আজ ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে পরাজিত হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের দিন।

ফরহাদ মজহার    December 15, 2015 · Dhaka, Bangladesh

আজ ভারতীয় সেনাবাহিনীর হাতে পরাজিত হানাদার পাকিস্তান সেনাবাহিনীর আত্মসমর্পনের দিন। লেফটানান্ট জেনারেল নিয়াজি আত্মসমর্পনের চুক্তিতে স্বাক্ষর করছেন। তার পেছনে দাঁড়িয়ে আছে বাঁদিক থেকে ভাইস এডমিরাল কৃষ্ণন, এয়ার মার্শাল দেওয়ান, লেফটেনান্ট জেনারেল সগত সিং, জেনারেল যে এফ আর জ্যাকব, তাঁর কাঁধের ওপর ফ্লাইট লেফটেনান্ট কৃষ্ণমূর্তি তাকিয়ে আছেন। অল ইন্ডিয়া রেডিওর সাংবাদিক সুরজিৎ সেন ডান দিকে মাইক্রোফোন ধরে আছেন। এয়ার কমোডর এ কে খোন্দকার, ডেপুটি কমাণ্ডার ইন চিফ, বাংলাদেশ আর্মড ফোর্সেস সাক্ষী হিসাবে হাজির ছিলেন, কিন্তু উইকিপেডিয়ার এই ছবিতে তাঁকে দেখা যাচ্ছে না।

এই হোল আমাদের ‘বিজয় দিবস’ – আমরা এই দিনটিই আজ উদযাপন করছি। কার ‘বিজয়’? হীনবুদ্ধি পরাধীন জনগোষ্ঠিকে ‘স্বাধীন’ করা দূরে থাক, স্বাধীন ভাবে চিন্তা করতে শেখানোটাও কঠিন কাজ। ‘বিজয়’ আর ‘পরাধীনতা’র ফারাক কে এদের বোঝাবে?

মুক্তিযুদ্ধে আমাদের অবশ্যই অর্জন রয়েছে, এই অর্জনকে রক্ষা আমদের কর্তব্য, সেই কর্তব্য বোধ থেকেই দিল্লীর আগ্রাসন ও দখলদারী ভূমিকাকে মেনে নেবার কোন যুক্তি নাই, নিম্ন শ্রেণির ভারতীয় দালাল বা বঙ্গদেশীয় শিবসেনাদের কথা আলাদা। অন্যদিকে দিল্লীর বিরোধিতার নামে ভারতের সাধারণ জনগণ — বিশেষত সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলোর অধিবাসীদের সহায়তার কথা আমরা ভুলতে পারি না।

একাত্তরের অর্জনকে ভিত্তি ধরে যা অর্জন করা যায় নি তা বোঝা ও উপলব্ধির জন্য এই ছবিগুলো গুরুত্বপূর্ণ স্মারক। নইলে সীমান্তে দিল্লির কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া আর সীমান্তে নির্বিচারে গুলি করে বাংলাদেশীদের নিরন্তর হত্যার অর্থ আমরা বুঝবো না। স্বাধীনতা ও পরাধীনতার ফারাকও স্পষ্ট হবে না।

আজ কাঁটাতারের বেড়া ও আইন বহির্ভূত ভাবে বাংলাদেশের জনগণকে হত্যার প্রতিবাদের দিন।
দিল্লি নিপাত যাক। বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণের মৈত্রী অমর হোক।