এবার আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনব : মির্জা ফখরুল

  • নয়া দিগন্ত অনলাইন
  •  ০৬ নভেম্বর ২০২২, ১৯:০৬, আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২২, ১৯:০৯
এবার আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনব : মির্জা ফখরুল – নয়া দিগন্ত

এবার আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনব জানিয়ে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিএনপি ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। সেই মামলা সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করবো। নতুন করে, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে।

রোববার ( ৬ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী যুবদল আয়োজিত এক বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির প্রতিবাদে এ সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি প্রসঙ্গ তুলে ফখরুল বলেন, এ গ্রেফতারি পরোয়ানায় আমি কিছু মনে করি না। গুরুত্ব দেই না এজন্য যে তার বিরুদ্ধে অসংখ্য মামলা ও সাজা দেয়া হয়েছে। তাতে কি তারেক রহমান সাহেবের কোন যায় আসে? দেশনেত্রী বেগম খালেদাকে সাজা দিয়ে ঘর বন্দী করে রাখা হয়েছে। সহস্র মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে।

মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের গ্রেফতার করায় প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, তিনি বরিশাল থেকে সমাবেশ করে ঢাকায় আসছিলেন। তাকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে তিনি নাকি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অশালীন কথা বলেছেন।

ইঞ্জিনিয়ার ইসরাত আহমেদের গাড়ি বহরের হামলার উদ্ধৃতি দিয়ে মহাসচিব বলেন, তার গাড়ি বহরে হামলা করে উল্টা পুলিশ তাকে এক নম্বর আসামি করে মামলা করেছে।

একইভাবে চলমান আন্দোলনে ভোলা রহিম, নুর আলম, মুন্সিগঞ্জ শাওন, নারায়ণগঞ্জ শাওন ও যশোরের আলিমের কথা তুলে মহাসচিব বলেন, ৬০০ মানুষকে গুম করেছেন। ইলিয়াস আলীসহ অনেক কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। বিনা দোষে নেতাদের হত্যা করা হয়েছে। এই হত্যা, এই নির্যাতন আমাদের কী দমন করতে পেরেছে? বাংলাদেশের মানুষকে কি দমন করা সম্ভব হয়েছে? জবাবে নেতাকর্মীরা না বলেন।

তিনি বলেন, আমি সমুদ্রে বাসা বেঁধেছি, এক ফোটা শিশিরকে ভয় পাই না। সারা বাংলাদেশের মানুষ জেগে উঠেছে। তারা একত্ববাদী স্বৈরশাসক সরকারকে পতন ঘটাবে, ঘটাবেই…। দেশের মানুষ তারেক রহমানকে ফিরিয়ে আনবে রাষ্ট্রনায়কের মতো করে। বিএনপি ৩৫ লাখ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। ওই মামলাগুলোকে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাহার করতে হবে। নতুন করে, নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হবে। এবার আমরা বিজয় ছিনিয়ে আনব।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রিজভী বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন আমি দেশের বাইরে যেতে চাই না আমি প্রয়োজনে জেলে যাব।’ আপনি কি আওয়ামী লীগের সকল পাপের ভার একাই নিয়েছেন? হঠাৎ করে একথা বলছেন? ওবায়দুল কাদের আপনাকে বলি, আপনি জেলে যেতে চান, ওয়ান ইলেভেনের সময় জেলে গিয়ে আপনি বলেছেন, এটা হলো বড় পাঠশালা। যে অন্যায় অবিচার গুম হত্যা করেছে আপনার সরকার এবার জেলে গিয়ে বলবেন, জেল হচ্ছে বড় ইউনিভার্সিটি।”

রিজভী আরো বলেন, শেখ হাসিনা দুর্ভিক্ষের কথা কেন বলছেন? এই কথাটা কিন্তু অত্যন্ত জেনে শুনে তিনি বলেছেন। এই নেগেটিভ কথা বলার উদ্দেশ্য আছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচন করেছে। ২০১৮ সালে নিশিরাতে করেছে। ২০২৩ এ তাদের অন্য কোন উদ্দেশ্য আছে। এই দুর্ভিক্ষের নামে তিনি তার ক্ষমতা পুনরাবৃত্তি করতে পারে। এই অসভ্য উদ্দেশ্যের জন্যই তিনি হয়তো দুর্ভিক্ষের কথা বলেছেন।কিন্তু এবার তারা আর সেই সুযোগ পাবে না।

সমাবেশে উপস্থিত নেতাকর্মীদের উদ্দেশে আলাল বলেন, আপনারা যারা দূর-দূরান্ত থেকে উপস্থিত হয়েছেন। আপনারা নিরাপদে বাড়ি ফিরেন এই কামনা করি । তবে বাড়ি ফিরে আগে গোয়াল ঘর চেক করবেন, গরু আছে কি না। আর ছাত্রলীগের কেউ পরিচিত থাকলে তাদেরকে দিয়ে ছাত্রলীগের ঘরের ফ্রি চেক করাবেন, ছাগলের মাংস আছে কিনা। কারণ গরু চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়ে মহিলা ছাত্রলীগ। দেশ কী রকম ডিজিটাল হয়েছে। মহিলা লীগ গরু চোর। সোনাগাজীতে আর এক ছাত্রলীগের ঘরের ভিতরে চুরি করা ছাগলের মাংস ভর্তি করে রেখেছে- এটাও ধরা পড়েছে। দুই বছর আগে মোহাম্মদপুরে ১৪টা ছাগল আটক করে রেখেছিল ছাত্রলীগেরা পুলিশ অনেক চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছে। র‍্যাব গিয়ে ছাগল চোরদের কবল থেকে ছাগল উদ্ধার করেছে। বিদ্যুতের টাকা চুরি করা থেকে গরু ছাগল পর্যন্ত চুরি করা শুরু করেছে। এরপরে যে কি করবে আল্লাহই জানে।

যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্নার সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে আরো বক্তব্য দেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর,স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, যুগ্ম-মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল প্রমুখ বক্তব্য দেন।