৫৩ শতাংশই গভর্নর ড. আতিউরের আমলে

রবিবার | ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮ | ২৯ মাঘ ১৪২৪

৫৩ শতাংশই গভর্নর ড. আতিউরের আমলে

হাছান আদনান| ০১:৪১:০০ মিনিট, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১৮

দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাংক কোম্পানি আইনের মাধ্যমে এ খাতের তত্ত্বাবধান, নিয়ন্ত্রণ, আইনের পরিপালনসহ অন্যান্য ক্ষমতা কেন্দ্রীয় ব্যাংককে দেয়া হয়েছে। এ ক্ষমতার সর্বোচ্চ প্রয়োগের দায়িত্ব প্রধান নির্বাহী হিসেবে গভর্নরের। বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত গভর্নরের দায়িত্ব পেয়েছেন মোট ১১ জন। এসব গভর্নরের মেয়াদে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ (অবলোপনসহ) সৃষ্টি হয়েছে প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা। এর ৫৩ শতাংশই সৃষ্টি হয়েছে সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের মেয়াদে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ড. আতিউর রহমান ২০০৯ সালে গভর্নরের দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল অবলোপনসহ ৩৭ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। সাত বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০১৬ সালের মার্চে পদত্যাগের সময় তিনি খেলাপি ঋণ রেখে যান ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ তার মেয়াদেই খেলাপি ঋণ সৃষ্টি হয়েছে অবলোপনসহ ৬৬ হাজার কোটি টাকার বেশি।

বাংলাদেশ ব্যাংক অর্ডার-১৯৭২ দ্বারা গঠিত বাংলাদেশ ব্যাংকের সূচনাকাল ধরা হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। প্রথম গভর্নর এএনএম হামিদুল্লাহ্র হাত ধরে যাত্রা করা কেন্দ্রীয় ব্যাংক গভর্নর হিসেবে পেয়েছে আরো ১০ জনকে। বর্তমান গভর্নর ফজলে কবির দায়িত্ব পালন করছেন ১১তম গভর্নর হিসেবে। এ ১১ জন গভর্নরের মেয়াদে মোট খেলাপি ঋণের ৮৩ শতাংশই হয়েছে গত দুই দশকে। এ দুই দশকে কোন গভর্নরের সময় কী পরিমাণ খেলাপি ঋণ বেড়েছে, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এ বিশ্লেষণে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়েছে মূলত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ত্রৈমাসিক খেলাপি ঋণের হিসাবকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সপ্তম গভর্নর হিসেবে ১৯৯৮ সালের ২৪ নভেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করেন ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। তার দায়িত্ব গ্রহণের বছর দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ২১ হাজার ৪৩০ কোটি টাকা। তিন বছর দায়িত্ব পালন শেষে ২০০১ সালের ২২ নভেম্বর বিদায় নেন ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন। দায়িত্ব ছাড়ার বছর দেশের ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। অর্থাৎ সাবেক এ গভর্নরের মেয়াদে দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ২ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।

নির্বাচনী বছর হওয়ায় গভর্নর হিসেবে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিনের মেয়াদের বড় অংশজুড়েই ছিল রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা। দায়িত্ব পালনকালে নিজের সফলতা-ব্যর্থতার বিষয়ে বণিক বার্তাকে তিনি বলেন, অবস্থার চাপে পড়ে ও ইচ্ছাকৃত— এ দুভাবে মানুষ ঋণখেলাপি হয়। ইচ্ছাকৃত ঋণখেলাপিকে আমরা অর্থনৈতিক সন্ত্রাস হিসেবে গণ্য করতাম। আমার পূর্ববর্তী গভর্নর লুত্ফর রহমান সরকার ও আমি ইচ্ছাকৃত খেলাপিদের বিরুদ্ধে কঠোর হয়েছিলাম। ঋণখেলাপিদের প্রথমত বুঝিয়ে, তারপর আইনি ব্যবস্থা, এরপর জনমত সৃষ্টি করে সামাজিক প্রতিরোধ আমরা গড়ে তুলেছিলাম।

সাবেক এ গভর্নর বলেন, বাধ্য হয়ে আমরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের শরণাপন্ন হয়েছিলাম। এর মাধ্যমে ইচ্ছাকৃত বড় ঋণখেলাপিদের শাস্তি দিতে পেরেছি। অনেকেই ব্যাংকের টাকা ফেরত দিতে বাধ্য হয়েছেন। খেলাপিদের মধ্যে যারা ব্যাংকের পরিচালক ছিলেন, তাদের অপসারণ করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে মহাশক্তিধর লোকজনও ছিলেন।

ঋণ অবলোপনের কোনো নৈতিক ও আইনি ভিত্তি নেই দাবি করে ড. মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন বলেন, অনেক চাপ সত্ত্বেও আমরা ঋণ অবলোপন করিনি। অবলোপন শব্দটির মধ্যেই এক ধরনের নৈতিকতার সংকট আছে। কারণ অবলোপন করতে হলে ব্যাংকের মুনাফা থেকে সঞ্চিতি রাখতে হয়। সব শ্রেণী-পেশার মানুষের আমানত খাটিয়ে করা মুনাফা থেকে খেলাপিদের এ সুবিধা দেয়া হচ্ছে। এটি অবশ্যই পরিত্যাজ্য। এখনো সময় আছে ঋণ অবলোপনের বিষয়টি পর্যালোচনা করে বাদ দেয়ার। এটিই বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আমার আহ্বান।

২০০১ সালের ২৯ নভেম্বর থেকে ২০০৫ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন ড. ফখরুদ্দীন আহমদ। ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কম দেখাতে ‘অবলোপন’ যন্ত্রের আমদানিকারক তিনি। ব্যাংকের ব্যালান্স শিট থেকে আদায় অযোগ্য খেলাপি ঋণ বাদ দিতে ২০০৩ সালে ঋণ অবলোপন নীতিমালা জারি করা হয়। নতুন এ পন্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণের পরিমাণ কমিয়ে আনেন ড. ফখরুদ্দীন। ড্যান্ডি ডায়িং লিমিটেড ও নারায়ণগঞ্জের ফজলুর রহমানের ঋণ অবলোপনের মাধ্যমে দেশের ব্যাংকিং খাতে ঋণ অবলোপনের যাত্রা হয়েছিল।

ড. ফখরুদ্দীন আহমদ প্রায় সাড়ে তিন বছর গভর্নর থাকাকালীন সময়ে ৬ হাজার ৯০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনা হয়। কিন্তু একই সময়ে অবলোপন করা হয় ৯ হাজার ১৩০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ। গভর্নর হিসেবে ২০০১ সালে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ২৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ২০০৫ সালে দায়িত্ব ছাড়ার বছর ২৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যান ড. ফখরুদ্দীন আহমদ।

নবম গভর্নর হিসেবে ২০০৫ সালের ১ মে বাংলাদেশ ব্যাংকে যোগ দেন অর্থনীতিবিদ ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। ২০০৯ সালের ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত টানা চার বছর গভর্নরের দায়িত্বে ছিলেন তিনি। গভর্নর হিসেবে ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল অবলোপনসহ ২৬ হাজার ৬৪০ কোটি টাকা। প্রায় চার বছর পর ২০০৯ সালে তার দায়িত্ব ছাড়ার সময় ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়ায় অবলোপনসহ ৩৭ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা ছিল খেলাপি ঋণ। বাকি ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অবলোপনকৃত ঋণ। এ গভর্নরের চার বছরের মেয়াদে খেলাপি ঋণ বাড়ে ১১ হাজার ১৪০ কোটি টাকা।

বিচারহীনতার সংস্কৃতিই আজকের পরিস্থিতির জন্য দায়ী বলে মনে করেন ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বলেন, আমার মেয়াদে দেশের অভ্যন্তরে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা ছিল। বৈশ্বিক সংকটের কারণেও সে সময় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা টালমাটাল ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে দেশে কোনো অস্থিতিশীলতা ছিল না।

সাবেক এ গভর্নর বলেন, রাজনৈতিক অবস্থা ও সুশাসনের অভাবেই ব্যাংকিং খাতে আজকের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। খেলাপিদের ঢালাওভাবে ঋণ পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠনের সুযোগ দেয়ার কারণে অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে। ব্যাংকিং নীতিগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। ব্যাংকারদের ব্যর্থতা, অযোগ্যতা ও দূরদর্শিতার অভাবও এক্ষেত্রে দায়ী। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে যদি একবার ঢিলেভাব চলে আসে, তাহলে সবাই তার সুযোগ নেয়। এ কারণে সবক্ষেত্রেই সংকট তৈরি হয়েছে।

ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য সৃষ্টি হলে গভর্নর হিসেবে ব্যক্তির দায়বদ্ধতা কতটুকু?— এমন প্রশ্নের উত্তরে সাবেক এ গভর্নর বলেন, গভর্নর পদের দায়বদ্ধতা তো অবশ্যই আছে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা হিসেবে ব্যাংকিং খাতে যেকোনো বিপর্যয়ের জন্য গভর্নরসহ সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়। সার্বিকভাবে অর্থ মন্ত্রণালয়ও দায়ী।

পদে থেকে দেশের সবচেয়ে বেশি আলোচিত-সমালোচিত গভর্নর ড. আতিউর রহমান। ২০০৯ সালে গভর্নর হিসেবে নিয়োগ পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এ শিক্ষক। ২০০৯ সালের ১ মে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দশম গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর পদে ছিলেন ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ পর্যন্ত।

ড. আতিউর রহমান গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় অবলোপনসহ দেশের ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা। টানা সাত বছর দায়িত্ব পালন শেষে গভর্নর পদ থেকে পদত্যাগের সময় অবলোপনসহ দেশের ব্যাংকিং খাতে ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রেখে যান তিনি। সে হিসাবে রিজার্ভ চুরি কাণ্ডে পদত্যাগে বাধ্য হওয়া এ গভর্নরের মেয়াদে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। অর্থাৎ দেশের ব্যাংকিং খাতের মোট খেলাপি ঋণের অর্ধেকের বেশি তৈরি হয়েছে ড. আতিউর রহমানের মেয়াদে।

গভর্নর হিসেবে আতিউর রহমান দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়ার সময় ৬২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যান তিনি। শুধু তার মেয়াদেই অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা স্বাধীনতার পর প্রথম ৩৮ বছরে সৃষ্ট খেলাপি ঋণের প্রায় দ্বিগুণ।

শুধু খেলাপি ঋণ নয়, অবলোপনকৃত ঋণও ড. আতিউর রহমানের মেয়াদে অস্বাভাবিক বেড়েছে। গভর্নর হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকগুলোর অবলোপনকৃত ঋণ ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়ার সময় ব্যাংকগুলোর অবলোপনকৃত ঋণ ৪২ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় রেখে গেছেন তিনি। সে হিসাবে সাবেক এ গভর্নরের মেয়াদে অবলোপনকৃত ঋণ বেড়েছে ১৭৬ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভের অর্থ চুরি যাওয়ার ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর সমালোচনার মুখে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ গভর্নর পদ থেকে সরে দাঁড়ান ড. আতিউর রহমান।

সামগ্রিক বিষয়ে গতকাল কথা বলতে চাইলে ড. আতিউর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কোনো ইস্যু নিয়ে আমি কথা বলি না। আমি এমন কিছুই বলব না, যেটি কেন্দ্রীয় ব্যাংককে ইফেক্ট করে। গভর্নর হিসেবে নিজের সফলতা-ব্যর্থতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার মেয়াদের বিষয়েও কিছু বলব না। আমি ওই নীতিতে বিশ্বাস করি না। আমার পূর্ববর্তীরা অনেকেই ভুল করেছে। আমি এটি করব না। এটি আমারই প্রতিষ্ঠান।

২০১৬ সালের ২০ মার্চ থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর পদে রয়েছেন ফজলে কবির। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে অবলোপনসহ মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। গত বছরের সেপ্টেম্বর শেষে ব্যাংকিং খাতের খেলাপি ঋণ প্রায় ১ লাখ ২৫ হাজার ৩০৭ কোটি টাকায় দাঁড়ায়। এর মধ্যে অবলোপনকৃত ঋণ রয়েছে প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। বাকি ৮০ হাজার ৩০৭ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ। সে হিসাবে বর্তমান গভর্নরের মেয়াদে খেলাপি ঋণ বেড়েছে প্রায় ২০ হাজার ৮০৭ কোটি টাকা।

যদিও বাংলাদেশ ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, গত দুই বছর যেসব ঋণ খেলাপি হয়েছে, সেগুলোর বেশির ভাগই বিতরণ করা হয়েছিল সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানের মেয়াদে। ২০১৫ সালে পুনর্গঠন করা বড় ঋণগুলো খেলাপি হয়ে যাচ্ছে। এছাড়া ওই সময়ে সংঘটিত বেসিক, সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক, জনতা ব্যাংকের বিসমিল্লাহসহ বড় বড় ঋণ কেলেঙ্কারিই এখন ব্যাংকিং খাতকে বয়ে বেড়াতে হচ্ছে।

দেশে ব্যাংকিং খাতের যেকোনো অনিয়ম-দুর্নীতি কিংবা অব্যবস্থাপনার জন্য গভর্নরের দায়বদ্ধতা অনেক বেশি বলে মনে করেন সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ড. এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম। তিনি বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। গভর্নর সে প্রতিষ্ঠানের প্রধান। সুতরাং বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো অব্যবস্থাপনার জন্য প্রত্যক্ষভাবে না হলেও পরোক্ষভাবে গভর্নর পদের দায়বদ্ধতা তৈরি হয়।

1 COMMENT

  1. ড. আতিউর রহমান খেলাপি ঋণ ছিল ৩৭ হাজার ৭৮০ কোটি টাকা সাত বছরে, ১ লাখ ৪ হাজার ৫০০ কোটি টাকার খেলাপি ঋণ রেখে যান। রিজার্ভ চুরি তিনি পদত্যাগে বাধ্য হন। তার মেয়াদে ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৬৬ হাজার ৭২০ কোটি টাকা। তার দায়িত্ব নেয়ার সময় দেশের ব্যাংকিং খাতে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ ছিল ২২ হাজার ৪৮০ কোটি টাকা। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়ার সময় ৬২ হাজার ১৮০ কোটি টাকা খেলাপি ঋণ রেখে যান তিনি। তার আমলে অবলোপন বাদে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৯ হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যা স্বাধীনতার পর প্রথম ৩৮ বছরে সৃষ্ট খেলাপি ঋণের প্রায় দ্বিগুণ।গভর্নর হিসেবে তিনি দায়িত্ব গ্রহণের সময় দেশের ব্যাংকগুলোর অবলোপনকৃত ঋণ ছিল ১৫ হাজার ৩০০ কোটি টাকা। কিন্তু দায়িত্ব ছাড়ার সময় ব্যাংকগুলোর অবলোপনকৃত ঋণ ৪২ হাজার ৩২০ কোটি টাকায় রেখে গেছেন তিনি। সে হিসাবে সাবেক এ গভর্নরের মেয়াদে অবলোপনকৃত ঋণ বেড়েছে ১৭৬ শতাংশ।রিজার্ভের অর্থ চুরির পর সমালোচনার মুখে ২০১৬ সালের ১৫ মার্চ গভর্নর পদ থেকে তিনি সরে দাঁড়ান ।এত খারাপ ব্যবস্তাপ্নার কোন জবাব দিতে তিনি নারাজ।প্রস্না এক্টাই হিসাবের টাকা কে খেল। তার জবাব জাতিকে কি দিতে হবেনা। সেটা কে দিতে বাদ্য থাকবে?

Comments are closed.