ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যার পুনঃবিচার করা হবে : ফখরুল

ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যার পুনঃবিচার করা হবে : ফখরুল

২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বিএনপি ক্ষমতায় গেলে পিলখানা হত্যার নিরপেক্ষ তদন্ত করে পুনঃবিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, বিডিআর হত্যাকাণ্ডে যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা বলেছে, এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি। এই ঘটনার জন্য সেনাবাহিনী থেকে ওই সময়ে যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিলো তার পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়নি। আমরাও মনে করে, এই বিচার সুষ্ঠু হয়নি। তিনি বলেন, আমরা ক্ষমতা যাওয়ার সুযোগ পেলে অবশ্যই এর নিরপেক্ষ তদন্ত করে সুষ্ঠু বিচারের উদ্যোগ নেবো।

মঙ্গলবার সকালে পিলখানা হত্যাকাণ্ডের একাদশ বার্ষিকীতে বনানী সেনা কবরস্থানে নিহত সেনা কর্মকর্তাদের কবরে পুস্পমাল্য অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ঢাকা জজ আদালত ২০১৩ সালে দেয়া রায়ে ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড এবং ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিলো। এছাড়া ২৫৬ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদের কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেয়। ২০১৭ সালে দেয়া রায়ে ১৩৯ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন হাইকোর্ট। ১৮৫ জনকে হাইকোর্ট যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন, তিন থেকে ১০ বছরের সাজা দেন ২২৮ জনকে।

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিডিআরে বিদ্রোহ দেখা দেয়। সেই বিদ্রোহে ওই বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় বাহিনীর সদর দফতরে বিদ্রোহী জওয়ানদের হাতে মারা যান ৫৭ সেনা কর্মকর্তা। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহে বেসামরিক ব্যক্তিসহ মোট ৭৪ জন প্রাণ হারান। ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়ে জওয়ানদের বিদ্রোহ। রক্তাক্ত সেই বিদ্রোহের প্রেক্ষাপটে সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর নাম বদলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) হয়। তিনি বলেন, ৫৭টি বিদ্রোহের মামলা বিচার হয় বাহিনীর নিজস্ব আদালতে। সেখানে ছয় হাজার জওয়ানের কারাদণ্ড হয়। বিদ্রোহের বিচারের পর পিলখানা হত্যাকাণ্ডের মামলার বিচার শুরু হয় সাধারণ আদালতে।

সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর (বিডিআর) ওই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ষড়যন্ত্রমূলক অভিহিত করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনা বাহিনীর মনোবলকে ভেঙে দিতেই এই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। আজকে আমাদের স্বাধীনতা বিপন্ন, গণতন্ত্র নেই। গণতন্ত্রের আপোষহীন নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে কারাগারে আটকিয়ে রাখা হয়েছে।’

এ সময়ে কল্যাণ পার্টির প্রধান অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, অবসরপ্রাপ্ত বিমান বাহিনী প্রধান এয়ার ভাইস মার্শাল আলতাফ হোসেন চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রুহুল আলম চৌধুরী, অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল ফজলে এলাহী আকবর, অবসরপ্রাপ্ত কর্ণেল মোঃ শাহজাহান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর মিজানুর রহমান, অবসরপ্রাপ্ত মেজর সারোয়ার হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত মেজর কোহিনুর হোসেন নূর, শামীমুর রহমান শামীমুর, শায়রুল কবির খান প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।