পরিবারের সবাইকে হারানো শিশু নাহিদ এখন ঢাকার হাসপাতালে

পরিবারের সবাইকে হারানো শিশু নাহিদ এখন ঢাকার হাসপাতালে

Daily Nayadiganta

শুক্রবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত একই পরিবারের পাঁচজন। (ইনসেটে) শিশু নাহিদ ইসলাম – নয়া দিগন্ত

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে পাঁচ সদস্যের পরিবারের চারজনেরই। মা-বাবা-ভাই-বোনকে হারিয়ে অনেকটা অলৌকিকভাবে বেঁচে রইল পরিবারের সর্বকনিষ্ঠ সদস্য তিন বছরের অবুঝ শিশু নাহিদ ইসলাম। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবুঝ ওই শিশুটি যে চিরদিনের মতো এতিম হয়ে গেল তা বোঝার বিন্দুমাত্র ক্ষমতা নেই তার। তাদের সাথে মৃত্যুর মিছিল যোগ হয়েছে শিশুটির মামা আশরাফ (২৫)।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য শুক্রবার রাতে শিশু নাহিদকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে নিউরো সায়েন্স হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির অবস্থাও বর্তমানে আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন তাদের স্বজনরা। প্রাইভেটকার চালক সেলিম এখনও ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।

নিহতদের নিকট আত্মীয় গোলাম মুক্তাদির বিলাস নয়া দিগন্ত অনলাইনকে জানান, শুক্রবার রাতেই নিহত ৫ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করেছে পুলিশ। তাদের মধ্যে একই পরিবারের চারজন নরসিংদীর মাধবদী বাংলা টেক্সটাইল মিলের মালিক রফিকুল ইসলাম (৪৫), তার স্ত্রী শামসুন্নাহার শাহানা (৩৫), কলেজপড়ুয়া ছেলে নাবিল ইসলাম (১৮) ও মেয়ে রওনক জাহানকে (১৩) শনিবার সকাল ১১টায় নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলার সুসং দুর্গাপুরের চন্ডিগর গ্রামে জানাযা শেষে দাফন করা হয়েছে। এদিকে শুক্রবার রাত ১১টায় নান্দাইল উপজেলার বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের মধুপুর এলাকার তাজপাড়া গ্রামে জানাযা শেষে আশরাফকে দাফন করা হয়। নিহতদের বাড়িতে চলছে এখন শোকের মাতম। একসঙ্গে একটি পরিবারের পাঁচজনকে হারিয়ে পরিবারের লোকজন ছাড়াও স্বজনরা সবাই আহাজারি করছেন। কেউই এই মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না।

উল্লেখ্য, নরসিংদীর মাধবদী বাংলা টেক্সটাইল মিলের মালিক রফিকুল ইসলাম সপরিবারে ঈদের ছুটিতে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার মধুপুরের তাজপাড়া গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে এসেছিলেন। তারা বসবাস করতেন নরসিংদী জেলার মাধবদীতে। দুর্ঘটনার আগে শুক্রবার সকালে একটি বিয়ে অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তারা নান্দাইলের তাজপাড়া গ্রাম থেকে টাঙ্গাইলের ঘাটাইলের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ মহাসড়কের গৌরীপুর উপজেলার রামগোপালপুরে বাস-প্রাইভেটকার সংঘর্ষে নিহত হন পাঁচ জন। তারা সবাই প্রাইভেটকারের যাত্রী ছিলেন।

গৌরীপুর থানার ওসি কামরুল ইসলাম মিয়া জানান, ঘাতক বাসের চালককে (অজ্ঞাত) আসামী করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ধুমড়েমুচড়ে যাওয়া বাস ও প্রাইভেটকারটি থানায় আটক আছে।