টাইগারদের বিশ্বকাপ মিশন


আরেকটা বিশ্বকাপ। আরেকটি স্বপ্ন। সাধ-সাধ্যের সমন্বয়ে জ¦লে উঠতে প্রস্তুত মাহমুদউল্লাহ শিবির। টি টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশনে আগামীকাল রোববার রাতে দেশ ছাড়বে টাইগাররা। রাত ১০টা ৪৫ মিনিটে ওমানের উদ্দেশ্যে উড়াল দেবে মাহমুদউল্লাহ বিগ্রেড।
শনিবার মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য নমুনা দেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা সব ক্রিকেটার। এরপর অনুশীলন না করে চলে যান নিজ নিজ বাসায়। যে যেখানে অবস্থান করছেন, সেখানেই চলবে তাদের কোয়ারেন্টাইন প্রক্রিয়া। জৈব সুরক্ষা বলয়ের কারণে ওমানের উদ্দেশে যাত্রা করার আগে আগামীকালও আর অনুশীলনে নামবেন না খেলোয়াড়রা।
ওমানে বিশ্বকাপের প্রাথমিক রাউন্ডের ৩ ম্যাচ খেলতে হবে। এর আগে দু’টি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলতে হবে সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাটিতে। ১২ ও ১৪ অক্টোবর যথাক্রমে শ্রীলঙ্কা ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সেই ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ দুটি আবুধাবিরর ওভাল-২ ও ওভাল-১ মাঠে খেলবে বাংলাদেশ।
তাই আগেভাগে ওমানে গিয়েও সেখানে প্র্যাকটিস ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছে না মাহমুদুল্লাহ রিয়াদের দল। উল্টো বারবার আরব আমিরাত থেকে ওমান এবং ওমান থেকে আরব আমিরাত দৌড়াদৌড়ি করতে হবে টাইগারদের। ৯ অক্টোবর ওমান থেকে আরব আমিরাত গিয়ে ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ দুটি খেলে আবার ১৫ অক্টোবর ওমানে ফিরে আসতে হবে। এরপর প্রাথমিক রাউন্ডে ১৭, ১৯ ও ২১ অক্টোবর ৩টি ম্যাচ যথাক্রমে স্কটল্যান্ড, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে। সুপার টুয়েলভে উঠতে পারলে আবার ২২ অক্টোবর আরব আমিরাত যেতে সহবে। বারবার এই ভ্রমণের সঙ্গে প্রতিবারই আছে একদিন করে রুম কোয়ারেন্টাইন। সবমিলিয়ে তাই ঝামেলাপূর্ণ এক সূচী বাংলাদেশ দলের জন্য।
ওমানে এর আগে কখনও ক্রিকেট ম্যাচ খেলেনি বাংলাদেশ দল। এমনকি কোন ক্রিকেটার দেশটিতে যাননি । এবারই প্রথম তারা ওমানে যাবেন এবং বিশ্বকাপের মতো গুরুত্বপূর্ণ আসরে খেলবেন ৩ ম্যাচ। মর্যাদা রক্ষার লড়াই হবে এই ৩ ম্যাচে। কারণ আইসিসির সহযোগী সদস্য দেশ- স্কটল্যান্ড, ওমান ও পাপুয়া নিউগিনির (পিএনজি) বিপক্ষে খেলতে হবে। নির্দিষ্ট সময়ে আইসিসির টি ২০ র‌্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষ আটে থাকতে না পারায় সুপার টুয়েলভ আসরে সরাসরি খেলতে পারছে না বর্তমানে র‌্যাঙ্কিংয়ের ৬ নম্বরে থাকা বাংলাদেশ।
সবকিছু ঠিক থাকলে আগামীকাল রাতেই ঢাকা ত্যাগ করবেন মাহমুদুল্লাহরা, মাস্কটে গিয়ে মাহমুদুল্লাহরা পৌঁছবেন ঠিক মধ্য রাতে। এরপর থেকেই রুম কোয়ারেন্টাইন শুরু হবে। সেই কোয়ারেন্টাইন প্রায় ৩৬ ঘণ্টার।
৫ অক্টোবর দুপুরে অনুশীলনে নামার সুযোগ পাবেন মাহমুদুল্লাহরা। ৪ দিন অনুশীলন করেই ওমান ত্যাগ করতে হবে। কারণ আইসিসির তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের টি২০ বিশ্বকাপে অফিসিয়াল ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ আবুধাবীতে। ১০ অক্টোবর আবুধাবী গিয়ে ১ দিন কোয়ারেন্টাইন শেষে ১ দিন অনুশীলন করেই পরদিন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে প্রথম ওয়ার্ম-আপ ম্যাচ। মাঝে আরেকদিন বিরতিতে অনুশীলন। ১৪ অক্টোবর দ্বিতীয় প্রস্তুতি ম্যাচ আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে।
এই সূচীতে অবশ্য সুবিধা হবে সাকিব আল হাসান ও মুস্তাফিজুর রহমানের জন্য। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) টি২০ আসর খেলতে এই মুহুর্তে তারা আরব আমিরাতেই অবস্থান করছেন। তাই ওমানে গিয়ে আগেভাগে আর সাকিব-মুস্তাফিজের যোগ দেওয়ার প্রয়োজন হবে না দলের সঙ্গে। বরং আবুধাবীতে দুই প্রস্তুতি ম্যাচ খেলেই দলের সঙ্গে তারা ওমান যেতে পারবেন।
এ পর্যন্ত ছয়টি টি টোয়েন্টি বিশ^কাপ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ দুইবার, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ভারত ও ইংল্যান্ড চ্যাম্পিয়ন একবার করে। বাংলাদেশের সর্বোচ্চ সাফল্য ২০০৭ বিশ^কাপে। সুপার এইটে উঠেছিল টাইগাররা। সর্বশেষ বিশ^কাপের স্মৃতি বাংলাদেশের জন্য বেশ তিক্ততার। ২০১৬ সালে ভারতের অনুষ্ঠিত এই আসরে বাছাই পর্ব ভালোমতো উতরাতে পারলেও সুপার টেনে একটি ম্যাচও জিততে পারেনি বাংলাদেশ। হারতে হয় ৪টি ম্যাচই। এর মধ্যে একটি হার এখনো নাড়া দেয় ভক্তদের। আর সেটা হলো ভারতের সঙ্গে এক রানের হার।