এক বছরে আওয়ামী লীগের আয় বেড়েছে ৩৫ শতাংশ: খরচের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি আয় দলটির

ক্ষমতাসীন দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয় গত এক বছরে ৩৫ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার এই আয় খরচের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি বলে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) কাছে দাখিলকৃত হিসাবের তথ্য থেকে জানা গেছে। গত ২০১৮ সাল শেষে আওয়ামী লীগের তহবিলে মোট জমা ছিল ৩৭ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। ২০১৯ সাল শেষে এর পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ টাকা। সে হিসাবে এক বছরে আওয়ামী লীগের আয় বেড়েছে ৩৫ শতাংশ। গত সাত বছর ধরে দলের আয় বাড়ছে।

বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওস্থ নির্বাচন ভবনে কমিশনে ইসির সিনিয়র সচিব মো. আলমগীরের কাছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের আয়-ব্যয়ের হিসাব-২০১৯ বর্ষপঞ্জি এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ ১৯৭২-এর বিষয়ে লিখিত মতামত জমা দেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ। সাথে ছিলেন দলের উপ-দফতর সম্পাদক ব্যারিষ্টার বিপ্লব বড়ুয়া। পরে ড. আবদুস সোবহান গোলাপ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

ড. আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, ২০১৯ সালের শেষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সর্বমোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫০ কোটি ৩৭ লাখ ৪৩ হাজার ৫৯৩ টাকা। এর মধ্যে নগদ আছে ৫ লাখ ১৩ হাজার ৭১৭ টাকা এবং ব্যাংকে জমা আছে ৫০ কোটি ৩২ লাখ ২৯ হাজার ৮৭৬ টাকা। তারমধ্যে ৪০ কোটি টাকার এফডিআর রয়েছে। এই পঞ্জিকাবর্ষে আওয়ামী লীগের আয় শতকরা ৩৫ ভাগ বেড়েছে।

এদিকে, রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের শর্ত অনুযায়ী প্রতিবছর ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে আগের পঞ্জিকা বছরের আয়-ব্যয়ের হিসাব জমা দেয়ার বিধান রয়েছে।

ইসিতে জমা দেয়া হিসাব থেকে জানা গেছে, ২০১৮ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তহবিলে নগদ ছিল ৩ লাখ ৩৮ হাজার ৯৬৮ টাকা। সে সময় ব্যাংক হিসাবে জমা ছিল ৩৭ কোটি ৫২ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০ টাকা। ২০১৮ সালে সর্বমোট অর্থ ছিল ৩৭ কোটি ৫৬ লাখ ৩ হাজার ৮৩৮ টাকা। ২০১৯ সালে আওয়ামী লীগের আয় হয়েছে সর্বমোট ২১ কোটি ২ লাখ ৪১ হাজার ৩৩০ টাকা । প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, এই সময় যেসব খাত থেকে আয় হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য- নমিনেশন বা মনোনয়ন ফরম বিক্রি ১২ কোটি ৩২ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সম্মেলন বাবদ প্রাপ্ত ৩ কোটি ২ লাখ ৫৫ হাজার ৮শ’ টাকা। ব্যাংক লভ্যাংশ বাবদ ২ কোটি ৩৩ লাখ ৭৫ হাজার ২২৩ টাকা। সংসদ সদস্যদের প্রদেয় চাঁদা বাবদ ১ কোটি ৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। এছাড়া কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের মাসিক চাঁদা, জেলাভিত্তিক প্রাথমিক সদস্য সংগ্রহ চাঁদা ও প্রাথমিক সদস্য ফরম, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের হলভাড়া, পত্রিকা প্রকাশনা ও বিজ্ঞাপন (উত্তরণ) এবং পুস্তক বিক্রিসহ অন্যান্য খাত থেকে বাকী আয় হয়েছে।

আর খরচের মধ্যে, কর্মচারীদের বেতন, বোনাস, আপ্যায়ন ও অন্যান্য খরচ বাবদ ১ কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ৭০০ টাকা। বিভিন্ন অনুষ্ঠান বাবদ ব্যয় ১ কোটি ১৮ লাখ ১৮ হাজার ৮৬৫ টাকা। সভাপতির কার্যালয়ের ভাড়া বাবদ ৫৫ লাখ টাকা। এছাড়াও নির্বাচন পরিচালনা অফিস, অফিস রক্ষণাবেক্ষণ, ত্রাণ কার্যক্রম, উত্তরণ পত্রিকা প্রকাশনা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগীয় জেলা জনসভা ও দলীয় অন্যান্য কার্যক্রম পরিচালনা, বিজ্ঞাপন ও পোস্টার প্রকাশনা বাবদ, সাংগঠনিক খরচ, ৫ কার্যালয়ের সার্ভিস চার্জসহ অন্যান্য খাতে বাকি অর্থ ব্যয় হয়েছে।