করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়ে পালালেন ডাক্তার

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
 ২০২০-০৩-২৯

 

ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল আলম
ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল আলম

 

মেহেরপুর: করোনা আতঙ্কে হাসপাতাল ছেড়ে বাড়ি পালিয়ে গেছেন গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সহকারী সার্জন ডা. আমিরুজ্জামান মোহাম্মদ সামসুল আরেফিন।

রোববার (২৯ মার্চ) সকালে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল আলম বাংলানিউজকে বিষয়টি জানান।

তিনি জানান, গত বৃহস্পতিবার (২৬ মার্চ) সকাল থেকেই তিনি হাসপাতালে আসেননি। চারদিন ধরে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন তিনি। অনেক খোঁজ করার পর তার মোবাইলে ফোন দিয়ে জানতে পারি তিনি নিজ বাড়িতে অবস্থান করছেন।

ডা. মোহাম্মদ রিয়াজুল আলম আরও জানান, ডা. আরেফিনকে গত বৃহস্পতিবার ইমারজেন্সি ডিউটি দেওয়া হয়েছিল। তার অনুপস্থিতিতে জরুরি ডাক্তারি সেবা দিতে অসুবিধার সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হবে।

এ বিষয়ে ডাক্তার আরেফিনের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি বাংলানিউজকে বলেন, আমার এবং আমার পরিবারের জীবন বাঁচাতে হাসপাতাল ছেড়ে চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। কর্তৃপক্ষ জোর করে ডিউটি পালনের ওপর অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করাই আমি বেশ কিছুদিন ধরে ডিপ্রেশনে ভুগছি। এছাড়া আমার অ্যাজমার সমস্যা রয়েছে। করোনা ভাইরাসটি অ্যাজমা রোগীদের জন্য বেশি ঝুঁকি। এছাড়া আমি শুনেছি, গত ২৪ মার্চ হাসপাতালে দু’জন রোগী শ্বাসকষ্ট নিয়ে হাসপাতালে এসে মারা গেছেন। তাদের ব্যাপারে কোনো তথ্য আমরা জানার আগেই রোগীর লোকজন মরদেহ নিয়ে চলে গেছে। আমি ওটা দেখেও ভয় পেয়েছি। তাই নিজের এবং পরিবারের লোকজনকে বাঁচাতেই চলে আসতে বাধ্য হয়েছি। আমি ওখান থেকে এসেই হোম কোয়ারেন্টিনে রয়েছি। তবে বর্তমানে ভালো আছি। পরিবার পরিজনকে বাঁচাতে প্রয়োজনে চাকরি ছেড়ে দেবো।

এ প্রসঙ্গে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার এমকে রেজা বাংলানিউজকে বলেন, বর্তমানে ডাক্তারদের জন্য সব ধরনের ছুটি বাতিল ঘোষণা করেছেন সরকার। দেশের এই আপদকালীন সময়ে একজন ডাক্তার হিসেবে তার পালিয়ে যাওয়া সমীচীন নয়। নিজেকে ও পরিবারকে বাঁচানো শুধু নয়, রোগীদের বাঁচানোও একজন ডাক্তারের দায়িত্ব ও কর্তব্য।

আর হাসপাতালে শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া রোগীদের সম্বন্ধে এমকে রেজা বলেন, ওরা যদি করোনা আক্রান্ত রোগী হতো তাহলে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অন্য যেসব চিকিৎসক এবং নার্স রয়েছেন তারা সবাই আক্রান্ত হয়ে পড়তেন। এটা তার একটা অবান্তর ধারণা। এর আগেও তিনি এমনটি করেছেন।

গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওবায়দুর রহমান জানান, এ বিষয়ে ডাক্তার আরেফিনের মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে। তিনি এখন কোয়ারেন্টিনে রয়েছেন।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৯ ঘণ্টা, মার্চ ২৯, ২০২০
এনটি