ফ্যাসিবাদের উপর নান্দনিক ও ধর্মীয় প্রলেপ 

ফ্যাসিবাদের উপর নান্দনিক ও ধর্মীয় প্রলেপ
=======================

শামিম ওসমান বলেছেন , আমি ধমক দিলে নারায়ণগন্জে বিএনপি থাকবে না । সারা দেশেই বিএনপি টিকে আছে শামীম ওসমানদের বিশেষ দয়ায় ।

অন্যদিকে সাকিব , সুবর্ণা মোস্তফা , রিয়াজ ,
ফেরদৌস , পূর্ণিমা , অপু বিশ্বাস, শাওন , সুইটি সহ এক ঝাঁক ঝলমলে তারকারা নৌকা মার্কায় ভোট দেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন । এরা প্রত্যেকেই এদের গ্ল্যামারকে ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদের নোংরা চেহারাটি ঢাকতে চাচ্ছেন ! এরা নিজেরা ঝলমলে , কাজেই সরকারের ঝলমলে কসমেটিক কিছু উন্নয়ন কাজকেই তরুণ সমাজের কাছে তুলে ধরছেন । অবুঝ বাচ্চারা লাল তপ্ত অঙ্গার মুখে দিয়ে বসে। এরাও অনেকটা কাছাকাছি ।

১৯৯৬ সালে এশিয়ান ফিন্যানশিয়াল ক্রাইসিস শুরু হওয়ার আগে থাইল্যান্ডের ব্যাংকগুলোর নন-পারফর্মিং লোন ছিলো মোট ঋণের ১১.২% ।

বাংলাদেশে এই মুহুর্তে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর নন পারফর্মিং লোন ২৮.২%।
দেশটি যে ভয়ংকর খাদের কিনারায় দাঁড়িয়ে আছে তা বোঝার মত প্রজ্ঞা এই সব এন্টারটেইনারদের নেই । ২০০৬ সালে মাথাপিছু ঋণ ছিল ৬ হাজার টাকা , আজ তা বেড়ে হয়েছে ৬০ হাজার টাকা । দেশে বেকারের সংখ্যা ৪ কোটির উপরে ।

এই ধরনের কিছু হিসাব বা ইকোনোমিক ইনডেক্স এই সব ঝলমলে খেলোয়াড় বা নায়ক নায়িকাদের মগজে ঢুকবে না । বাক স্বাধীনতা , চিন্তার স্বাধীনতা , জবাবদিহিতা , গণতন্ত্র এসব সম্পর্কেও এদের নলেজ পর্যাপ্ত পর্যায়ে আছে বলে ধরে নেয়া সম্ভব হচ্ছে না । অথচ এরাই নতুন প্রজন্মকে আহ্বান জানাচ্ছে ফ্যাসিবাদের খপ্পরে বন্দি হতে ।
কিন্তু আমাদের নতুন প্রজন্ম ঝলমলে এন্টারটেইনার এবং বিশেষজ্ঞদের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে বলেই আমার বিশ্বাস । গত কয়েকটি আন্দোলনের সময় এদেশের তরুণ সমাজ তাদের সচেতনতার পরিচয় দিয়েছে ।

২.

আমাদের প্রফেশনের এক সিনিয়র । সরাসরি পরিচয় নেই তবে একই প্রফেশনের হওয়াতে পরস্পরকে চিনি ও জানি ।

ফেইসবুকে আমার ফ্রেন্ড তালিকাতেও ছিলেন । অষ্ট্রেলিয়ায় ব্যবসা করে অনেক টাকাও কামিয়েছেন শুনেছি । বিভিন্ন সামাজিক কর্ম কান্ড করে বেড়ান ।

আপাতত: কোনো সমস্যা নাই । ভদ্রলোকের সমস্যা

শুধু মাত্র এক জায়গায় । অষ্ট্রেলিয়ার মত একটি গণতান্ত্রিক আবহে কয়েক যুগ কাটালেও এখনও মানসিকভাবে বিরোধী মত ও পথকে গ্রহন করতে পারেন না ।
আমি কোনোদিন তাঁর বা অন্য কারো কোনো পোষ্টে সচরাচর মন্তব্য করি না । সেদিন কোন খেয়ালে হঠাৎ কিছু মন্তব্য করে বসি । তারামন বিবি যেদিন মারা যান সেদিন তিনি একটি পোষ্ট দেন, Let us promise that new generation Razakars , their collaborators , their sympathizers will never again undermine sanity of our national flag.
এটি দেখে মহামান্য সেই সিনিয়রকে যথাযথ সম্মানপূর্বক লিখেছিলাম ,

Yes sir , Now you are taking it as an excuse to establish a fascist regime ( even after ) living in a democratic society . Dr. Kamal Hossain and others are also Razakar in your eyes .

উপরেরটি ইংলিশে লিখে নিচে আরো দুটি কমেন্ট বাংলায় করেছি ,
আমার দুই নম্বর মন্তব্য :
এগুলো আসলেই চেতনার ব্যবসা । ধর্ম ব্যবসার চেয়েও এগুলো খারাপ ।
আমার তিন নম্বর মন্তব্য :
রাজাকারদের গাড়িতে আপনার প্রিয় দলটি সেই ১৯৯৬ সালেই এই পতাকা তুলে দিয়েছিল ।
আমার চার নম্বর মন্তব্যটি আবার ইংলিশেই ছিল :

What do you mean by new generation Razakar – any one opposing your views ? Or those have surrendered country’s sovereignty by the name of this Chetona ?

আমার এসব কথা বা যুক্তিতে ভুল থাকতে পারে । উনার উচিত ছিল নিজের বক্তব্য তুলে ধরা । কিন্তু
উনি একটিরও জবাব দেন নি । আমাকে ব্লক করে দিয়েছেন । কারো কাছ থেকে সম্ভবত প্রথম ব্লক খেয়েছি ।
শুধু আমাদের এই মহামান্য সিনিয়রই নন- আশেপাশে এরকম আরো অনেককে দেখবেন । এরা জীবনের সব জায়গায় যুক্তিশীল ও প্রজ্ঞাবান – যুক্তিহীন হয়ে পড়েন শুধু এই এক জায়গায় এসে । মনে হয় ফ্যাসিবাদ একটি রোগ এবং তাতে আমরা মারাত্মকভাবে সংক্রমিত হয়ে পড়েছি ।

আমার পেইজটিতে দেখবেন অশ্রাব্য ভাষায় অনেকেই গালাগালি করেন ।এদের অধিকাংশই একই রোগে আক্রান্ত । আমার বক্তব্য নিয়ে পাল্টা কোনো মন্তব্য নেই । পাকিস্তানের চর , জামায়াত বিএনপির দালাল – এটাই তাদের যুক্তি । উল্টা পাল্টা যুক্তিহীন কথাবার্তাও বলেন অনেকে । আমাকে কাছে পেলে কী করবেন তাও কেউ কেউ জানিয়ে দেন ।
তারপরেও কাউকে ব্লক করি না । এটা করি বাক স্বাধীনতার প্রতি সম্মান দেখিয়ে । একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্যে এই কষ্ট টুকু আমাদের সহ্য করতেই হবে ।

শুধু তাকিয়ে আছি নতুন প্রজন্মের দিকে ।

এরাই পারবে কাঙ্খিত পরিবর্তনটি আনতে ।