গোষ্ঠী উল্লসিত হয়ে পড়েছে। এদের উল্লাস এবং রিদমের সাথে একজন মন্ত্রীর উল্লাস এবং রিদম মিলে যাচ্ছে। উনি জানিয়েছেন, ‘বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগে যোগ দিতে দেনদরবার করছেন।’

এই যোগদান সংঘটিত হলে আমার তো মনে হয় বিএনপির নেতাকর্মীরা আকাশ বাতাস কাঁপিয়ে বলবে, আলহামদুলিল্লাহ। কারণ এরা (যদি থেকে থাকে) বিএনপিতে থেকে দলটির এবং গণতন্ত্রের যতটুকু ক্ষতি করেছেন, আওয়ামী লীগে যোগ দিলে বা আগের দল ছাড়লে ঠিক ততটুকুই উপকার হবে। এরা কার্যত বিএনপির জন্য ক্যান্সার কোষের সমতুল্য। সেই কোষ যদি এই প্রক্রিয়ায় বেরিয়ে যায় সেটা বিএনপি এবং বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য আশীর্বাদ হয়ে দেখা দিতে পারে।

ডেমোক্র্যাটিক রিপাবলিক অব বাংলাদেশের ওই মন্ত্রী আরো বলেছেন, ‘লন্ডন থেকে তারেক রহমান দল চালাচ্ছেন বলেই নেতারা চলে যাচ্ছেন।’ এর জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সহজাত স্বভাবের কিছুটা বাইরে গিয়ে টিপ্পনী কেটেছেন, ‘মন্ত্রী মহোদয় প্রায়ই এ ধরনের কথাবার্তা বলেন, সেগুলোতে কিছুটা সৃজনশীলতার আভাস পাওয়া যায় আর কী!’

মন্ত্রীপ্রবর এবং সমপরিমাণ সৃজনশীলতার অধিকারী সাংবাদিক মহোদয়রা একসাথে ডাক দিতে চেয়েছিলেন। তাতে বোধহয় কিছুটা ছন্দপতন ঘটে গেছে। গত ১১ নভেম্বর দেশের প্রথম শ্রেণীর একটি পত্রিকায় ‘বিএনপিতে পদত্যাগ, অনাস্থা’ শিরোনামে একই ধরনের একটি কলাম ছাপা হয়েছে। সেখানেও দাবি করা হয়, বিএনপির সিনিয়র নেতারা তারেক রহমানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। দু’জন পদত্যাগ করেছেন, আরো কয়েকজন পাইপলাইনে রয়েছেন, ব্লা ব্লা। এ ধরনের সংবাদের মূল উদ্দেশ্য, আসলে দলটির নেতাকর্মীদের মধ্যে পারস্পরিক সন্দেহ ও অস্থিরতা সৃষ্টি করা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সাবেক এক জেনারেল পত্রিকাটির জন্য রীতিমতো বিরাট অ্যাসেট হয়ে পড়েছেন। যখনই বিএনপিকে নিয়ে এই কিছিমের সংবাদের প্রয়োজন পড়ে তখনই তাকে উদ্ধৃত করা হয়। তার সেসব উদ্ধৃতি প্রায়ই বিএনপি তথা ২০ দলীয় রাজনীতির বিপক্ষে যায় কিংবা সেভাবে দাঁড় করানো হয়। এই রাজনৈতিক ও সামরিক ব্যক্তিত্ব নিজেকে এমন জায়গায় নিয়ে গেছেন, যেখানে তার মাইনাস কিংবা প্লাসে বিএনপির বর্তমান রাজনীতিতে কোনো হেরফের হবে না। বাকি নিষ্ক্রিয় এবং সুখের পায়রা টাইপ নেতৃত্ব নিয়েও একই মন্তব্য করা যায়। তারা নিজেরাই নিজেদের রাজনীতিতে ‘জিরো’ করে ফেলেছেন। সেই জিরো একসাথে কয়েকটি এদিক সেদিক হলে হেরফের হবে না।

বিএনপির এসব সিনিয়র এবং সম্মানিত নেতা তাদের নিয়ে পত্রিকাটির এই ভূমিকা সম্পর্কে কতটুকু ওয়াকিবহাল, জানি না। অত্যন্ত সম্মানিত এসব নেতাকে কিছু পরামর্শ দেয়া জরুরি। দেশ ও দলের জন্য তাদের প্রত্যেকের বিশেষ কনট্রিবিউশন রয়েছে। নিজ নিজ ক্ষেত্রে তারা প্রত্যেকেই উজ্জ্বল তারকা ছিলেন। দেশটিতে স্বাভাবিক অবস্থা বজায় থাকলে তারা আরো অবদান রাখতে পারতেন, তাতে কোনো সন্দেহ নেই। এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আগের বর্ণাঢ্য জীবনের প্রতি সুবিচার হবে, তাদের সম্পূর্ণ চুপ করে যাওয়া এবং দরকার পড়লে জীবনের বাকি দিনগুলো পরিবার পরিজন নিয়ে অবসরে কাটানো।

৫, ১০, ১৫ বছর একজন ব্যক্তির জীবনে অনেক দীর্ঘ হলেও একটি জাতির জীবনে কিছুই না। পঁচাত্তরের পরে আওয়ামী লীগ ভাবতে পারেনি তারা কোনো দিন ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন করতে পারবেন। মোহাম্মদ বিন তুঘলক গত হয়েছেন ৭০০ বছর আগে; কিন্তু তার কৃতকর্মগুলো জনগণের স্মৃতিতে রয়ে গেছে। এখনো যেকোনো উদ্ভট কাজকে ‘তুঘলকি কাণ্ড’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তেমনি নব্য তুঘলকরা আলোচিত হবেন, মানুষের নিন্দা ও ধিক্কার পেতে থাকবেন বছরের পর বছর ধরে। ইতিহাস অতীতে কাউকেই ক্ষমা করেনি। ভবিষ্যতেও করবে না।

এ দেশের মানুষের ডিএনএতে গণতন্ত্র রয়েছে। এই-সেই বুঝ দিয়ে বেশি দিন কেউ টিকতে পারবে না। অত্যন্ত লজ্জার পরাজয় তাদের জন্য অপেক্ষায়, যদি না আজো হুঁশটি না ফেরে। বাঘের পিঠ থেকে নামতেই হবে।
২.
দেশে গণতন্ত্র না থাকলেও যেন চিন্তা নেই। বিএনপির ভেতরে কেন ‘গণতন্ত্র’ নেই- এটা নিয়ে মিডিয়ার একটা অংশের মনে হয় ঘুম নষ্ট হয়ে গেছে। কারণ কয়েকটি দৈনিক পত্রিকায় এ সংক্রান্ত সংবাদ ও কলাম অনেকের চোখে পড়েছে। বিএনপিকে নিয়ে এই সুশীলরা যতটা উৎকণ্ঠিত ততটা উৎকণ্ঠা দেশের গণতন্ত্র নিয়ে দেখাতে পারলে জাতির ভাগ্য হয়তো বদলে যেত।

আগে আমাদের রাজনৈতিক মানসটি নিয়ে ভাবতে হবে। এ দেশে বামপন্থী নেতাদের প্রত্যেকের মাথায় মাত্রাধিক বুদ্ধি। এই বুদ্ধি নিয়ে একজনের আনুগত্য এবং বশ্যতা অন্যজন মানতে চান না। ফলে নিত্যদিন তাদের দল ভাঙে এবং ব্র্যাকেট বন্দী হয়ে যায়। তাদের মোট কর্মীর চেয়ে নেতা এ কারণে বেশি।

এই দেশে ইসলামী দল বা পীর ঘরানার যে রাজনৈতিক দল কিংবা পীরদের খানকা বা দরগাহ রয়েছে সেখানেও গদিনসীন পীর তার খেলাফত কখনোই রক্ত সম্পর্কের বাইরে কাউকে দিয়ে যান না। যাদের ওয়াজ নসিহত সর্বদা আসমানের ওপর দিয়ে কিংবা মাটির তলা দিয়ে যায়, যারা টাকা পয়সাকে ‘শরীরের ময়লা’ হিসেবে গণ্য করেন তারাও সেই ময়লাকে নিজের খানদানের জন্যই রেখে যান। এসবের মধ্যেই একটা ফেরেশতা গ্রুপের মনে হঠাৎ একটা তত্ত্বের উদয় হলো যে, আমাদের সব অনিষ্টের মূল হলো ‘পরিবারতন্ত্র’। এক এগারোর সেই ফেরেশতারা এই জেহাদে যেসব মুজাহিদকে সাথে নিলেন, তাদের অনেকেরই সেকেন্ড ইন কমান্ড ছিলেন স্বীয় পতœী বা শাহজাদা!

এখানে বিএনপির এক নেতাকে পেছন থেকে টানে অন্য কেউ (দুঃখিত, কোনো ভিডিও প্রমাণ নেই), সরকারি দলের দু’নম্বর নেতাকে কনুই দিয়ে ধাক্কা মেরে সামনে দাঁড়ান আরেক নেতা (একুশে ফেব্রুয়ারির ভিডিও দ্রষ্টব্য)। এই কিছিমের ঠেলাঠেলি প্রাইমারি স্কুলে করেছি। হাইস্কুলে ভর্তি হয়ে মনে করেছি, এটা ছোটদের কাজ। অথচ আমাদের জাতীয় নেতৃত্ব ভিডিও ক্যামেরার সামনে এই কিছিমের ঠেলাঠেলিতে লজ্জা পান না। আর এ ধরনের নেতৃত্ব দিয়ে সব দলের টপ টু বটম ঠাসা- সেখান থেকে রাতারাতি পরিবারতন্ত্র উচ্ছেদ করা কল্পনা ছাড়া কিছু নয়। এ ক্ষেত্রে দু’টি পরিবার ‘আশীর্বাদ’ হিসেবে এসেছে। এই দুই পরিবারের নেতৃত্ব দু’টি দলে চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে না। এটিই বাংলাদেশের চরম রাজনৈতিক বাস্তবতা।

সে দিন যারা দু’টি পরিবারকে ঘিরে কিছুটা রাজতন্ত্রের আদলে সৃষ্ট গণতন্ত্রকে মানতে পারেননি, সেই মতলববাজের দল আজ এক পরিবারকে ঘিরে সৃষ্ট কর্তৃত্ববাদ নিয়ে পরম সন্তুষ্ট! এ ক্ষেত্রে জামায়াতের প্রশংসা করতে গেলে কিন্তু টেকনিক্যাল প্রবলেম!

দলগুলোর ভেতরে গণতন্ত্র নেই বলে যে সুশীলরা সর্বদা মাথা চাপড়ান, তারা জামায়াতে ইসলামীর সাম্প্রতিক আমির নির্বাচনকে আবারো নিজেদের স্বার্থে উপেক্ষা করে গেলেন। এমন একটি ঘটনা মিডিয়ার কোথাও আলোচিত হলো না। দেশের রাজনীতিতে সুন্দর দৃষ্টান্ত স্থাপনের জন্য এবং নতুন আমির হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের জন্য ডা: শফিকুর রহমানকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। অবশ্য এখন পর্যন্ত অন্য কোনো রাজনৈতিক দল, প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি থেকে এই অভিনন্দন চোখে পড়েনি। ডা: শফিককে অভিনন্দন জানানো মানেই- সেই দলে যোগদান করে ফেললাম, চিন্তার এই বিভ্রান্তি কিংবা হীনম্মন্যতা থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। পুরো সমাজকে গণতন্ত্রায়নের জন্য আমাদের সামগ্রিক চিন্তার জগতে বিরাট একটা ওভারহলিংয়ের প্রয়োজন।

কোনো দলের খারাপ কাজের জন্য সমালোচনা করতে পারলে ভালো কাজের জন্য প্রশংসা করতে অসুবিধা কোথায়? বিশেষ করে আমাদের গণতান্ত্রিক কালচারে একটি নমুনার জন্য যেখানে আমরা হন্যে হয়ে আছি। প্রকৃত গণতান্ত্রিক দলে কোনো নেতা বা কর্মী নিজের সন্তানকে নিজের জায়গায় এমপি/মন্ত্রী/খলিফা বানানোর চিন্তা করেন না। বাদবাকিরা দলকে, দলের টপ নেতৃত্বকে বদলাতে চান; কিন্তু নিজেকে একটুও বদলাতে চান না।
minarrashid@yahoo.com