কৃষি ঋণের মামলা হয়, শেয়ার বাজারের ২৭ হাজার কোটি টাকা লুটের মামলা হয় না : দুদু

কৃষি ঋণের মামলা হয়, শেয়ার বাজারের ২৭ হাজার কোটি টাকা লুটের মামলা হয় না : দুদু

কৃষি ঋণের মামলা হয়, শেয়ার বাজারের ২৭ হাজার কোটি টাকা লুটের মামলা হয় না : দুদু – নয়া দিগন্ত

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান ও কৃষক দলের আহ্বায়ক শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, বাংলাদেশকে যারা চালায়, যাদের ঘাড়ের উপরে আমরা দাঁড়িয়ে আছি, যারা উদয়াস্ত পরিশ্রম করে, যারা বাংলাদেশকে সারাবিশ্বের কাছে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছে, বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা সক্রিয় অংশগ্রহণ করেছেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের খাইয়েছে পড়িয়েছে ও আশ্রয় দিয়েছে, এই যে ডাক্তার, জজ, প্রকৌশলী যারা বানিয়েছে তারা হলো বাংলাদেশের অসহায়, অবহেলিত, নির্যাতিত কৃষক সমাজ।

ভাবা যায় গত এক মাসের ২৭ হাজার কোটি টাকা শেয়ার মার্কেট থেকে নেই হয়ে গেলো কিন্তু একটা মামলা হয়নি। একজন গ্রেফতার হয়েছে বলে কোন জায়গায় দেখি নাই। আর বন্যা কবলিত আমার অসহায় কৃষক ভাইয়েদের সবকিছু ভেসে গেছে। নেই বাড়ি, নেই তার সেই পশুটা যাকে দিয়ে সে হাল চাষ করতো। তার খাবার নেই সে চালের উপর রাস্তার উপর আশ্রয় নিয়েছে। শুধুমাত্র দুই, তিন, পাঁচ হাজার টাকার কৃষিঋণ এর জন্য তাদের বিরুদ্ধে মামলা হচ্ছে এবং তাদের বেঁধে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। আমি এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ করি এবং অনতিবিলম্বে বন্যা কবলিত এলাকার কৃষকদের কৃষি ঋণ মওকুফের দাবি জানাচ্ছি।

মঙ্গলবার দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বন্যা কবলিত জেলা সমূহের ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের সুদ সহ কৃষি ঋণ মওকুফ এর দাবিতে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী কৃষকদল কর্তিক আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন। মানববন্ধনে আরো উপস্থিত ছিলেন,বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আওয়াল মিন্টু, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আওয়াল খান, কৃষক দলের সদস্য সচিব হাসান জাফরিন তুহিন, সদস্য এস কে সাদি, মাইনুল ইসলাম মিয়া, মো: আনোয়ার, নাসির হাজারি, কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন প্রমুখ।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আরে ভাই বেগম জিয়ার কাছ থেকে শিক্ষা নিন। ভালো কাজ করতে চাইলে বেগম জিয়ার দিকে তাকান। তিনি ক্ষমতায় যাওয়ার আগে বলেছিলেন ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের পাশে দাঁড়াবেন। সুদ সহ কৃষকের ঋণ মওকুফ করে দিবেন। তিনি তা করেছিলেন। বেগম জিয়া তার সময়ে হাজার হাজার কোটি টাকা কৃষি ঋণ মওকুফ করেছিলেন। তিনি বলেন, বন্যা কবলিত হলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সেখানে ছুটে গিয়েছিলেন। কৃষকদের প্রণোদনা দিয়েছেন আর্থিক সহায়তা করেছেন। আর আজকে আমাদের প্রধানমন্ত্রী কোথায় যে আছেন এটাই দেশবাসী জানে না। তিনি কি অবস্থায় আছেন এটা আমরা বলতে পারি না। তার কথা সরকার ও বলে না, তার কথা ডাক্তারও বলেন না, তার কথা পুলিশ বলে না, তার কথা কেউ বলছে না। তিনি কোথায় আছেন? ভালো না মন্দ কিভাবে আছেন? তা আমরা জানিনা।’

বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান আরো বলেন, ‘আপনি প্রধানমন্ত্রী বিদেশে গেছেন চিকিৎসা নিতে, এই কৃষকদেরকে কে দেখবে? আপনি কথা দিয়েছিলেন তাদেরকে দেখবেন। যদি ক্ষমতায় আসেন সারের দাম কমাবেন, দশ টাকা সের চাল খাওয়াবেন, ঘরে ঘরে চাকরি ওয়াদা করেছিলেন। এখন তারা খুব কষ্টে আছে দুর্বিপাকে আছে। আপনি কোথায় আছেন কেন দেখেন না?

তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আপনি রাষ্ট্রীয় টাকায় চিকিৎসা করাচ্ছেন এটা আমরা শুনতে পাই। তাহলে সাবেক তিনবারের প্রধানমন্ত্রী কে চিকিৎসা নিতে দিচ্ছেন না কেন? মানুষ কি আপনি একাই? বাংলাদেশের মানুষ বিশ্ববাসী দেখছে না? আপনি কিভাবে একজন জনপ্রিয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী কে মিথ্যা মামলায় আটকে রেখেছেন।

শামসুজ্জামান দুদু বলেন, আপনাদের লজ্জা করেনা ২৭ হাজার কোটি টাকা শেয়ার মার্কেট থেকে এক মাসে লুট হয়ে যায় আর মাত্র দু কোটি টাকার মিথ্যা মামলা দিয়ে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটকে রেখেছেন। সেই দু কোটি টাকা সুদে আসলে ৮ কোটি টাকা হয়ে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, আল্লাহ সব দেখছেন। বিচার সুষ্ঠু করেন না হলে আল্লাহর বিচার বড় কঠিন বিচার। সেই বিচার যদি নেমে আসে তবে মানুষ দেখবে সেই ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি।

কৃষক দলের আহ্বায়ক বলেন, কৃষক দল কৃষকের দল, কৃষক দল বেগম খালেদা জিয়ার দল, কৃষকদল তারেক রহমান সাহেবের দল। তারেক রহমান সাহেব লন্ডন থেকে নির্দেশ দিয়েছেন, কৃষকের কথা বলতে হবে, কৃষকের পাশে দাঁড়াতে হবে,কৃষকদের সহায়তা করতে হবে। নেতার নির্দেশ আমরা দাঁড়িয়েছি নেতার নির্দেশে আমরা গ্রামে যাবো। তিনি বলেন, এই ঈদের মধ্যে আমাদের অনুরোধ থাকবে নেতা-কর্মীদের প্রতি চলেন আমরা গ্রামে গিয়ে এই অসহায় কৃষকদের পাশে দাঁড়াই।আমরা যতটুকু পারি সহায়তা করি এবং কৃষকের সাথে ঈদ উদযাপন করি।

দুদু বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে, তারেক রহমানকে দেশের বাহিরে থাকতে বাধ্য করেছেন। গণতন্ত্র এখন নির্বাসিত গণতন্ত্র এখন বন্দি আছে। লড়াই ছাড়া মুক্তির কোন পথ নাই। এই কোর্ট-কাচারি আইন-আদালত ভুয়া। এইগুলো নিয়ে অপেক্ষা করে কোন লাভ নেই। আসেন নিজের পায়ে দাঁড়াই, নিজের অবস্থানে দাঁড়াই, মানুষের পাশে দাঁরাই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করি তাহলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হলে সকল সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। গণতন্ত্র নেই সমস্যার শেষ নেই। একাত্তরে যুদ্ধ করেছি প্রয়োজনে লড়াই আরেকটা করব আমরা।